বাচ্চাদের আমাশয় হলে কি খাওয়া উচিত - বাচ্চাদের আমাশয়ের কারণ
শিশুর মানসিক বিকাশের ধাপ গুলি কি কিবাচ্চাদের আমাশয় হলে কি খাওয়া উচিত সে সম্পর্কে আপনি জানেন? যদি না জানেন
বাচ্চাদের আমাশয় হলে কি খাওয়া উচিত তবে আজকের এই আর্টিকেলটি আপনার জন্য। আমরা
এই আর্টিকেলের মাধ্যমে এখন বিস্তারিতভাবে আলোচনা করব বাচ্চাদের আমাশয় হলে কি
খাওয়া উচিত এবং বাচ্চাদের আমাশয়ের কারণ সম্পর্কে।
বাচ্চাদের আমাশয় হলে কি খাওয়া উচিত এবং বাচ্চাদের আমাশয়ের কারণ গুলো আমাদের
প্রত্যেকের জেনে রাখা উচিত। কারণ অনেক সময় আমাদের শিশু বাচ্চাদের ডায়রিয়ার
সমস্যা হয়ে থাকে। তো চলুন আর কথা না বাড়িয়ে জেনে নেওয়া যাক সম্পর্কে।
পোস্ট সূচিপত্রঃ বাচ্চাদের আমাশয় হলে কি খাওয়া উচিত - বাচ্চাদের আমাশয়ের কারণ
- ভূমিকা
- আমাশয় কী
- বাচ্চাদের আমাশয়ের কারণ
- বাচ্চাদের আমাশয় হলে কি খাওয়া উচিত
- বাচ্চাদের আমাশয় হলে কি খাওয়া উচিত নয়
- বাচ্চাদের আমাশয় রোগের ঘরোয়া চিকিৎসা
- বাচ্চাদের আমাশয় ঔষধ নাম
- বাচ্চাদের আমাশয় সিরাপ
- শেষ কথা
বাচ্চাদের আমাশয় হলে কি খাওয়া উচিত ।ভূমিকা
আমাদের মধ্যে অনেকে আছেন যারা তাদের শিশু বাচ্চাকে নিয়ে অনেক চিন্তিত। সেজন্য
অনেক সময় ইন্টারনেটের কাজ করে বাচ্চাদের আমাশয় হলে কি খাওয়া উচিত এবং
বাচ্চাদের আমাশয়ের কারণ গুলো সম্পর্কে। তাই আপনিও যদি সবার মত আপনার শিশু
বাচ্চাকে নিয়ে চিন্তিত থাকেন এবং জানতে চান, বাচ্চাদের আমাশয় হলে কি খাওয়া
উচিত এবং বাচ্চাদের আমাশয়ের কারণ গুলো তাহলে এই সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি আপনারই
জন্য। কারণ আপনি যদি এই আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ মনোযোগ সহকারে পড়েন তাহলে
বিস্তারিতভাবে জানতে পারবেন বাচ্চাদের আমাশয় হলে কি খাওয়া উচিত এবং বাচ্চাদের
আমাশয়ের কারণ সম্পর্কে।
আরো পড়ুনঃ শিশুর মানসিক বিকাশে মায়ের ভূমিকা
শুধু তাই নয় এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আপনি আরো জানতে পারবেন আমাশয় কী, বাচ্চাদের
আমাশয় হলে কি খাওয়া উচিত নয়, বাচ্চাদের আমাশয় রোগের ঘরোয়া চিকিৎসা,
বাচ্চাদের আমাশয় ঔষধ নাম এবং বাচ্চাদের আমাশয় সিরাপ গুলো বিষয়ে। তাহলে চলুন আর
দেরি না করে সমস্ত বিষয়গুলি বিস্তারিতভাবে জেনে নেওয়ার চেষ্টা করি আশা করি এই
সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি আপনার অনেক উপকারে আসবে।
আমাশয় কী
আমাশয় হল অন্ত্রের ইনফেকশন অথবা সংক্রমণ। এটি মূলত জীবাণু ঘটিত রোগ।
আমাশয়-এর ফলে প্রাথমিকভাবে খুব কষ্ট হলেও এতে কোন ধরনের প্রাণহানির
আশঙ্কা থাকে না। তবে আমাশয় দীর্ঘদিন ধরে নিরাময় না হলে প্রাণহানির
আশঙ্কাও দেখা দিতে পারে। এটি ডায়রিয়ার চেয়েও শংকাজনক অবস্থার সৃষ্টি
করে থাকে। শরীরে প্রচুর পরিমাণে পানি শূন্যতা সৃষ্টি
করে। এছাড়াও আমশায় সাধারণত ২ প্রকার। যথাঃ
- ব্যাসিলারি টিসেনট্রি
- অ্যামিবিক ডিসেন্ট্রি
ব্যাচেলারি টিসেনট্রিঃ ব্যাসিলারি টিসেনট্রি
সাধারণত আক্রান্ত ব্যক্তির খাবার, পানিসহ বিভিন্ন ধরনের উপায়
ছড়ায়। এটা শিগেলা নামক ব্যাকটেরিয়া থেকে সৃষ্টি হয়ে থাকে।
অ্যামিবিক ডিসেন্ট্রিঃ অ্যামিবিক ডিসেন্ট্রি, যেটি
Entamoeba Histotolytica নামক পরজীবির কারণেই আক্রান্ত হয়ে থাকে। এই
পরজীবির আক্রমণে একটি নির্দিষ্ট এলাকায় 40% মানুষ আক্রান্তের শিকার
হয়।
এই ধরনের আমাশয় হয়, স্যানিটেশন সমস্যা থাকার ফলে। খাবার, পানির মতো
এটিও সংক্রামক হিসেবে কাজ করে থাকে। এছাড়াও অন্ত্রেরের সংশ্লিষ্ট অংশে
খোদাহের সৃষ্টি হয়, পেট প্রচন্ড ব্যথা করে এবং শ্লেষ্মা ও রক্তসহ
পাতলা পায়খানা হতে থাকে।
বাচ্চাদের আমাশয়ের কারণ
বাচ্চাদের আমাশয়ের কারণ অনেক রয়েছে, তার মধ্যে সবচাইতে উল্লেখযোগ্য
কারণগুলো নিচে এখন আলোচনা করা হবে। আপনার বাচ্চা আমাশয়ের কারণ গুলো
নিম্নরূপঃ
- সংক্রমিত পানি অথবা অন্যান্য পানীয় থেকে আমাশয় হতে পারে।
- সংক্রমিত খাদ্য থেকেও আমাশয় হতে পারে।
-
বাচ্চা নোংরায় হাত দিলে সেই হাত ভালোভাবে না ধুলেও আমাশয় হওয়ার
সম্ভাবনা থাকে।
- বাচ্চা সাঁতার কাটার সময় পুকুরের অথবা পুলের সংক্রমিত পানি ভুলবশত পেটে গেলেও আমাশয় হতে পারে।
-
সংক্রমিত মানুষের স্পর্শে যাওয়ার ফলেও হতে পারে আমাশয়।
-
পানি থেকে হতে পারে আমশায়। বিভিন্ন অভিজ্ঞ চিকিৎসকের
মতে, আমশয় সংক্রমনের পিছনে সবচেয়ে পানির ভূমিকায় বেশি।
বাচ্চাদের আমাশয় প্রতিরোধে বাচ্চার অভিভাবককে সর্বদা সচেতন থাকতে হবে। আমাশয়
হলে বিশেষজ্ঞরা কিছু করণীয় বিষয়ে বিষয় জানিয়েছেন। সেগুলো
হলোঃ
- সাধারণত বাচ্চার আমাশয় এক সপ্তাহের মধ্যেই ভালো হয়ে যায়। কিন্তু আমাশয় হলে বাচ্চাকে খাবার স্যালাইন খাওয়াতে হবে।
-
বাচ্চার শরীর থেকে পানি শূন্যতা দূর করতে প্রচুর পরিমাণে তরল
খাবার যেমনঃ ঠান্ডা পানি, চিনির শরবত, ফলের
রস, ডাবের পানি ইত্যাদি খাওয়াতে হবে।
-
বাচ্চার মল যদি অতিরিক্ত পরিমাণ পাতলা হয়, সেক্ষেত্রে
চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
- বাচ্চাকে পর্যাপ্ত বিশ্রাম দিতে হবে।
বাচ্চাদের আমাশয় হলে কি খাওয়া উচিত
বাচ্চাদের আমাশয় হলে কি খাওয়া উচিত? তা সম্পর্কে জানতে আর্টিকেলের এই
অংশটুকু পড়তে থাকুন। এখন আপনার সামনে আলোচনা করা হবে বাচ্চাদের আমাশয়
হলে কি খাওয়া উচিত। আমাশয় হল একটি ব্যাকটেরিয়াল ডিজিজ সুতরাং, কোন
বাজে ব্যাকটেরিয়া যখন বাচ্চা শরীরে ঢুকে যায়, তখনই মূলত তার আমাশায়
হয়, জামটা না যাওয়া পর্যন্ত কিন্তু এই সমস্যাটি থাকবে এবং আমাশয় হলে
বাচ্চা কান্নাকাটি করবে এপিটেটিটা একটু লস হতে পারে এবং আমাশয় টয়লেটটা
একটু একটু করে হয়, একবারে কিন্তু হয়না একটু পেইন ফুল হয়।
আরো পড়ুনঃ গর্ভাবস্থায় কি খেলে বাচ্চা ফর্সা হয়
যখন এটা হবে তখন ধরে নিতে হবে আপনার বাচ্চা হয়তোবা হাত মুখে দিচ্ছে,
আপনার কাপড় মুখে দিচ্ছে কিংবা নিজ থেকে কোন একটি কিছু মুখে দিচ্ছে সে,
সেখানেই জামটা ছিল আর সেই জামটা থেকেই এমনটা হয়েছে কিংবা আপনি আপনার
বাচ্চাকে যে প্লেটে খাওয়াচ্ছেন সেই প্লেটে কোন ধরনের ব্যাকটেরিয়া
থাকতেই পারে। কেননা, আমাদের ইনভারমেন পলিউশন অনেক বেশি এবং এটা খুবই
ন্যাচারাল। বাচ্চার যখন আমাশয় হবে তখন বাচ্চার যেন ফ্লুইড যেন ঠিক
থাকে সেক্ষেত্রে আপনি নিয়মিত স্যালাইন খাওয়াতে পারেন।
যদি আপনার বাচ্চা স্যালাইন না খায়, তাহলে ভাতের মার, ডালের
পানি, ডাবের পানি এই লিকুইটি আপনি ম্যানশন করতে পারেন। আপনি খুব সহজেই
আপনার বাসায় মিনারেল ওয়াটারের সাথে কিছু লবণ ও গুড় মিশিয়েই বাসায়
স্যালাইন তৈরি করে নিতে পারেন এবং এই স্যালাইন আপনার বাচ্চার টয়লেটের
পর দুই থেকে তিন চামচ করে খাওয়াতে পারেন, তাহলেই বাচ্চার ফ্লুইডের
সমতাটা থাকে। একেবারেই যদি আপনার বাচ্চা কিছু খেতে না চায় তাহলে এই যে
লিকুইড খাবার গুলোর কথা আপনাকে জানিয়েছি যেমনঃ ডাবের পানি, ডালের
পানি, সুপ, ভাতের মার এই সকল লিকুইড দিয়েই আপনার বাচ্চার ক্যালোরি
চাহিদা ফিলাপ হবে এবং যখনই তার ফ্লুইডটা ঠিক থাকবে, ইলেক্ট্রোলাইট
ব্যালেন্স থাকবে তখন অটোমেটিকলি আপনার বাচ্চা সলেট খাবার খাবে।
সলেট খাবার বলতে যেমনঃ যাও ভাত, মিস পটেটো, অ্যাপেল এবং ব্যানানা ও
ডিমের সাদা অংশ। এছাড়া অন্য যে সবজি যেমনঃ লাউ, পটল, ঝিঙ্গা, চিচিঙ্গা
ইত্যাদি দিতে পারেন। তবে তখন শাক, ডাটা, এগুলো বাচ্চাকে কম খাওয়ানোর
চেষ্টা করবেন। আর এই সময় দুধ বা দুধ জাতীয় খাবার গুলো বাচ্চাকে
খাওয়ানো অফ রাখবেন। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের মতে-
- বাচ্চাকে বিশুদ্ধ পানি খাওয়াতে হবে।
-
বাচ্চার দাঁত ভালোভাবে ব্রাশ করার পর বিশুদ্ধ পানি ব্যবহার করতে
হবে।
-
বাচ্চার মলত্যাগের পর হাত সাবান দিয়ে ভালোভাবে ধুয়ে দিতে হবে।
-
বাচ্চাকে খাবার খাওয়ানোর আগে অবশ্যই সাবান দিয়ে ভালোকরে হাত ধুতে
হবে।
- বাচ্চাকে বাইরের খাবার কম খাওয়ানোই ভালো।
-
বাচ্চাকে সবজি বা ফল খাওয়ানোর আগে ভালো করে সবজি বা ফল গুলো ধুয়ে
নিতে হবে।
-
বাচ্চার ব্যবহৃত জিনিসপত্র গুলো সবসময় পরিষ্কার রাখতে হবে।
-
অসুস্থ বাচ্চার ডায়াপার পরিবর্তনের ক্ষেত্রে সাবধানতা
অবলম্বন করা অবশ্যক।
বাচ্চাদের আমাশয় হলে কি খাওয়া উচিত নয়
বাচ্চাদের আমাশয় হলে কি খাওয়া উচিত নয়? শিশু বাচ্চারা মায়ের দুধ
পান করে, তাই মায়ের যদি খাবারে কোন ধরনের সমস্যা থাকে সেটি সরাসরি
দিয়ে প্রভাব পড়ে শিশু বাচ্চার উপরে। সেজন্য শিশু বাচ্চাদের আমাশয়
হলে মায়ের যেসব খাবার খাওয়া উচিত নয় তার কিছু তালিকা এখন তুলে ধরা
হবে। তাছাড়া শিশু বাচ্চার আমাশয় যদি মারাত্মক আকার ধারণ করে, তবে
আপনাকে যত দ্রুত সম্ভব চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে, তাহলে চলুন জেনে
নেওয়া যাক শিশু বাচ্চার আমাশয় হলে যে খাবারগুলি আপনি এড়িয়ে চলবেন
বা খাওয়া উচিত নয়।
বাচ্চাদের আমাশয় হলে কি খাওয়া উচিত নয়ঃ
- চানাচুর ও চিপসঃ চানাচুর ও চিপস মসলা জাতীয় খাবার এবং এগুলি তৈলাক্ত জাতীয় খাবার, সেজন্য এ সকল জাতীয় খাবার গুলি আপনার পরিত্যাগ করা আবশ্যক। আপনার বাচ্চার যদি অবস্যয় হয়, কিংবা আমশার জনিত সমস্যায় ভুগে তবে এগুলো আমাশয়ের পরিমাণকে বাড়াতে বিশেষ সহযোগিতা করে। তাই অবশ্যই আপনি চেষ্টা করবেন চানাচুর ও চিপস খাওয়া থেকে বিরত থাকতে।
- ফাস্টফুড জনিত খাবারঃ আপনার বাচ্চার আমাশয় হয়ে থাকলে কিংবা আপনার আমশায়ের সমস্যা থাকলে আপনি অবশ্যই ফাস্টফুড জাতীয় খাবারগুলি এড়িয়ে চলুন। কারণ এই খাবারগুলি আমাশয় বাড়িয়ে দিতে বিশেষ সাহায্য করে থাকে। সেজন্য আপনার উচিত যতটুকু সম্ভব ফাস্টফুড জাতীয় খাবারগুলি এড়িয়ে চলার।
- বাসি জাতীয় খাবারঃ আপনার শিশু বাচ্চার যদি আমাশয়ের সমস্যা থাকে তবে আপনি অবশ্যই বাসি খাবার এড়িয়ে চলার চেষ্টা করবেন। যেমনঃ গতকাল রাতের খাবার আপনি অবশ্যই এড়িয়ে চলার চেষ্টা করবেন। আপনার মধ্যে যদি আমাশয়ের সমস্যা থাকে।
- মসলা জাতীয় খাবারঃ আপনার বাচ্চার যদি আমাশয়ের সমস্যা হয়ে থাকে আর আপনি যদি আপনার বাচ্চাকে দুধ পান করান তবে আপনাকে অবশ্যই ঝাল ও মসলা জাতীয় খাবার থেকে বিরত থাকতে হবে। তা না হলে আপনার বাচ্চার আমাশয়ের সমস্যা আরও বৃদ্ধি পেতে পারে। আশা করছি এই জাতীয় খাবারগুলি এড়িয়ে চলার চেষ্টা করবেন।
বাচ্চাদের আমাশয় রোগের ঘরোয়া চিকিৎসা
বাচ্চাদের আমাশয় রোগের ঘরোয়া চিকিৎসা সম্পর্কে জানতে আর্টিকেলের এই
অংশটুকু পড়তে থাকুন। আপনাকে প্রথমেই বলে রাখি কোন কোন বাচ্চাদের
ঘরোয়া চিকিৎসার মাধ্যমে খুব সহজেই আমশয় থেকে মুক্তি পাওয়া যায়,
আবার কোন কোন বাচ্চা ঘরোয়া পদ্ধতিতে চিকিৎসা করার মাধ্যমেও আমাশয়
সম্পূর্ণভাবে ভালো করা সম্ভব হয় না। সেক্ষেত্রে আপনার বাচ্চার যদি
দিনের পর দিন আমাশয় বৃদ্ধি পেতে থাকে তাহলে অবশ্যই আপনি অভিজ্ঞ
চিকিৎসকের সাথে যোগাযোগ করবেন এবং চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়ার চেষ্টা
করবেন। তাহলে চলুন এবার আমরা জেনে নেই বাচ্চাদের আমাশয় রোগের ঘরোয়া
চিকিৎসা গুলো সম্পর্কে।
আরো পড়ুনঃ গর্ভবস্থায় কি খেলে বাচ্চা বুদ্ধিমান হয়
বাচ্চাদের আমাশয় রোগের ঘরোয়া চিকিৎসাঃ
- কমলালেবুর রসঃ কমলালেবুর মধ্যে এমন কিছু উপাদান রয়েছে, যা বাচ্চাদের পেটের জন্য খুবই উপকারী। আপনি সারাদিনের আপনার বাচ্চাকে তিন থেকে চার গ্লাস কমলালেবুর রস খাওয়াতে পারেন। এই কমলালেবুর রস আপনার বাচ্চার শরীর হাইড্রেটেড রাখতেও বিশেষভাবে সাহায্য করবে।
- লেবুর রসঃ লেবুর রস ব্যাকটেরিয়ার সাথে লড়াই করার জন্য খুবই কার্যকারী। আপনি প্রথমে দুইটি লেবুকে গোল গোল করে কেটে নিন। এরপর এক গ্লাস ফ্রেশ জলে সেই লেবুর টুকরোগুলো ডুবিয়ে ফোটাতে থাকুন। ঠান্ডা হয়ে গেলে এই মিশ্রণ আপনার বাচ্চাকে খাওয়ান। আপনি পারলে সারাদিনে একটু একটু করেও খাওয়াতে পারেন। এতে করে এটি আরো বেশি কাজে দিবে। কিন্তু এই পদ্ধতিটি প্রয়োগের আগে একবার হলেও আপনি অভিজ্ঞ চিকিৎসকের সাথে কথা বলে নিবেন।
- পাকা পেঁপের রসঃ পাকা পেঁপের কাছে রয়েছে কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে আমাশয় পেটের অনেক সমস্যার সমাধান। সেজন্য আপনি প্রথমে একটি গোটা পাকা পেঁপে কচি কচি করে কেটে নিন। তারপর তিন থেকে চার কাপ জলে সেটা ফুটাতে থাকুন অন্তত 10 থেকে 15 মিনিট ধরে।ফোটানো হয়ে গেলে হালকা গরম থাকতে থাকতে আপনার বাচ্চাকে ওই জুস খাওয়ান। কিন্তু অতিরিক্ত পরিমাণে খাওয়াবেন না, সেক্ষেত্রে আপনার বাচ্চার পেটের সমস্যা বেড়ে যেতেও পারে।
- গাজরের রসঃ গাজরের মধ্যে থাকা ফাইবার ও অন্যান্য উপাদান গুলি একইভাবে পেটের বিভিন্ন ধরনের সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করতে পারে। তাই আপনি দু থেকে তিনটি গাজরের রস বানিয়ে আপনার বাচ্চাকে খাওয়াতে পারেন। কিন্তু একেক বাচ্চার গাজর হজম করার ক্ষমতা একেক রকম। সেজন্য আপনি আপনার বাচ্চাকে কতটুকু গাজরের রস খাওয়াবেন তা আগে থেকেই একটি অভিজ্ঞ চিকিৎসকের কাছ থেকে জেনে নিবেন। যদি আপনার বাচ্চা গাজরের রস খেতে না চাই তবে সেক্ষেত্রে গাজর সিদ্ধ করে সুপ তৈরি করেও খাওয়াতে পারেন।
- আদা ও ঘলের শরবতঃ আপনি প্রথমে আদাকে শুকনো করে তার পাউডার বানিয়ে নিন। এবং তার সাথে সমপরিমাণ জিরেগুঁড়ো, জায় ফলগুড়ো, এবং গোল মরিচ গুঁড়ো মেশান। এই মিশ্রণের এক চা চামচ ঘলের সাথে মিশিয়ে নিন। আপনি চাইলে এতে এক চিমটি বিট লবণও মিশাতে পারেন। এই শরবত আপনার বাচ্চাকে সকালে খাওয়ান। জল খাবারের পর পরে এটি খাওয়াবেন। তবে আপনি যদি বিকালের দিকে আপনার বাচ্চাকে খাওয়াতে চান তাহলে ঘোল বাদ দিয়ে এক চা চামচ মিশ্রণ হালকা গরম জলের সাথে মিশিয়ে নেবেন।
- বেলের শরবতঃ বেলের শরবত বানাতে আপনি প্রথমে এক চা চামচ বেলের শাঁস নিয়ে, সেটি দিয়ে শরবত বানিয়ে ফেলুন। এই শরবত আপনার বাচ্চাকে সকালে খাওয়ান। প্রতিদিন দুইবার করে খাওয়াতে পারেন। আয়ুবেদেও আমাশয় নিরাময়ে প্রধান রাস্তা হিসেবে বেলের শরবতের কথা বলা হয়েছে। কিন্তু বাচ্চাকে বেশি পরিমাণে খাওয়ানো যাবে না। কোনরকম সংশয় থাকলে, অভিজ্ঞ চিকিৎসকের কাছ থেকে জেনে নিতে পারেন।
- ক্যামোমাইল চাঃ ক্যামোমাইল চায়ের মধ্যে থাকা উপাদান গুলো অন্তরে ব্যাকটেরিয়াজাত সমস্যার সহজ একটি সমাধান। যে উপায়ে চা বানানো হয়, একইভাবে আপনি এক কাপ গরম জলের জন্য এক চা চামচ ক্যামোমাইল পাতার গুঁড়ো ব্যবহার করুন। তবে আপনি যদি পাতা না পান তাহলে এক কাপ গরম জলে ক্যামোমাইল চায়ের একটা টি-ব্যাগও দিতে পারেন। এভাবে করে আপনার বাচ্চাকে সারাদিনে ২/৩ কাপ চা খাওয়াতে পারেন। এতে করেও বাচ্চার আমাশয়ের সমস্যা অনেকটাই কমতে পারে।
- ঘোলের শরবতঃ ঘোলের শরবতটিও আপনার বাচ্চা আমাশয় সারাতে বেশ কার্যকারী। এক গ্লাস ঘোলের মধ্যে এক চিমটি বিট লবণ, সামান্য গোলমরিচের গুঁড়ো, সামান্য জিরের গুঁড়ো মিশিয়ে নিয়ে এই শরবত বানিয়ে ফেলুন। সারাদিনে দুইবার করে অন্য খাবার খাওয়ার পর এই শরবত খাওয়াতে পারেন।
উপরে উল্লেখিত যে সকল ঘরোয়া চিকিৎসার কথা আমরা এতক্ষন আপনার সামনে
আলোচনা করলাম। এগুলো আপনার বাচ্চাকে খাওয়ানোর আগে অবশ্যই আপনি
একটি অভিজ্ঞ চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ করে নিবেন। যাতে করে কোন
ধরনের সমস্যা না হয় আপনার বাচ্চার। আশা করি আপনি এতক্ষণে
বিষয়গুলো বুঝতে পেরেছেন।
বাচ্চাদের আমাশয় ঔষধ নাম
বাচ্চাদের আমাশয় ঔষধ নাম সম্পর্কে অনেকেই ইন্টারনেটে সার্চ দিয়ে
থাকে। মূলত তাদের উদ্দেশ্যেই এখন আমরা জানাবো বাচ্চাদের আমাশয় ঔষধের
নাম। এখন আমরা আপনাদেরকে বাচ্চাদের আমাশয়ের যেই ওষুধগুলোর কথা জানাবো
সেগুলো আমাদের দেশে সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয়। তাহলে চলুন বন্ধুরা জেনে
নেওয়া যাক আপনাদের বাচ্চাদের আমাশয় ঔষধ গুলো।
বাচ্চাদের আমাশয় ঔষধ নাম
- Ciprocin 250 Syrup
- Filmet 60 ml Syrup
- Amodis Syrup
- zox Syrup
তবে এই ওষুধগুলো আপনার বাচ্চাকে খাওয়ানোর আগে অবশ্যই আপনি চিকিৎসকের
কাছ থেকে পরামর্শ নিয়ে নিবেন।
বাচ্চাদের আমাশয় সিরাপ
বাচ্চাদের জন্য মূলত কয়েকটি সিরাপ ব্যবহার করা হয়। তার মধ্য থেকে
একটি হলো ফিলমেট। এই ফিলমেট সিরাপটি বাচ্চাদের কিংবা শিশুদের আমাশয়ের
ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়। এই ফিলমেট ছাড়াও আরো দুইটি ভালো সিরাপ
রয়েছে। নিচে বাচ্চাদের আমাশয়ের সবগুলো সিরাপের নামে উল্লেখ করা
হলোঃ
- ফিলমেট সিরাপ
- মেট্রো সিরাপ
- জিংক সিরাপ
আপনার শিশু বাচ্চাকে এই সিরাপ গুলো খাওয়ানোর পূর্বে অবশ্যই চিকিৎসকের
পরামর্শ নিবেন।
শেষ কথাঃ বাচ্চাদের আমাশয় হলে কি খাওয়া উচিত
বাচ্চাদের আমাশয় হলে কি খাওয়া উচিত এবং বাচ্চাদের আমাশয়ের কারণ
সম্পর্কে নিশ্চয় আপনি এই আর্টিকেলের মাধ্যমে জেনে গেছেন। আমরা এ
আর্টিকেলের মাধ্যমে আপনার সুবিধার্থে বিস্তারিতভাবে বাচ্চাদের আমাশয়
হলে কি খাওয়া উচিত এবং বাচ্চাদের আমাশয়ের কারণ গুলো আলোচনা করেছি।
তারপরও যদি আপনার কথা বুঝতে সমস্যা হয়ে থাকে বা সমস্যা হয় তাহলে
অবশ্যই আমাদেরকে কমেন্টে জানাবেন আমরা আপনাকে সাথে সাথে বুঝিয়ে
দেওয়ার চেষ্টা করব।
আরো পড়ুনঃ শিশুদের কত ঘন্টা ঘুমানো উচিত
প্রিয় বন্ধুরা, এতক্ষণ আমাদের সাথে থাকার জন্য আপনাদেরকে অনেক অনেক
ধন্যবাদ। এই আর্টিকেলটি যদি আপনাদের কাছে তথ্যবহুল মনে হয় তাহলে
অবশ্যই আপনি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে ভুলবেন না, যেন আপনার
বন্ধুরাও জেনে নিতে পারে বাচ্চাদের আমাশয় হলে কি খাওয়া উচিত এবং
বাচ্চাদের আমাশয়ের কারণ গুলো সম্পর্কে। এরকম অজানা তথ্য জানতে আমাদের
ওয়েবসাইটে নিয়মিত ভিজিট বা ফোলো করুন। কারণ আমরা এই ওয়েবসাইটে
নিয়মিত নতুন নতুন তথ্য সংগ্রহ করে বিভিন্ন ধরনের ব্লগ পোস্ট বা
আর্টিকেল আপলোড করি। আসসালামু আলাইকুম।
সাগর ম্যাক্স এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url