গর্ভাবস্থায় কি কি সবজি খাওয়া যাবে না? জেনে নিন
গর্ভাবস্থায় কি খেলে বাচ্চা ফর্সা হয়গর্ভাবস্থায় কি কি সবজি খাওয়া যাবে না - সে সম্পর্কে আপনি নিশ্চয়ই জানতে চান?
তাই গর্ভাবস্থায় কি কি সবজি খাওয়া যাবে না এখন আপনার সামনে তুলে ধরা
হবে। গর্ভাবস্থায় কি কি সবজি খাওয়া যাবে না তা জানতে আপনাকে আজকের
আর্টিকেলটি সম্পন্ন মনোযোগ সহকারে পড়তে হবে।
গর্ভাবস্থায় কি কি সবজি খাওয়া যাবে না এ বিষয়টি প্রতিটা গর্ভবতী
নারীদের জেনে রাখা উচিত। তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক
গর্ভাবস্থায় কি কি সবজি খাওয়া যাবে না।
পোস্ট সূচিপত্রঃ গর্ভাবস্থায় কি কি সবজি খাওয়া যাবে না দেখুন
- ভূমিকা
- গর্ভাবস্থা কি
- গর্ভাবস্থায় কতটুকু প্রোটিন প্রয়োজন
- গর্ভাবস্থায় প্রথম তিন মাসে কি খাবেন
- গর্ভাবস্থায় কি কি সবজি খাওয়া যাবে না
- গর্ভাবস্থায় কোন কোন সবজি খেতে হবে
- গর্ভাবস্থায় কি কি মাছ খাওয়া যাবে না
- গর্ভাবস্থায় কি খেলে বাচ্চা বুদ্ধিমান হয়
- গর্ভাবস্থায় কি খেলে বাচ্চা ফর্সা হয়
- গর্ভাবস্থায় বাচ্চার চুল ভালো রাখার খাবার
- শেষ কথা
গর্ভাবস্থায় কি কি সবজি খাওয়া যাবে না । ভূমিকা
গর্ভাবস্থায় কি কি সবজি খাওয়া যাবে না এটি একটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ
বিষয়। তাই আপনি যদি গর্ভবতী মহিলা হয়ে থাকেন তাহলে আজকের এই আর্টিকেলটি আপনারই
জন্য। কারণ এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আমরা খুবই সুন্দরভাবে আলোচনা করেছি
গর্ভাবস্থায় কি কি সবজি খাওয়া যাবে না সে সম্পর্কে। শুধু তাই নয়, এই আর্টিকেল
এর মাধ্যমে আপনি আরো জানতে পারবেন গর্ভাবস্থা কি, গর্ভাবস্থায় কতটুকু প্রোটিন
প্রয়োজন, গর্ভাবস্থায় প্রথম তিন মাসে কি খাবেন, গর্ভাবস্থায় কোন কোন সবজি খেতে
হবে, গর্ভাবস্থায় কি কি মাছ খাওয়া যাবে না, গর্ভাবস্থায় কি খেলে বাচ্চা
বুদ্ধিমান হয়, গর্ভাবস্থায় কি খেলে বাচ্চা ফর্সা হয় এবং গর্ভাবস্থায় বাচ্চার
চুল ভালো রাখার খাবার সম্পর্কে। তো চলুন এ সকল বিষয়গুলি আমরা বিস্তারিতভাবে জেনে
নেওয়ার চেষ্টা করি। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনার অনেক উপকারে আসবে।
আরো পড়ুনঃ গর্ভবস্থায় কি খেলে বাচ্চা বুদ্ধিমান হয়
গর্ভাবস্থা কি
গর্ভাবস্থা হল এমন একটি সময় যখন একটি নারীর শরীরের মধ্যে এক বা একাধিক সন্তান
বৃদ্ধ লাভ করে। একবার গর্ভধারণের ক্ষেত্রে একের অধিক যেমন যমজ সন্তান থাকতে পারে।
গর্ভাবস্থা যৌনসঙ্গম কিংবা সহায়ক প্রজনন প্রযুক্তির মাধ্যমেও ঘটতে পারে। এ সময়ে
নারীদের শারীরিক এবং মানসিক বিরাট পরিবর্তন দেখা যায়। এর সাথে সাথে নিজেকে
মানিয়ে নিতে অপেক্ষা করতে হয় সন্তানের আগমনের কমপক্ষে ৯ মাসের বেশি সময় ধরে।
গর্ভাবস্থায় কতটুকু প্রোটিন প্রয়োজন
গর্ভাবস্থায় কতটুকু প্রোটিন প্রয়োজন? অনেক মা বোনেরাই জানতে চাই। সেজন্য আমরা
এখন জানাবো গর্ভাবস্থায় কতটুকু প্রোটিন প্রয়োজন। গর্ভাবস্থায় মায়ের প্রায় ৭০
থেকে ১০০ গ্রাম প্রোটিন প্রয়োজন হয়ে থাকে। সেজন্য প্রোটিনযুক্ত খাবার যেমনঃ
মাছ, মাংস, ডিম, ডাল ইত্যাদি বেশি বেশি খাওয়া প্রয়োজন।
গর্ভাবস্থায় প্রথম তিন মাসে কি খাবেন
গর্ভাবস্থায় প্রথম তিন মাসে কি খাবেন? গর্ভাবস্থায় শিশু বাচ্চার হাড় ও দাঁত
গঠনের জন্য ক্যালসিয়াম প্রয়োজন। কারণ গর্ভাবস্থায় মায়ের শরীরে ক্যালসিয়ামের
ঘাটতি হলে শরীর মায়ের হাড় থেকে গর্ভের শিশু বাচ্চার শরীরে ক্যালসিয়াম সরবরাহ
করবে। এর ফলে মায়ের শরীরে ক্যালসিয়ামের ঘাটতি জনিত সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই
গর্ভাবস্থায় প্রথম তিন মাসে মায়ের খাদ্য তালিকায় অবশ্যই পর্যাপ্ত ক্যালসিয়াম
জাতীয় খাবার খেতে হবে। যেমনঃ দই, দুধ, পনীর, বাঁধাকপি, ব্রকলি, ঢেঁড়স,
কাটাযুক্ত মাছ, ডুমুর, পালং শাক, ডিম, চিয়াসিড, টফু, তিল, আমান্ডো, তিশি ইত্যাদি
খাবার। এবং ক্যালসিয়ামের শোষণের জন্য ভিটামিন ডি প্রয়োজন। সেজন্য প্রতিদিন
সকালবেলা অন্তত ১০ থেকে ১৫ মিনিটের জন্য শরীরে রোদ লাগানোর চেষ্টা করবেন।
গর্ভাবস্থায় কি কি সবজি খাওয়া যাবে না
গর্ভাবস্থায় কি কি সবজি খাওয়া যাবে না প্রতিটা গর্ভবতী মায়ের জেনে
রাখা উচিত। গর্ভাবস্থায় শিশু বাচ্চার গর্ভে থাকায় গর্ভবতী মায়ের খাবারের
দিক থেকে অনেক কিছু মেনে চলতে হয় বা সচেতন থাকতে হয়। গর্ভবতী মা ও অনাগত
শিশু বাচ্চার সুস্বাস্থ্যের জন্য বেশ কিছু সবজি এড়িয়ে চলা উচিত যেটি গর্ভবতী মা
এবং সন্তানকে নিরাপদ রাখতে বিশেষ সাহায্য করবে। তাই আজকে আমরা আর্টিকেলের এ
অংশে এখন জানাবো গর্ভাবস্থায় কি কি সবজি খাওয়া যাবে না। তাহলে চলুন জেনে
নেওয়া যাক গর্ভাবস্থায় কি কি সবজি খাওয়া যাবে না।
- না ধোয়া ফল ও সবজি
- আনারস
- করলা
- পেঁপে
- সজিনা
- অ্যালোভেরা
- আধা সিদ্ধ ডিম
- পনির বা চিজ
- কলিজা
- অপাস্তরিত দুধ
- দোকান থেকে কেনা সালদ
- প্যাকেটজত ফলের রস
- ভেষজ চা
- অতিরিক্ত মসলাযুক্ত খাবার
- অতিরিক্ত চিনি জাতীয় খাদ্য
- অ্যালকোহল যুক্ত খাবার
আনারসঃ আনারস অত্যন্ত সুস্বাদু একটি ফল ও পুষ্টিকর
খাবার। আনারসে ব্রোমালিন নামক এক ধরনের উপাদান রয়েছে যেটি গর্ভের
সন্তানের ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। সেজন্য গর্ভাবস্থায় প্রথম ৩ মাস
আনারস খাওয়া যাবে না। কারণ আনারসে থাকা ব্রোমালিন নামক উপাদানটি
গর্ভপাতের দুর্ঘটনা ঘটাতে পারে।
করলাঃ করলাতে রয়েছে গ্লাইকোলাইসিস, সেপনিক, মারোডিসিন নামক
ক্ষতিকর পদার্থ যা গর্ভাবস্থায় গর্ভবতী এবং গর্ভজাত সন্তানের ক্ষতির কারণ
হতে পারে। তাই গর্ভাবস্থায় করলা খাওয়া যাবে না।
পেঁপেঃ পেঁপেতে রয়েছে ল্যাটেক্স নামক এক ধরনের উপাদান যা
গর্ভজাত সন্তানের ক্ষতির কারণ হতে পারে। তাই গর্ভাবস্থায় পেঁপে খাওয়া
যাবেনা। কাঁচা অথবা আধা পাকা পেঁপে খাওয়া যাবে না।
সজিনাঃ সজিনাতে আলফা সিটেস্টেরল নামক এক ধরনের উপাদান
রয়েছে যা গর্ভাবস্থায় গর্ভবতী মায়ের গর্ভপাত ঘটাতে পারে। সেজন্য
সজিনা জনপ্রিয় ও পুষ্টিকর সবজি হওয়া সত্ত্বেও গর্ভাবস্থায় সজিনা খাওয়া
যাবে না।
অ্যালোভেরাঃ গর্ভাবস্থায় অ্যালোভেরা খাওয়া যাবে না। কারণ
অ্যালোভেরা গর্ভপাত ঘটাতে পারে। আমাদের মধ্যে অনেকেই আছেন যারা রূপচর্চার
জন্য কিংবা পেট পরিষ্কার করার জন্য নিয়মিত অ্যালোভেরার জুস খেয়ে থাকে। তবে
গর্ভাবস্থায় অ্যালোভেরা এড়িয়ে চলাই উচিত।
আধা সিদ্ধ ডিমঃ গর্ভাবস্থায় ডিম খাওয়ার সময় অবশ্যই ভালোভাবে
রান্না করে খেতে হবে। আধা সিদ্ধ ডিম খেলে গর্ভবতী মায়ের পেটে সমস্যা দেখা
দিতে পারে। সেজন্য গর্বাবস্থায় কখনোই আধা সিদ্ধ কিংবা অল্প সিদ্ধ ডিম খাওয়া
উচিত নয়। কেননা এতে সালমোনেলা দ্বারা দূষিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে যা
ডায়রিয়া অথবা বমি ভাব সৃষ্টি করতে পারে। এছাড়া গর্ভাবস্থায় সামুদ্রিক মাছ
খাওয়া যাবে না। সামুদ্রিক মাছ কাঁচা বা আধা সিদ্ধ কিংবা তা দিয়ে তৈরি
খাবার। কাঁচা ডিম থেকে সাল্মনেল্লা নামক একটি রোগের সম্ভাবনা রয়েছে
যেটি গর্ভাবস্থায় গর্ভবতী মায়ের দেখা যায়।
পনির বা চিজঃ গর্ভাবস্থায় পনির বা চিজ খাওয়া যাবে
না। কারণ গর্ভাবস্থায় চিজ খুবই বিপদজনক খাবার। সাধারণত এই চিজ
গুলো পাস্তারিত থাকে না আর অপাস্তারিত এইসব চিজ গর্ভবতী মায়ের ও
সন্তানের উভয়ের জন্যই বিপদ ডেকে আনতে পারে।
কলিজাঃ গর্ভাবস্থায় কলিজা অথবা কলিজা দিয়ে তৈরি করা কোন খাবার
খাওয়া যাবে না। কারণ কলিজা এবং কলিজা দিয়ে তৈরি করা খাবারে থাকে
প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ। আর অতিরিক্ত ভিটামিন এ বিশেষ করে
গর্বাবস্থায়ের প্রথম দিকে খুবই বিপদজনক।
অপাস্তরিত দুধঃ অপাস্তরিত দুধ বলতে কাঁচা দুধকে বোঝানো হয়ে
থাকে। এই অপাস্তরিত দুধ গর্ভাবস্থায় গর্ভবতী সন্তানের জন্য এমনকি
গর্ভবতী মায়ের জন্য ক্ষতির কারণ হতে পারে। কেননা দুধকে পাস্তরিত করা
হয় এই জন্য যে যাতে করে দুধের ভেতরে থাকা জীবাণুগুলি ধ্বংস হয়ে যায়।
দোকান থেকে কেনা সালদঃ গর্ভাবস্থায় কোনভাবেই বাহিরের দোকান থেকে
কেনা সবজির সালাদ খাওয়া যাবে না। কেননা বাহিরের দোকান থেকে কেনা সবজির
সালাদে বিভিন্ন ধরনের জীবাণু থাকতে পারে কিংবা ব্যাকটেরিয়া জন্মাতে পারে
যেটি গর্ভাবস্থায় গর্ভবতী মায়ের এবং গর্ভের সন্তানের জন্য হুমকি হয়ে
দাঁড়ায়।
প্যাকেটজত ফলের রসঃ গর্ভাবস্থায় তাজা ফলের রস একটি ভাল খাবার
বটে। তবে কাঁচা ফল এবং সবজিতে মারাত্মক ব্যাকটেরিয়া কিংবা ভাইরাস
দ্বারা দূষিত হওয়ার ঝুঁকি থাকে। সেজন্য আপনি আপনার বাড়িতে তৈরি করা
তাজা রস দিয়ে আপনার তৃষ্ণা মেটাতে পারেন যাতে করে আপনি নিশ্চিত হতে পারেন যে
রসটি তাজা এবং স্বাস্থ্যসম্মত ভাবে বানানো হয়েছে। কিন্তু আনারস ও
আঙ্গুর ফল খাওয়া যাবে না।
ভেষজ চাঃ বিভিন্ন চিকিৎসকের মতে চা একজন গর্ভাবস্থায়
গর্ভবতী মায়ের স্বাস্থ্যের ক্ষতি করে থাকে। গর্ভাবস্থায় অতিরিক্ত কড়া কিংবা
অনেক তিতা চা আরো অনেক বেশি ক্ষতি করে থাকে। অনেকেই গর্ভাবস্থায় চা খাওয়া
মুখের স্বাদ পরিবর্তনের নিয়ম মনে করে। কিন্তু এটি ভালো করার চেয়ে গর্ভবতী
মায়ের ক্ষতি করে বেশি।
অতিরিক্ত মসলাযুক্ত খাবারঃ এমনিতেই অতিরিক্ত মসলাযুক্ত খাবার খেলে বুক অনেক জ্বালাপোড়া করে। সেজন্য রান্নায় মসলা কম পরিমাণে ব্যবহার করা উচিত। গর্ভাবস্থায় গর্ভবতী মায়েদের মসলাযুক্ত খাবার সবচাইতে বেশি এড়িয়ে চলা উচিত। গর্ভাবস্থার সময়ে, এসিড রিফ্লাক্স এবং বুক জ্বালার সম্ভাবনা অনেকটাই বেশি থাকে। তবে কখনো যদি অতিরিক্ত পরিমাণে মসলা জাতীয় খাবার খান সেক্ষেত্রে এক গ্লাস দুধ খেয়ে নিবেন যাতে করে দ্রুত বুক জ্বালা কমানো যায়।
অতিরিক্ত চিনি জাতীয় খাদ্যঃ আপনি নিয়মিত কত পরিমানে চিনি
খাচ্ছেন সেটির পরীক্ষা করুন এবং যত তাড়াতাড়ি সম্ভব চিনি এড়াতে আপনার
যথাসাধ্য চেষ্টা অব্যাহত রাখতে থাকুন। উচ্চ পরিমাণে চিনির মাত্রা আপনার
রক্তে চীনের মাত্রা অনেক বাড়িয়ে তুলতে পারে, যেটি আপনার পেটের ভ্রূণকে
অনেক ক্ষতি করতে পারে। গর্ভাবস্থায় বেশিরভাগ নারী আইসক্রিম এবং চকলেট
খেতে অনেক বেশি খেতে চাই। তবে গর্ভাবস্থায় আইসক্রিম খেতে পারবেন কিন্তু
মাঝে মাঝে।
অ্যালকোহল যুক্ত খাবারঃ অ্যালকোহল জাতীয় খাবার গুলো সকল
শ্রেণীর মানুষের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর শুধু গর্ভাবস্থায় গর্ভবতী মায়েদের
জন্যই ক্ষতিকর নয়। সেজন্য গর্ভাবস্থায় অ্যালকোহল যুক্ত খাবার না খাওয়া
উচিত। অ্যালকোহল যুক্ত কোন ধরনের খাবার বিশেষ করে পনির জাতীয় কিছু একেবারেই
খাওয়া যাবে না। অপাস্তরিত কিংবা কাঁচা দুধ খাওয়া যাবে না। গরু, ছাগল অথবা
ভেড়ার অপাস্তরিত দুধ খাওয়া যাবে না। তাছাড়া কারো যদি মদ পান কিংবা
মাত্রাতিরিক্ত ক্যাফেইন জাতীয় পানীয় যেমনঃ চা, কফি, কলা ইত্যাদির খাওয়ার
অভ্যাস থাকে, তবে সেটিও গর্ভাবস্থায় খাওয়া যাবে না।
গর্ভাবস্থায় কোন কোন সবজি খেতে হবে
গর্ভাবস্থায় কি কি সবজি খাওয়া যাবে না? তা এতক্ষণ আপনি জানলেন। এখন আপনাদেরকে জানানো হবে গর্ভাবস্থায় কোন কোন সবজি খেতে হবে? গর্ভাবস্থায় নিয়মিত কমপক্ষে পাঁচ পরিবেশন রঙিন ফল এবং বিভিন্ন ধরনের শাকসবজি খেতে হবে। কারণ এ সকল ফল ও শাকসবজি গর্ভকালীন সময়ে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ভিটামিন ও খনিজ লবণের চাহিদা মিটিয়ে থাকে। রঙিন ফল ও শাকসবজিতে রয়েছে ক্যারোটিন।
আরো পড়ুনঃ বাচ্চাদের আমাশয় হলে কি খাওয়া উচিত
যা গর্ভাবস্থায় সন্তানের সুস্থ ও স্বাভাবিক বেড়ে ওঠায় সাহায্য করে
থাকে। তাছাড়া ফল ও শাকসবজি আঁশ জাতীয় খাবারের প্রধান উৎস। এ সকল
খাবার হজমে সাহায্য করার পাশাপাশি কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধেও সাহায্য করে। ফল ও
শাকসবজি কাঁচা অথবা রান্না, টাটকা কিংবা ফ্রোজেন যেকোনো উপায়েই খাওয়া
যেতে পারে। কিন্তু অবশ্যই খাওয়ার আগে পরিষ্কার জল দিয়ে সেগুলি ভালো করে
কুচলিয়ে ধুয়ে নিবেন। গর্ভাবস্থায় কোন কোন সবজি খেতে হবে তা নিচে দেওয়া হল।
গর্ভাবস্থায়ী আপনি প্রায় সব ধরনের শাকসবজি ও ফল খেতে পারেন যেমনঃ
শাকসবজিঃ
- গাজর
- মিষ্টি আলু
- মিষ্টি কুমড়া
- পালং শাক
- টমেটো
- মটরশুঁটি
- ক্যাপসিকাম, ইত্যাদি।
ফলঃ
- আম
- কলা
- পেয়ারা
- কমলা
- মাল্টা
- জাম্বুরা
- বাঙ্গি, ইত্যাদি।
গর্ভাবস্থায় কি কি মাছ খাওয়া যাবে না
গর্ভাবস্থায় কি কি মাছ খাওয়া যাবে না? বিভিন্ন চিকিৎসকের মতে, যে সকল সামুদ্রিক
মাছে অধিক পরিমাণে পারদ থাকে সেগুলো গর্ভাবস্থায় খাওয়া যাবে না। টুনা, শার্ক
ইত্যাদি মাছে বেশি পরিমাণে পারদ থাকে। সেজন্য গর্ভবতী মায়েদের এ সকল মাছ এড়িয়ে
চলাই উচিত। কিন্তু চিংড়ি, তেলাপিয়া, স্যামন, শিঙি, মাগুর ইত্যাদি মাঝে কম
পরিমাণে পারদ থাকে। সেজন্য মাঝে মাঝে এ সকল সামুদ্রিক মাছ গর্ভবতী মায়েরা তাদের
খাদ্য তালিকায় রাখতে পারে।
গর্ভাবস্থায় কি খেলে বাচ্চা বুদ্ধিমান হয়
গর্ভাবস্থায় কি খেলে বাচ্চা বুদ্ধিমান হয়? গর্ভাবস্থায় প্রোটিন যুক্ত খাবার
যেমনঃ মাছ, মাংস, ডিম, বিনস, সিড, পাঁচমিশালী ডাল ইত্যাদি খেলে বাচ্চার
মস্তিষ্কের বিকাশ ভালো হয়। এছাড়া শুকনো ফল, কলা, পুদিনা পাতা, সবুজ শাকসবজিতে
আয়রন ও ফলিক অ্যাসিড থাকে, যা গর্ভাবস্থায়ী বাচ্চার মস্তিষ্ক বিকাশে,
বুদ্ধিমত্তা বাড়াতে সাহায্য করে থাকে। বাচ্চার মস্তিষ্কের বিকাশ মায়ের
গর্ভাবস্থায়ই হয়। তাই এই সময়ে প্রয়োজন মায়ের একটি বালান্স ও মডিফাইড ডায়েট।
গর্ভাবস্থায় কি খেলে বাচ্চা ফর্সা হয়
গর্ভাবস্থায় কি খেলে বাচ্চা ফর্সা হয়? গর্ভাবস্থায় গর্ভবতী মহিলাদের স্বাভাবিকের তুলনায় একটু বেশি ক্ষুধা পেয়ে থাকে এবং সেই সময়ে ঠিকঠাক মতো খাওয়া-দাওয়া করাটা তাদের জন্য আসলেই খুব জরুরী। কারণ এই খাবার গর্ভবতী মায়ের সাথে সাথে বাচ্চার জন্য অনেক বেশি দরকারি। আমাদের দেশে বেশিরভাগ মানুষই চায় তার বাচ্চার গায়ের রং যেন ফর্সা হয়। বিভিন্ন বিশেষজ্ঞদের মতে, খাদ্য নির্বাচনের উপর বাচ্চার শরীরের বর্ণ কেমন হবে সেটি নির্ভর করে থাকে। এটি নির্ভর করে তার বাবা-মা-এর ওপর।
আরো পড়ুনঃ মেয়েদের ঘরে বসে রোজগারের সেরা ১০টি উপায়
কিন্তু প্রচলিত ধারণা অনুসারে গর্ভাবস্থায় যেই খাবারগুলি খেলে বাচ্চার বর্ণ
ফর্সা হতে পারে, এমন কিছু খাবার তালিকা পরিবারের বয়স্করা দিয়ে থাকেন।
গর্ভাবস্থায় কি খেলে বাচ্চা ফর্সা হয় তা নিচে দেওয়া হলঃ
- দুধ
- ডিম
- টমেটো
- জাফরান দুধ
- চেরি ও বেরি জাতীয় ফল
- কমলা
- নারিকেল, ইত্যাদি।
গর্ভাবস্থায় বাচ্চার চুল ভালো রাখার খাবার
গর্ভাবস্থায় বাচ্চার চুল ভালো রাখার খাবার? মাছ ওমেগা -৩ এবং ফ্যাটি অ্যাসিডের
একটি চমৎকার উৎস যা চুলের বৃদ্ধি উন্নত করতে সাহায্য করে। তবে যাই হোক,
গর্ভাবস্থায় মাছ খাওয়ার সময় অবশ্যই সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে কেননা সব ধরনের
মাছ খাওয়া নিরাপদ নয়। গর্ভাবস্থায় মাছ খাওয়ার আগে অবশ্যই আপনার পুষ্টিবিদ
কিংবা স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে পরামর্শ করে নিবেন।
গর্ভাবস্থায় কি কি সবজি খাওয়া যাবে না । শেষ কথা
গর্ভাবস্থায় কি কি সবজি খাওয়া যাবে না তা আপনাকে ইতিমধ্যেই
জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। আপনি যদি সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি না পড়েন তাহলে দয়া করে
সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ে আসুন। যদি আপনার কোথাও বুঝতে সমস্যা হয় তাহলে অবশ্যই
আমাদের কমেন্ট সেকশনে জানাবেন আমরা আপনাকে সঙ্গে সঙ্গে বুঝিয়ে দেওয়ার চেষ্টা
করব। আজকের এই আর্টিকেলটি আপনার কাছে তথ্যবহুল মনে হলে আপনি আপনার বন্ধুদের
সাথে শেয়ার করতে ভুলবেন না, কেননা আপনার মাধ্যমে আপনার বন্ধুরাও জানতে পারবে
গর্ভাবস্থায় কি কি সবজি খাওয়া যাবে না।
প্রিয় পাঠক, এতক্ষণ আমাদের সাথে থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য
ধন্যবাদ। এরকম তথ্যবহুল পোস্ট পেতে আমাদের গুগল নিউজে ফোলো দিয়ে রাখুন।
কারণ আমরা এই ওয়েবসাইটে নিয়মিত নতুন নতুন ব্লগ পোস্ট বা আর্টিকেল পাবলিশ করে
থাকি। আসসালামু আলাইকুম।
সাগর ম্যাক্স এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url