হিমোগ্লোবিন কম হওয়ার লক্ষণ-হিমোগ্লোবিন কত হলে রক্ত দিতে হয়
গ্যাস্ট্রিক হলে কি কি খাওয়া যাবে না-প্রাকৃতিক উপায়ে গ্যাস্ট্রিকের সমাধান
হিমোগ্লোবিন হলো লোহিত রক্তকণিকার একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রোটিন, যা শরীরের বিভিন্ন কোষে অক্সিজেন পরিবহন করে এবং বিপাকক্রিয়ার ফলে উৎপন্ন কার্বন ডাই অক্সাইড ফুসফুসে নিয়ে গিয়ে অপসারণ করে। এটি মূলত আয়রন ও গ্লোবিন নামক প্রোটিন দিয়ে গঠিত।
পোস্ট সূচিপত্রঃ হিমোগ্লোবিন কম হওয়ার লক্ষণ-হিমোগ্লোবিন কত হলে রক্ত দিতে হয়
হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ কমে গেলে শরীর স্বাভাবিকভাবে অক্সিজেন গ্রহণ ও সরবরাহ করতে পারে না ফলে নানা ধরনের শারীরিক জটিলতা দেখা দেয়। নারীদের ক্ষেত্রে মাসিক চক্র গর্ভধারণ এবং অপুষ্টিজনিত কারণে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা কমতে পারে, যা তাদের শরীরকে দুর্বল করে তুলতে পারে। এ কারণে হিমোগ্লোবিনের স্বাভাবিক মাত্রা বজায় রাখা অন্তত জরুরী।
হিমোগ্লোবিন যুক্ত খাবার
হিমোগ্লোবিন বাড়ানোর জন্য আয়রন সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া অন্তত গুরুত্বপূর্ণ। আয়রন
দুই ধরনের হয়--হিম আয়রন ও ননহিম আইরন। হিম আয়রন প্রাণিজ উৎস থেকে আসে এবং
এটি শরীরে দ্রুত শোষিত হয়, যেমন- লাল মাংস, কলিজা, ডিম ও সামুদ্রিক খাবার।
অন্যদিকে ননহীন আয়রন আসে উদ্ভিদ উৎস থেকে, যেমন- সবুজ শাকসবজি, ডাল, বাদাম
এবং বিটরুট। শরীর যাতে ভালোভাবে আয়রন শোষণ করতে পারে, সেজন্য ভিটামিন সি সমৃদ্ধ
খাবারের সঙ্গে এসব খাবার খাওয়া উচিত, যেমন- লেবু, কমলা, টমেটো ও আমলকি।
লাল মাংস এবং কলিজার আয়রনের অন্যতম ভালো উৎস। বিশেষ করে গরুর কলিজায় প্রচুর
পরিমাণ আয়রন থাকে, যা রক্তস্বল্পতা দূর করতে সাহায্য করে। মাছ এবং মুরগির মাংসও
পর্যাপ্ত পরিমাণ আয়রন থাকে, যা সহজে হজম হয় এবং শরীরের দ্রুত শুষিত হয়। অনেক
সময় নিরামিষ ভোজীদের আয়রন শুষোনের হার কম থাকে, তাই তাদের উচিত প্রতিদিন প্রচুর
পরিমাণ সবুজ শাকসবজি ও ডাল জাতীয় খাবার খাওয়া। তিল, সূর্যমুখীর বীজ এবং
কাজুবাদামেও প্রচুর আয়রন রয়েছে যা রক্ত তৈরিতে সহায়ক।
সবুজ শাকসবজি বিশেষ করে পালং শাক, মেথি শাক ও সরিষা শাকে প্রচুর আয়রন পাওয়া
যায়। এগুলো হিমোগ্লোবিন বাড়াতে সাহায্য করে এবং শরীরকে শক্তিশালী রাখে। শাক
সবজি রান্নার সময় খুব বেশি সিদ্ধ না করাই ভালো, কারণ এতে আয়রন নষ্ট হতে পারে।
এছাড়া, বিটরুট রক্তের লোহিত কণিকা তৈরিতে সহায়ক এবং এটি শরীরকে অক্সিজেন সরবরাহ
ভারতের সাহায্য করে। বিটরুটের রস পান করলেও উপকার পাওয়া যায়, কারণ এতে আয়রনের
পাশাপাশি ফুলেট এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে, যার রক্তস্বল্পতা দূর করে।
ডাল, ছোলা, মসুর ও মুগ ডালের প্রচুর পরিমাণ আয়রন থাকে যা নিরামিষ ভোজীদের জন্য
দারুন একটি বিকল্প। বিশেষ করে ভেজানো ছোলা সকালে খেলে এটি দ্রুত আয়রন সরবরাহ
করতে পারে। এছাড়া, বাদাম, আখরোট ও চিয়া সিডস আইরন সমৃদ্ধ খাবার, যা
প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় রাখা উচিত। শরীরে আয়রন শোষণের জন্য ক্যাফেইন যুক্ত
পানীয়, যেমন- চাও কফি কম খাওয়াই ভালো, কারণ এগুলো আয়রন শোষণে বাধা
দেয়।
ফলমূলের মধ্যে আপেল, ডালিম, কলা ও খেজুর আয়রনের ভালো উৎস। বিশেষ করে ডালিম এবং
খেজুর আয়রন বাড়াতে কার্যকরী, যা প্রতিদিন সকালে খেলে দ্রুত রক্তস্বল্পতা দূর
হয়। শুকনো ফল, যেমন- কিসমিস ও খেজুর আয়রনের পাশাপাশি ফাইবার ও
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সরবরাহ করে, যা রক্তে প্রবাহ স্বাভাবিক রাখে। এছাড়া,
ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার, যেমন- লেবু, কমলা ও পেয়ারা শরীরে আয়রন শোষণের
হার বাড়াতে সাহায্য করে, তাই আইরনসমৃদ্ধ খাবারের সঙ্গে এসব ফল খাওয়া উচিত।
অবশেষে, শরীর যাতে আয়রন শোষণ করতে পারে, সেজন্য সুষুম খাদ্য গ্রহণ করা দরকার।
অনেক সময় আয়রনের পাশাপাশি ভিটামিন বি ১২ ও ফলিক এসিডের ঘাটতিও হিমোগ্লোবিন কমার
কারণ হতে পারে। তাই চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে প্রয়োজনীয় পরিমাণ আয়রন ও অন্যান্য
পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া উচিত। নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা এবং শারীরিক
দুর্বলতা অনুভব করলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া ভালো।
হিমোগ্লোবিন কম হলে কি খাওয়া উচিত
হিমোগ্লোবিন কম হলে এমন খাবার খাওয়া উচিত, যা আয়রন সমৃদ্ধ এবং শরীরে লোহিত
রক্তকণিকা তৈরিতে সহায়ক। প্রাণিজ উৎসর মধ্য গরুর মাংস, কলিজা, ডিম এবং
সামুদ্রিক খাবার আয়রনের ভালো উৎস। বিশেষ করে গরুর কলিজা প্রচুর পরিমাণ হিম আয়রন
সরবরাহ করে, যা সহজেই শরীর শোষণ করতে পারে। মাছ এবং মুরগির মাংসেও প্রচুর পরিমাণ
আয়রন থাকে, হিমোগ্লোবিন তৈরিতে সাহায্য করে। যারা নিরামিষভোজী, তাদের জন্য শাক,
সবজি ডাল, বাদাম এবং বীজ জাতীয় খাবার নিয়মিত খাওয়া জরুরী কারণ এসব খাবার শরীরে
আয়রনের ঘাটতি পূরণ করে।
সবুজ শাকসবজির মধ্যে পালং শাক, মেথি শাক, কলমি শাক ও সরিষার সাথে প্রচুর পরিমাণ
আয়রন থাকে যা রক্তের পরিমাণ বাড়ায়। শাকসবজি রান্নার সময় খুব বেশি সিদ্ধ না
করাই ভালো কারণ এতে আয়রন নষ্ট হয়ে যেতে পারে। বিটরুটও হিমোগ্লোবিন বাড়াতে
দারুন কার্যকর, কারণ এতে আইরন ফলিক এসিড এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে। যারা দ্রুত
হিমোগ্লোবিন বাড়াতে চান তারা নিয়মিত বিটরুটের রস পান করতে পারেন। এছাড়া, গাজর
ও টমেটো আয়রনের ভালো উৎস, যা শরীরে আয়রনের শোষণ বাড়িয়ে রক্তস্বল্পতা দূর
করে।
ডাল জাতীয় খাবারের মধ্যে মসুর, মুগ, ছোলা ও সয়াবিন প্রচুর পরিমাণে আয়রন সরবরাহ
করে। বিশেষ করে ভেজানো ছোলা ও মুগ ডাল হজমের সহজ এবং দ্রুত আয়রন সরবরাহ করতে
পারে। বাদাম, আখরোট, কাজুবাদাম, কিসমিস ও চিয়া সিডস আয়রনের ভালো উৎস যা
প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় রাখা উচিত। এছাড়া, সূর্যমুখীর বীজ ও তিলের বীজ প্রচুর
আয়রন রয়েছে, যার রক্ত উৎপাদন প্রক্রিয়ায় সহায়ক। তবে আয়রন সমৃদ্ধ খাবার
খাওয়ার পর পরই চা বা কফি খাওয়া উচিত নয়, কারণ এতে আয়রন শোষণে বাধা সৃষ্টি
হয়।
ফলমূলের মধ্যে আপেল, ডালিম, কলা, কমলা ও খেজুর হিমোগ্লোবিন বাড়াতে সাহায্য করে।
বিশেষ করে ডালিম এবং খেজুর আয়রন ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সরবরাহ করে, যা দ্রুত
রক্তস্বল্পতা দূর করে। ভিটামিন সি সমৃদ্ধ ফল, যেমন- লেবু পেয়ারা কমলা ও
আমলকি শরীরে আয়রনের শোষণ বাড়ায় তাই আইরন সমৃদ্ধ খাবারের সঙ্গে এগুলো খাওয়াই
ভালো। এছাড়া খেজুর কিসমিস ও শুকনো ফল শরীরে আয়রনের অভাব পূরণের কার্যকর ভূমিকা
রাখে। প্রতিদিন সকালে এক মুঠো কিসমিস বা খেজুর খাওয়া হিমোগ্লোবিন বাড়ানোর একটি
সহজ উপায়।
হিমোগ্লোবিন বাড়ানোর জন্য শুধু আয়রন নয়, ভিটামিন বি ১২ ও ফলিক এসিডের
পর্যাপ্ত সরবরাহ প্রয়োজন। ডিম, দুধ, দই ও পনির থেকে ভিটামিন বি ১২ পাওয়া
যায় যার রক্ত তৈরির জন্য গুরুত্বপূর্ণ। ফলিক এসিডের ভালো উৎস হলো ডাল, সবুজ
শাক-সবজি ও বিভিন্ন ধরনের বাদাম। শরীরে আয়রন শোষণের হার বাড়াতে পর্যাপ্ত পানি
পান করাও জরুরি। হিমোগ্লোবিন কম হলে সুষুম খাদ্য গ্রহণ করা, পর্যাপ্ত পুষ্টি
নিশ্চিত করা এবং নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা উচিত, যাতে আয়রনের ঘাটতি দূর
হয়ে শরীর সুস্থ থাকে।
হিমোগ্লোবিন স্বাভাবিক কত
হিমোগ্লোবিন হলো লোহিত রক্ত কণিকার একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রোটিন, যা শরীরে অক্সিজেন
পরিবহনের কাজ করে। স্বাভাবিক অবস্থায় পুরুষের ক্ষেত্রে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ
প্রতি ডেসিলিটারে ১৩ থেকে ১৭ গ্রাম হয়ে থাকে। নারীদের ক্ষেত্রে এটি ১২ থেকে ১৫
গ্রাম স্বাভাবিক ধরা হয়, তবে গর্ভবতী নারীদের জন্য ১১ গ্রাম ডিসিলিটার বা তার
বেশি থাকলেই যথেষ্ট। শিশুদের জন্য স্বাভাবিক হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বয়স ভেদে
আলাদা হয়, সাধারণত ১১ থেকে ১৬ গ্রাম ডেসিলিটার হয়ে থাকে। শরীরে হিমোগ্লোবিনের
পরিমাণ প্রয়োজনের চেয়ে কম হলে রক্তস্বল্পতা (অ্যানিমিয়া) দেখা দেয় এবং
শারীরিক দুর্বলতা অনুভূত হয়।
হিমোগ্লোবিনের মাত্রা কমে গেলে শরীরে অক্সিজেন সরবরাহ ব্যাহত হয়, ফলে ক্লান্তি,
শ্বাসকষ্ট, মাথা ঘোরা ও রক্তচাপের সমস্যা দেখা দিতে পারে। বিশেষ করে গর্ভবতী
নারীদের জন্য হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ গুরুত্বপূর্ণ গুরুত্বপূর্ণ কারণ এটি মা ও
শিশুর সুস্থতার ওপর প্রভাব ফেলে। গর্ভাবস্থায় হিমোগ্লোবিন খুব কমে গেলে শিশু
জন্মের সময় জটিলতা দেখা দিতে পারে, এমন কি অপরিনত ওজনের শিশুর জন্ম হওয়ার ঝুঁকি
থাকে। তাই গর্ভবতী নারীদের নিয়মিত আয়রন ও ফলিক এসিড গ্রহণ করা উচিত, যাতে
হিমোগ্লোবিনের স্বাভাবিক মাত্রা বজায় থাকে।
শরীরে পর্যাপ্ত হিমোগ্লোবিন ধরে রাখার জন্য আয়রন সমৃদ্ধ খাবার ভিটামিন বি ১২ ও
ফলিক এসিড গ্রহণ করা জরুরী। লাল মাংস, কলিজা, ডিম, সামুদ্রিক মাছ, সবুজ শাকসবজি ও
বিভিন্ন ধরনের বাদাম থেকে আয়রন পাওয়া যায়, যা রক্তস্বল্পতা প্রতিরোধে সাহায্য
করে। ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার যেমন লেবু, কমলা, পেয়ারা খেলে আয়রনের শাসন ভালো
হয় ফলে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা দ্রুত স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসে। পাশাপাশি
পর্যাপ্ত পানি পান করা ও স্বাস্থ্যকর জীবন যাপন করা হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বজায়
রাখতে সাহায্য করে।
কিছু রোগ বা শারীরিক অবস্থা হিমোগ্লোবিনের মাত্রায় প্রভাব ফেলতে পারে,
যেমন- থ্যালাসেমিয়া, কিডনি রোগ, দীর্ঘস্থায়ী সংক্রমণ বা ক্যান্সার।
অতিরিক্ত রক্ত সংকলন অপুষ্টি বা কিছু ওষুধের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া ও হিমোগ্লোবিন
কমিয়ে দিতে পারে। যদি কোন ব্যক্তির হিমোগ্লোবিনের মাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে কম
হয় এবং দীর্ঘদিন ধরে ক্লান্তি দূর্বরতা ও মাথা ঘোরা অনুভূত হয়, তবে চিকিৎসকের
পরামর্শ নেওয়া উচিত। চিকিৎসা ও সঠিক পুষ্টি গ্রহণের মাধ্যমে হিমোগ্লোবিনের
মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব এবং সুস্থ জীবন যাপন নিশ্চিত করা যায়।
রোক্তে হিমোগ্লোবিন বৃদ্ধির উপায়
হিমোগ্লোবিন শরীরের অক্সিজেন পরিবহনের জন্য অন্তত গুরুত্বপূর্ণ। এটি মূলত আয়রন ও
প্রোটিনের সংমিশ্রণে তৈরি হয়। যদি শরীরে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ কমে যায়, তাহলে
রক্তশূন্যতা, দূর্বলতা ও শ্বাসকষ্টের মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই স্বাস্থ্যকর
খাদ্য অভ্যাস ও কিছু জীবনযাত্রার পরিবর্তনের মাধ্যমে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ
বাড়ানো সম্ভব।
হিমোগ্লোবিন বৃদ্ধির সবচেয়ে কার্যকর উপায় হল আয়রনসমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ করা।
লাল মাংস, কলিজা, পালং শাক, বিটরুট, আপেল, ডালিম ও ড্রাই ফুডস আয়রনের ভালো
উৎস। এগুলো নিয়মিত খাদ্য তালিকায় রাখলে শরীরে আয়রনের ঘাটতি পূরণ হয়, যা
হিমোগ্লোবিন বাড়াতে সহায়ক।
শুধু আয়রন গ্রহণ করলে হবে না, শরীর যাতে এটি ভালোভাবে শোষণ করতে পারে, সেজন্য
ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে। কমলা, লেবু, আমলকি, টমেটো ও স্ট্রবেরি
জাতীয় খাবার আয়রন শোষণের সাহায্য করে। তাই প্রতিদিনের খাবারের সঙ্গে ভিটামিন
সি সমৃদ্ধ খাবার যোগ করলে হিমোগ্লোবিন দ্রুত বৃদ্ধি পেতে পারে।
ফলিক এসিড এবং ভিটামিন বি ১২ হিমোগ্লোবিন তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। ডিম,
মাছ, দুধ, ছোলা, বিনস এবং বাদাম জাতীয় খাবারে এগুলো পাওয়া যায়। এগুলো
রক্তকণিকা গঠনের সাহায্য করে এবং অ্যানিমিয়ার ঝুঁকি কমায়। তাই পর্যাপ্ত পরিমাণে
ফলিক এসিড ও বি 12 গ্রহণ করা দরকার।
শরীরকে হাইড্রেড রাখা হিমোগ্লোবিন বৃদ্ধির আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ উপায়। পর্যাপ্ত
পানি পান করলে রক্ত সঠিকভাবে প্রবাহিত হয় এবং পুষ্টি উপাদান শরীরে ছড়িয়ে পড়ে।
তাই প্রতিদিন অন্তত আট থেকে দশ গ্লাস পানি পান করা উচিত। পাশাপাশি প্রাকৃতিক রস
নারকেল এবং হারবাল চা পান করলে শরীর সতেজ থাকবে এবং রক্তস্বল্পতা কমবে।
হিমোগ্লোবিন নরমাল রেঞ্জ ফিমেল
হিমোগ্লোবিন হলো রক্তের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান, যা শরীরের কোষগুলোতে অক্সিজেন
পরিবহন করে এবং কার্বন-ডাই-অক্সাইড অপসারণ এর সহায়তা করে। এটি লোহিত রক্তকণিকার
মধ্যে থাকে এবং হিম (লোহা) ও গ্লোবিন (প্রোটিন) দ্বারা গঠিত। হিমোগ্লোবিনের
স্বাভাবিক মাত্রা শরীরের সুস্থতা বজায় রাখার জন্য অন্তত গুরুত্বপূর্ণ। নারীদের
ক্ষেত্রে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ কিছুটা কম হয়ে থাকে পুরুষদের তুলনায়, কারণ তাদের
শরীরে স্বাভাবিকভাবেই আয়রনের চাহিদা বেশি এবং মাসিক চক্রের কারণে নিয়মিত
রক্তক্ষরণ হয়। এছাড়া, গর্ভাবস্থার সময় হিমোগ্লোবিনের মাত্রা আরো পরিবর্তিত হতে
পারে, যা মায়ের ও শিশু সুস্থতার ওপর প্রভাব ফেলতে পারে।
নারীদের জন্য স্বাভাবিক হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ সাধারণত ১২.০ থেকে ১৫.৫ গ্রাম প্রতি
টেসি লিটার (g/dL) এর মধ্যে হয়ে থাকে। তবে এই মান বয়স, জীবনযাত্রা,
খাদ্যভ্যাস, শারীরিক অবস্থা ও পরিবেশগত কারণে এর ওপর নির্ভর করে পরবর্তীতে হতে
পারে। কিছু ক্ষেত্রে, বিশেষ করে গর্ভবতী নারীদের জন্য হিমোগ্লোবিনের মান সামান্য
কম থাকতে পারে এবং ১১.০ g/dL বা তার বেশি হওয়া কি স্বাভাবিক হিসেবে ধরা
হয়। যদি হিমোগ্লোবিনের মাত্রা ১২ g/dL- এর নিচে নেমে যায়, তবে তা
রক্তস্বল্পতা বা অ্যানিমিয়ার লক্ষণ হতে পারে, যা দূর্বলতা, মাথা ঘোরা এবং
অতিরিক্ত ক্লান্তির কারণ হতে পারে।
হিমোগ্লোবিনের স্বাভাবিক মাত্রা বজায় রাখতে আয়রন সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ করা অন্তত
গুরুত্বপূর্ণ। পালং শাক, মুগ ডাল, লাল মাংস, কলিজা, ডিম, কাঠবাদাম, কাজুবাদাম ও
বিভিন্ন ফল যেমন আপেল বেদেনা ও কমলা খাবারের তালিকায় রাখা উচিত। এছাড়া, ভিটামিন
সি সমৃদ্ধ খাবার যেমন লেবু মালটা ও টমেটো আয়রনের শোষণ বাড়াতে সাহায্য করে।
পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করা এবং প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া ও হিমোগ্লোবিনের
মাত্রা বাড়াতে সহায়ক হতে পারে। স্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রা বজায় রাখা, নিয়মিত
ব্যায়াম করা এবং পর্যাপ্ত ঘুম নিশ্চিত করা ও রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা সঠিক
রাখার জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
হিমোগ্লোবিন কমে গেলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া উচিত, কারণ দীর্ঘ মেয়াদে
এটি শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রতঙ্গ অক্সিজেন সরবরাহের বিঘ্ন ঘটাতে পারে। যদি কারো
হিমোগ্লোবিন স্বাভাবিকের চেয়ে কম থাকে, তবে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী আয়রন বা
ফলিক এসিডের পরিপূরক গ্রহণ করা যেতে পারে। তবে, স্বাভাবিক মাত্রার চেয়ে
বেশি হিমোগ্লোবিন ও শরীরের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে, কারণ এটি রক্ত ঘন করে দিতে
পারে এবং হার্ড ও রক্তনালীর ওপর বাড়তি চাপ সৃষ্টি করতে পারে। তাই নিয়মিত
স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা স্বাভাবিক আছে কিনা তা নিশ্চিত করা
গুরুত্বপূর্ণ।
শেষ মন্তব্যঃ
হিমোগ্লোবিনের মাত্রা স্বাভাবিক রাখা সুস্থ ও কর্মকম জীবনের জন্য অন্তত
গুরুত্বপূর্ণ। হিমোগ্লোবিন কমে গেলে শরীর অক্সিজেন পরিমাণের সমস্যার সম্মুখীন
হয়, ফলে ক্লান্তি, দুর্বলতা, শ্বাসকষ্ট সহ নানা ধরনের শারীরিক অসুবিধা দেখা
দেয়। যদি হিমোগ্লোবিন স্বাভাবিকের চেয়ে কমে যায় এবং জীবন যাত্রায় প্রভাব ফেলে
তবে, অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া উচিত। রক্তস্বল্পতায় প্রতিরোধে আয়রন
সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ, পর্যাপ্ত পানি পান এবং প্রয়োজন হলে আয়রন ঔষধ গ্রহণ করা
প্রয়োজন। তবে, হিমোগ্লোবিন মাত্রা অন্তত কমে গেলে রক্ত সঞ্চালন করানো ছাড়া
বিকল্প থাকে না। তাই নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা ও হিমোগ্লোবিনের মাত্রা
পর্যবেক্ষণ করা অন্তত জরুরী।
সাগর ম্যাক্স এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url