রমজানের ফজিলত সম্পর্কে ১০ হাদিস

সিগারেট খেলে কি ৪০ দিন ইবাদত হয় নাআসসালামু আলাইকুম, রমজানের ফজিলত সম্পর্কে হাদিস নিশ্চয়ই আপনি জানতে চাচ্ছেন? তাই আমরা এখন রমজানের ফজিলত সম্পর্কে হাদিস আপনার সামনে তুলে ধরব। রমজানের ফজিলত সম্পর্কে হাদিস জানতে অবশ্যই আপনাকে সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়তে হবে।
রমজানের-ফজিলত-সম্পর্কে-হাদিস
আমরা মুসলমান ব্যক্তি, আল্লাহ তায়ালা আমাদের জন্য রোজা ফরজ করেছেন। তাই রোজার গুরুত্ব আমাদের কাছে অনেক বেশি। এবং রমজানের ফজিলত সম্পর্কে হাদিস আমাদের জেনে রাখা উচিত। তাহলে চলুন জেনে আসি রমজানের ফজিলত সম্পর্কে হাদিস গুলো।

পোস্ট সূচীপত্রঃ রমজানের ফজিলত সম্পর্কে ১০ হাদিস

ভূমিকাঃ রমজানের ফজিলত সম্পর্কে ১০ হাদিস

রমজান মাস রহমত ও বরকতের মাস। হিজরী সনের সেরা মাস হল রমজান। এ মাসের সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত হল রোজা। আল্লাহর অত্যন্ত প্রিয় ইবাদত রোজা। এর প্রতিদান আল্লাহতালা তার নিজের হাতেই দিবেন। রোজার ফজিলত সম্পর্কে অসংখ্য হাদিস বর্ণিত রয়েছে। তাই আমরা আজকের আর্টিকেলে আপনাদের সাথে শেয়ার করতে চলেছি রমজানের ফজিলত সম্পর্কে ১০ হাদিস। রমজানের ফজিলত সম্পর্কে এই হাদিসগুলো পড়ে রমজান মাসের গুরুত্ব সম্পর্কে আরো অনেক বিষয় জানতে পারবেন। তাহলে চলুন আমরা পড়ে নিই রমজানের ফজিলত সম্পর্কে হাদিস গুলো।

রমজানের ফজিলত সম্পর্কে হাদিস ১

হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) বর্ণনা করেন, হাদিসে কুদসিতে মহানবী (সাঃ) এরশাদ করেন, আল্লাহ তাআলা বলেন, আদম সন্তানের প্রত্যেক আমল তার নিজের জন্য "রোজা ব্যতীত"। কারণ, রোজা আমার জন্যই এবং আমি তার প্রতিদান নিজেই দেব। মহানবী (সাঃ) আরো বলেছেন, রোজা ঢাল স্বরূপ।সিয়াম পালনের দিন যেন তোমাদের কেউ অশ্লীলতায় লিপ্ত না হয় ও ঝগড়া-বিবাদ না করে। যদি কেউ তাকে গালি দেয়, তার সাথে ঝগড়া করে, তবে সে যেন বলে, আমি একজন রোজাদার। মোহাম্মদের প্রাণ যার হাতে তার শপথ! রোজাদারের মুখের গন্ধ অবশ্যই আল্লাহর কাছে মেশকের সুগন্ধের চাইতেও সুগন্ধময়। রোজাদারের জন্য দুইটি খুশির মুহূর্ত রয়েছে যা তাকে আনন্দিত করে। যখন সে ইফতার করে, সে খুশি হয় এবং যখন সে তার সৃষ্টিকর্তার সাথে সাক্ষাৎ করবে, তখন রোজার বিনিময়ে সে অনেক আনন্দিত হবে। (বুখারি, হাদিসঃ ১৯০৪)

রমজানের ফজিলত সম্পর্কে হাদিস ২

হজরত সাহল ইবনে সাআদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এরশাদ করেন, জান্নাতের এক প্রবেশদ্বার রয়েছে, যার নাম রাইয়ান। কিয়ামতের দিন রোজাদারগণ ওই প্রবেশদ্বার দিয়ে প্রবেশ করবে। তারা ছাড়া ওই দরজা দিয়ে আর কেউই প্রবেশ করবেনা। কিয়ামতের দিন বলা হবে, কোথায় রোজাদারগণ? অর্থাৎ তারা ওই দরজা দিয়ে জান্নাতে প্রবেশ করবে। তারপর যখন তাদের সর্বশেষ ব্যক্তি প্রবেশ করবে, তখন সেই দরজা বন্ধ করা হবে। ফলে তা দিয়ে আর কেউই প্রবেশ করতে পারবেনা। (বুখারি, হাদিসঃ ১৮৯৬)

রমজানের ফজিলত সম্পর্কে হাদিস ৩

হযরত হুজায়ফা (রাঃ) বলেন, আমি মহানবী (সাঃ)-কে বলতে শুনেছি, মানুষের পরিবার, ধন-সম্পদ ও প্রতিবেশীর ব্যাপারে ঘটিত বিভিন্ন ফেতনা এবং গুনাহর কাফফারা হল নামাজ, রোজা ও সদকা। (বুখারি, হাদিসঃ ১৮৯৫)

রমজানের ফজিলত সম্পর্কে হাদিস ৪

হযরত আবু সাইদ (রাঃ) বর্ণনা করেন, মহানবী (সাঃ) বলেন, যে বান্দা আল্লাহর পথে একদিন মাত্র রোজা রাখবে, সেই বান্দাকে আল্লাহ বিনিময়ে জাহান্নাম থেকে ৭০ বছরের পথ পরিমাণ দূরত্বে রাখবেন। (বুখারি, হাদিসঃ ২৮৪০)

রমজানের ফজিলত সম্পর্কে হাদিস ৫

হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এরশাদ করেন, যে ব্যক্তি ঈমান ও ইহতিসাবসহ রমজান মাসের সিয়াম পালন করবে, তার পূর্ববর্তী ও পরবর্তী গুনাহ মাফ করে দেওয়া হবে। (সহীহ বুখারীঃ ৩৮, সহীহ মুসলিমঃ ৭৬০)

রমজানের ফজিলত সম্পর্কে হাদিস ৬

হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এরশাদ করেন, তোমাদের নিকট রমজান মাস উপস্থিত। এটা এক অত্যন্ত বারাকতময় মাস। আল্লাহতালা এ মাসে তোমাদের প্রতি রোজা ফরজ করেছেন। এ মাসে আকাশের দরজাসমূহ উন্মুক্ত হয়ে যায়, এ মাসে বড় বড় শাইতানগুলোকে আটক রাখা হয়। আল্লাহর জন্যে এ মাসে একটি রাত আছে, যা হাজার মাসের চেয়েও অনেক উত্তম। যে লোক "এই রাত্রির মহাকল্যাণলাভ হতে বঞ্চিত থাকলো", "সে সত্যিই বঞ্চিত ব্যক্তি"। (সুনানুন নাসায়ীঃ ২১০৬)

রমজানের ফজিলত সম্পর্কে হাদিস ৭

হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এরশাদ করেন, "কিয়ামতের দিন রোজা ও কোরআন বান্দার জন্য সুপারিশ করবে"। রোজা বলবে, "হে আমার প্রতিপালক, আমি তাকে পানাহার ও যৌনকর্ম থেকে বিরত রেখেছিলাম"। তার ব্যাপারে আমার সুপারিশ আপনি গ্রহণ করুন। কোরআন বলবে, "আমি তাকে রাতের ঘুম থেকে বিরত রেখেছিলাম"। তার ব্যাপারে আমার সুপারিশ আপনি গ্রহণ করুন। মহানবী (সাঃ) আরো বলেন, " অতঃপর উভয়ের সুপারিশ গৃহীত হবে"। (মুসনাদে আহমাদ, সহিহ্ তারগিব, হাদিসঃ ৯৬৯)

রমজানের ফজিলত সম্পর্কে হাদিস ৮

হযরত হুজায়ফা (রাঃ) বর্ণনা করেন, মহানবী (সাঃ) আমার বুকে হেলান দিয়ে ছিলেন। তখন তিনি বললেন, "লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ" বলার পর যে ব্যক্তির জীবনের পরিসমাপ্তি ঘটবে, সে ব্যক্তি জান্নাতে প্রবেশ করবে। আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে একদিন রোজা রাখার পর যে ব্যক্তির জীবনের পরিসমাপ্তি ঘটবে, সে ব্যক্তি জান্নাতে প্রবেশ করবে। আর আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের আশায় কিছু সদকা করার পর যে ব্যক্তির জীবনের পরিসমাপ্তি ঘটবে, সে ব্যক্তিও জান্নাতে প্রবেশ করবে। (মুসনাদে আহমাদ, সহিহ্ তারগিব, হাদিসঃ ৯৭২)

রমজানের ফজিলত সম্পর্কে হাদিস ৯

হযরত আবু উমামা (রাঃ) বর্ণনা করেছেন, আমি বললাম, "হে আল্লাহর রাসূল" আমাকে এমন কোনো আমলের আজ্ঞা করুন, "যার বিনিময়ে আল্লাহ আমাকে লাভবান করবেন"। (অন্য একটি বর্ণনায় আছে, "যার মাধ্যমে আমি জান্নাত যেতে পারবো") তিনি বললেন, তুমি রোজা রাখো। কারণ, এর সমতুল্য কিছুই নেই। পুনরায় আমি বললাম, "হে আল্লাহর রাসূল" আমাকে কোনো আমলের আদেশ করুন। তিনি পুনরায় একই কথা বললেন, "তুমি রোজা রাখো"। কেননা, "এর সমতুল্য কিছু নেই"। (নাসায়ি, সহিহ তারগিব, হাদিসঃ ৯৭৩)

রমজানের ফজিলত সম্পর্কে হাদিস ১০

হযরত উসমান বিন আবুল আস থেকে বর্ণিত, মহানবী (সাঃ) এরশাদ করেন, রোজা জাহান্নাম থেকে বাঁচার জন্য ঢাল স্বরূপ। যেমনঃ যুদ্ধের সময় নিজেকে রক্ষা করার জন্য তোমাদের ঢাল থাকে। (মুসনাদে আহমাদ, সহিহুল জামিউস সাগির, হাদিসঃ ৩৮৭৯)

লেখকের মন্তব্যঃ রমজানের ফজিলত সম্পর্কে ১০ হাদিস

রমজানের ফজিলত সম্পর্কে হাদিস এতক্ষণ আপনাদের সাথে শেয়ার করেছি। রমজানের ফজিলত সম্পর্কে এই হাদিসগুলো পড়ে আপনারা নিশ্চয়ই ইতিমধ্যে বুঝতে পেরেছেন রমজান মাসের গুরুত্ব কত। রমজানের ফজিলত সম্পর্কে অসংখ্য হাদিস রয়েছে, তার মধ্য থেকে আমরা এখানে সামান্য কিছু রমজানের ফজিলত সম্পর্কে হাদিস তুলে ধরেছি। রমজানের ফজিলত সম্পর্কে হাদিস গুলো অবশ্যই আপনাদের বন্ধুদের সাথে শেয়ার করবেন। তারাও যেন আপনাদের মাধ্যমে রমজানের ফজিলত সম্পর্কে হাদিস গুলো জানতে পারেন। এতক্ষণ আমাদের সাথে থাকার জন্য আপনাদেরকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আসসালামু আলাইকুম।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

সাগর ম্যাক্স এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url