অধ্যবসায় রচনা ২০ পয়েন্ট JSC SSC HSC
ডিজিটাল বাংলাদেশ রচনাঅধ্যবসায় অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটি রচনা। অধ্যবসায় রচনাটি পরীক্ষায় আসার সম্ভাবনা অনেক বেশি। অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ রচনা রয়েছে, তার মধ্য থেকে অধ্যবসায় অন্যতম। সেজন্য আমরা শিক্ষার্থীদের জন্য অধ্যবসায় রচনা ২০ পয়েন্ট এ আর্টিকেলে তুলে ধরেছি। অধ্যবসায় রচনা ২০ পয়েন্ট সমূহ অনেক গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট যা আপনার পরীক্ষায় ভালো মার্ক পেতে বিশেষভাবে সহযোগিতা করবে।
প্রিয় শিক্ষার্থীবৃন্দ, আপনারা যদি অধ্যবসায় রচনা ২০ পয়েন্ট পরীক্ষার খাতায় লিখে ভালো মার্ক পেতে চান, তাহলে অবশ্যই আমাদের এই আর্টিকেলে উল্লেখ করা অধ্যাবসায় রচনা ২০ পয়েন্ট এর সবগুলোই সুন্দর ভাবে মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
পোস্ট সূচিপত্রঃ অধ্যবসায় রচনা ২০ পয়েন্ট JSC SSC HSC
- ভূমিকা
- অধ্যাবসায় কি
- অধ্যাবসায় প্রয়োজনীয়তা
- অধ্যাবসায় বৈশিষ্ট্য
- অধ্যাবসায়ের গুরুত্ব
- ব্যক্তিজীবনে অধ্যবসায়
- ছাত্র জীবনের অধ্যবসায়
- মানব জীবনে অধ্যবসায়
- মনীষীদের জীবনে অধ্যবসায়
- জাতীয় জীবনে অধ্যবসায়
- বিজ্ঞানে অধ্যবসায়
- অধ্যবসায়ের মূল্য
- অধ্যবসায় ও প্রতিভা
- অধ্যবসায় সাফল্যের চাবিকাঠি
- অধ্যাবসায়ের চর্চা
- অধ্যবসায়হীন মানুষের পরিণাম
- অধ্যবসায় ও সফলতা
- অধ্যবসায় ও আত্মবিশ্বাস
- অধ্যবসায়ের শিক্ষা
- উপসংহার
ভূমিকা
প্রতিটা মানুষই চায় সফল হতে। মানব জীবনে সফলতা অর্জনের দৃঢ় প্রচেষ্টার নামই হল অধ্যবসায়। মানব জীবনের সফলতা অতটা সহজ নয়। আমরা সবাই সফলতা পেতে চাই কিন্তু সফলতা অর্জন করতে চাইলে জীবনে কিছু ব্যর্থতা আসবেই। সকল ব্যর্থতাকে কাজে লাগিয়ে শেষ পর্যন্ত টিকে থাকে, সেই হয়ে ওঠে সফলকামি।
আমাদের সকলের জীবনে কিছু আলাদা আলাদা লক্ষ্য রয়েছে। মানুষ লক্ষ্য খাওয়ার জন্য সময় শ্রম সবকিছুই বিলিয়ে, কিন্তু অনেক প্রচেষ্টার পরেও যদি সে তার গন্তব্যে নাও পৌঁছাতে পারে এবং শেষ সময় এসে হাল ছেড়ে দেয়, তবে এটি অধ্যবসায় নয়। সহজ ভাষায় বলতে গেলে মানব জীবনের লক্ষ্য অর্জনের জন্য সকল ব্যর্থতা পেরিয়ে দীর্ঘ প্রচেষ্টা ও ধৈর্যসাধনের নামি হল অধ্যবসায়।
অধ্যাবসায় কি
অধ্যবসায় বলতেন অবিরাম প্রচেষ্টাকে বোঝায়। একটি ব্যক্তি যদি তার লক্ষ্যে কিংবা গন্তব্যে পৌঁছানোর জন্য অবিরাম প্রচেষ্টায় অব্যাহত থাকে তাহলে বুঝবেন তার মাঝে অধ্যবসায় রয়েছে। জীবনে কেউ যদি ভালো কিছু পেতে চায় তাহলে তা কখনো সহজে পাওয়া যায় না। সেজন্য অধ্যবসায় খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
যে যতটা বেশি ধৈর্যধারণ করে লক্ষ্যের দিকে টিকে থাকে, সে ততটাই বেশি সফলতার দিকে এগিয়ে যায়। অধ্যবসায় হল মানসিক বল। সফলতার পথে যতই বাধা-বিপত্তি আসুক না কেন, একজন অধ্যবসায়ী সমস্ত বাধা-বিপত্তি পার করতে সক্ষম। যার মাঝে মানসিক বল যত বেশি রয়েছে সে ততই বেশি অধ্যবসায়ী।
কবি, কালীপ্রসন্ন ঘোষ বলেছেন,
পারিব না এ কথাটি বলিও না আর,
একবার না পারলে দেখো শতবার।
অধ্যাবসায় প্রয়োজনীয়তা
মানব জীবনে সফলতা অর্জনের জন্য অধ্যবসায়ের প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম। অধ্যাবসায় ছাড়া মানবজীবনে সফলতা অর্জন করা সম্ভব নয়। কারণ সফলতার চাবিকাঠি হল অধ্যবসায়। সারা বিশ্বের মহৎ, কল্যাণকর ও সুন্দর জিনিস গুলো অধ্যবসায়ের দ্বারা অর্জিত। জীবনে চলার ক্ষেত্রে অনেক ধরনের বাধা-বিপত্তি আসবে এটাই স্বাভাবিক।
কিন্তু যারা সকল বাধা-বিপত্তি পেরিয়ে তার লক্ষ্যকে অটুট রেখে এগিয়ে যায় তারাই হয়ে ওঠে সফলকামি। পুরো বিশ্বে যত বড় বড় ব্যক্তিবর্গ রয়েছে যেমনঃ বৈজ্ঞানিক, দার্শনিক, সাহিত্যিক ইত্যাদি সকলেরই সফলতার মূল কারণ হলো অধ্যবসায়। অধ্যাবসাকে কাজে লাগিয়েই মানুষ অনেক অসাধ্যকে সাধন করতে হয়েছেন।
অধ্যাবসায়ের বৈশিষ্ট্য
প্রত্যেকটা জীবন ফুল সজ্জা হয়। প্রতিটা জীবনে সাফল্য ব্যর্থতা থাকবে। এই দুইয়ে মিলে জীবন। অর্থাৎ সাফল্যের নিয়ামক পেতে হলে যেই গুণটি থাকতে হবে সেটি হল অধ্যবসায়। আবার জীবনে ব্যর্থতা আসতেই পারে, তাই বলে সাফল্যের স্বপ্নকে ঘুম পাড়িয়ে রেখে হাল ছেড়ে বসে থাকা চলবে না। দিনের পর যেমনি রাত নেমে আসে ঠিক তেমনি ভাবেই অনেক ব্যর্থতার পরেই সাফল্য আসবেই যদি অধ্যাবসায় থাকে। সেজন্যই তো কবি বলেছেন-
পারিব না এ কথাটি বলিও না আর,
পারো কি না পারো করো যতন আবার,
একবার না পারিলে দেখো শতবার
বারবার ব্যর্থতা আসার পরও সাফল্য লাভের আশায় চেষ্টা চালিয়ে যাওয়াই হল অধ্যবসায়। অধ্যবসায়-এর মধ্যে কিছু বৈশিষ্ট্য থাকা চাই আর সেগুলি হল উদ্দেশ্য নির্ধারণ, পরিকল্পনা, স্ব-বিশ্বাস, অভ্যাস, ধৈর্য, প্রচেষ্টা, নিষ্ঠা, আন্তরিকতা এবং সাফল্য লাভের উদ্যম আকাঙ্ক্ষা। এর সবকিছুর সমন্বয় হল অধ্যবসায়।
অধ্যাবসায়ের গুরুত্ব
"কবি কৃষ্ণচন্দ্র মজুমদার বলেছেন,
কেন প্রান্ত ক্ষান্ত হও, ভেরী দীর্ঘ পথ,
উদ্দাম বিহনে কার পুরো মনোরথ?"
সময়ের সাথে জীবন, জীবনের সঙ্গে জড়িয়ে আছে কর্ম। তাই কর্ম প্রচেষ্টাকে কাজে লাগিয়ে ভবিষ্যতে সফলতা অর্জনের জন্য অধ্যবসায় খুবই প্রয়োজন। অধ্যাবসায় হল মানব জীবন সফলতার লক্ষ্যে পৌঁছানোর প্রেরণা ও মূল চালিকাশক্তি। সফল হতে হলে ব্যর্থতা আসবেই তবে এটিই শেষ নয় ব্যর্থতা হল সফলতার প্রথম ধাপ। পৃথিবীতে ভালো কিছু অর্জন করা সাধনা ছাড়া মোটেও সম্ভব নয়। বিশ্বের মোহন ব্যক্তিদের একজন বিল গেটস বলেছেন-
জীবনে বড় ধাক্কা খাওয়া কিংবা বাজে পরিস্থিতির শিকার হওয়াও
সাফল্যের অন্যতম মূলমন্ত্র।
মানুষ অধ্যবসায় থাকলে অনেক অসাধ্য সাধন করতে পারে। যারা বারবার ব্যর্থতা হওয়ার পরেও বিরামহীন ধৈর্যের সঙ্গে তার লক্ষ্যে অব্যাহত থেকেছেন তারাই হচ্ছে প্রকৃতপক্ষে অধ্যবসায়ী। তাইতো মানব জীবনে অধ্যবসের গুরুত্ব অপরিসীম।
ব্যক্তি জীবনে অধ্যবসায়
জীবনে চলার পথে অনেক ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। এই সমস্যার সমাধানের উপায় হল অধ্যবসায়। সেসব ব্যক্তি কোন কিছুর প্রচেষ্টা ছাড়াই হাল ছেড়ে দেয়, যেসব ব্যক্তিরা অধ্যবসায়ী নয়। আর যেসব ব্যক্তি তার লক্ষ্য অর্জনে দীর্ঘ প্রচেষ্টা চালিয়ে যায় সেসব ব্যক্তিই হচ্ছে প্রকৃতপক্ষে অধ্যবসায়ী।
ছাত্র জীবনের অধ্যবসায়
ছাত্র জীবন ভবিষ্যৎ জীবন রচনা অনুশীলনের ক্ষেত্র। তাইতো অধ্যবসায় ছাত্র জীবনের সব ক্ষেত্রেই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। , অধ্যায়ন ও অধ্যাবসায়ের মধ্যে রয়েছে অবিচ্ছেদ্য সংযোগ। বারবার পাঠ অনুশীলনের মাধ্যমে প্রতিটা শিক্ষার্থীকে জ্ঞান আহরণ করতে হয়। ছাত্র জীবনে অধ্যবসাইকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিলে রচিত হবে জীবনের সাফল্যের বুনিয়াদ। কেবল মেধা কাজে লাগে না অধ্যাবসায় না থাকলে। অনেক মেধাবী শিক্ষার্থী যথেষ্ট প্রয়াসের অভাবে জীবনে সফলতা অর্জনে ব্যর্থ হয়।
মানব জীবনে অধ্যবসায়
বর্তমানে আমাদের এই আধুনিক যুগে সব আমাদের পূর্ব পুরুষদের অধ্যবসায়ের ফল। প্রাচীনকাল থেকে মানুষ গুহায় অথবা বন জঙ্গলে বাস করত তখন রাষ্ট্র, সমাজ, ভাষা বলতে কিছুই ছিল না। কিন্তু আস্তে আস্তে মানুষের দীর্ঘ প্রচেষ্টার পর মানব জীবনে উন্নতি ঘটেছে।
একটা সময় যা মানুষের স্বপ্ন ছিল তা বর্তমানে আমরা বাস্তব রূপে দেখছি। যুগ যুগ ধরেই মহামানবদের জ্ঞানের সমন্বয়ে এবং অধ্যবসয়ের কারণে বর্তমানে পুরো বিশ্ব আমাদের হাতের মুঠোয় হয়ে গেছে। মানব জীবনে উন্নতি এটি এত সহজ ছিল না, মানুষের অবিরাম প্রচেষ্টা এবং অধ্যাবসায়ের ফলে আমরা পেয়েছি একটি উন্নত জীবন।
মনীষীদের জীবনে অধ্যবসায়
এই জগতে যারা মানুষের শ্রদ্ধা এবং ভালবাসার আদর্শ হয়েছেন, তাদের প্রত্যেককেই ছিলেন অধ্যবসায়ী। মহাকবি ফেরদৌসীর অমর মহাকাব্য "শাহানামা" দীর্ঘ তিরিশ বছরের কাব্য প্রয়াস। জ্ঞানেন্দ্রমোহন দাস বিশ বছরের সাধনায় রচনা করেন "বাংলা ভাষার অভিধান"।
কোন প্রাতিষ্ঠানিক সহায়তা ছাড়াই একক প্রচেষ্টায় প্রায় দুই হাজার প্রাচীন পুঁথি সংগ্রহ করেন, খ্যাতনামা সংগ্রাহক আব্দুল করিম সাহিত্য বিশারদ। স্কটল্যান্ড এর রাজা রবার্ট ব্রুস পরপর ছয় বার ইংরেজদের সঙ্গে যুদ্ধে পরাজিত হয়েও হাল ছাড়েননি। তাইতো তিনি শেষ পর্যন্ত জয়ী হয়েছিলেন। বিশ্ব বিস্তৃত বিজ্ঞানী নিউটনের অনুষ্ঠ স্বীকৃতি। বিজ্ঞানে তার অবদানের মূলে রয়েছে বহু বছরের একনিষ্ঠ সাধনা এবং নিরবিচ্ছিন্ন পরিশ্রম।
জাতীয় জীবনে অধ্যবসায়
জাতীয় জীবনে অধ্যবসায় সামগ্রিকভাবে জাতির সগৌরব প্রতিষ্ঠার জন্যে সকল নাগরিকেরই অধ্যবসায়ী হওয়া প্রয়োজন। জাতীয় জীবনে অধ্যবসায় এর প্রতিষ্ঠা করতে হলে ব্যক্তি জীবনে তার অনুশীলন বিশেষ প্রয়োজন। এক দিক থেকে জাতির বৃহত্তর কল্যাণে অধ্যবসায়ী ব্যক্তির গুরুত্ব অনেক।
বিজ্ঞানে অধ্যবসায়
পৃথিবীর সকল ক্ষেত্রেই অধ্যাবসায়ের গুরুত্ব পরিচিত। এর মধ্যে বিজ্ঞান হল অন্যতম। প্রত্যেকটি বৈজ্ঞানিক আবিষ্কারের পেছনে লক্ষ্য করলেই অধ্যবসায়ের দৃষ্টান্ত লক্ষ্য করা যায়। বর্তমানে আমরা যেসব বৈজ্ঞানিক প্রযুক্তির ব্যবহার করছি এগুলো আবিষ্কার এতটাও সহজ ছিল না। বৈজ্ঞানিকদের আত্মবিশ্বাস, প্রচেষ্টা ও অধ্যবসায়ের ফলেই আজ সারা বিশ্বে এত উন্নত প্রযুক্তি হয়েছে। আমরা বিজ্ঞান থেকে অধ্যবসায়ের শিক্ষা নিতে পারি।
অধ্যবসায়ের মূল্য
মানব জীবনে অধ্যবসায়ের মূল্য অনেকখানি। মানুষের জীবনে যত বিপদ-বিপত্তি আসুক না কেন অধ্যাবসায়েরা সব সময় বিপদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে সক্ষম। উদাহরণস্বরূপ বলা যায় বাংলাদেশের প্রাকৃতিক দুর্যোগ যেমনঃ বন্যা, ভূমিধস, নদী ভাঙ্গন ইত্যাদি থেকে মানুষ আজ ভীতু না হয়ে এসবের মোকাবেলা করছে। মানুষের সাহসিকতা ও আত্মবিশ্বাস অধ্যাবসায়ের মূলমন্ত্র। দৃঢ় পরিশ্রম ও আত্মবিশ্বাস দাড়াই মানুষ আজ তাদের মধ্যে অধ্যবসায়কে টিকিয়ে রেখেছে।
অধ্যবসায় ও প্রতিভা
অনেকেই মনে করেন, প্রতি ভাই হলো সফলতার মূল নিয়ামক। এই ধারণা সম্পূর্ণ গ্রহণযোগ্য নয়।কারণ অধ্যবসায় ছাড়া সুপ্ত প্রতিভা বিকশিত কখনোই হয় না। প্রতিটা প্রতিভাবানদের জীবনেও আত্মপ্রতিষ্ঠা আসে অধ্যাবসায়ের কারণে।
অধ্যবসায় সাফল্যের চাবিকাঠি
অধ্যবসায় স্বপ্ন পূরণ ও সাফল্যের মূল চাবিকাঠি। উন্নত জীবন ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হলে অধ্যবসায়ের গুরুত্ব অপরিসীম। শিক্ষা জীবনে, ব্যাক্তি জীবনে, মানব সভ্যতায়, মনীষীদের জীবনে, বিজ্ঞানে ইত্যাদি ছাড়াও জাতীয় জীবনের উন্নতি এবং সফলতার পেছনে রয়েছে অধ্যবসায়। অধ্যবসায় ছাড়া কখনোই সাফল্য লাভ করা মোটেও সম্ভব নয়। তাইতো অধ্যাবসায় হল সাফল্যের মূল চাবিকাঠি।
অধ্যাবসায়ের চর্চা
প্রায় সব কিছুই চর্চার অধীনে। অধ্যাবসায় এমন এক ধরনের চর্চা, যার মাধ্যমে সকল বাধা-বিপত্তি সফলতা অর্জন করা যায়। কারো মধ্যে জন্ম থেকেই অধ্যাবসায় উপস্থিত থাকে না বরং অধ্যবসায় অর্জন করতে হয়। আমেরিকার সফল উদ্যোক্তা আর্নন্ড গ্লাসগো বলেছেন, সাফল্যের আগুন একা একা জলে না, এটা তোমাকে নিজ হাতে জ্বালাতে হয়। সেজন্য জীবনের সফল হতে হলে অধ্যবসায় চর্চা করা খুবই প্রয়োজন।
অধ্যবসায়হীন মানুষের পরিণাম
মানব জীবনে সফলতা পাওয়া এতটা সহজ নয়। কেননা অনেক মানুষ কোন কাজের শেষ পর্যন্ত গিয়েও অধ্যাবসায়ের অভাবে তাতে সফল হতে পারেনা। একটি মানুষের জীবনে যদি অধ্যবসায় না থাকে তবে সে কোন কিছুতেই সফল হতে পারবে না। কারণ প্রত্যেকটি সফলতার পেছনে থাকে দৃঢ় প্রচেষ্টা, ধৈর্য এবং পরিশ্রম। অধ্যবসায়ের অভাবে অনেক ব্যক্তি ব্যর্থ হন। অ্যাপেল কোম্পানির প্রতিষ্ঠাতা স্ট্রিভ জবস বলেছেন -
রাতারাতি সাফল্য বলতে কিছু নেই,
মনোযোগ দিলে বুঝবে সব সাফল্যই অনেক সময় নিয়ে আসে।
অধ্যবসায় ও সফলতা
যে ব্যক্তির জীবনে অধ্যাবসায় রয়েছে, সে ব্যক্তির জীবনে সফলতা নিশ্চিত। আজ পর্যন্ত পৃথিবীতে যত মহান ব্যক্তি এসেছেন তারা আমাদেরকে এমন কিছু দিয়ে গেছেন যার ফলে তারা পৃথিবীতে না থাকলেও তাদের কর্ম এবং মাহাত্ম্য আমাদের সবার কাছে ক্ষণস্থায়ী। সফলতার শীর্ষবিন্দুতে পৌঁছানো তখনই সম্ভব হবে যখন কারো মধ্যে অধ্যবসায় থাকবে। অধ্যবসায়ের মাধ্যমে যেকোনো কর্মে সফলতা নিশ্চিত।
অধ্যবসায় ও আত্মবিশ্বাস
প্রতিটা মানব জীবনে সফলতার আরেকটি অন্যতম উপাদান হলো আত্মবিশ্বাস। কেউ যদি নিজের প্রতি আত্মবিশ্বাস থাকে যে হ্যাঁ আমিই পারবো, তাহলে তার জীবনে কোন কিছুই করা অসম্ভব বলে মনে হবে না। সফল মানুষ তারাই যারা সকল বাধা-বিপত্তি পার করে আত্মবিশ্বাস রেখে সামনের দিকে এগিয়ে চলে। পৃথিবীর বড় বড় ব্যক্তিবর্গের সাফল্যের পিছনে আত্মবিশ্বাসের হাত রয়েছে।
যখন বিল গেটস কলেজ থেকে ড্রপ আউট করেছিলেন, তখন সকল শিক্ষকরা ভেবেছিলেন ছেলেটা গোল্লায় গেল। কিন্তু তিনি বর্তমানে বিশ্বের অন্যতম ধনী ব্যক্তিদের মধ্যে একজন। এবং তিনি আজ মাইক্রোসফট কোম্পানির প্রতিষ্ঠাতা।
অধ্যবসায়ের শিক্ষা
মানব জীবনে ব্যর্থতা আসবেনা এমনটা হওয়ার কোন সুযোগ নেই। ব্যর্থতা আসবেই এটাই স্বাভাবিক আর যারা ব্যর্থতার পরেও পেছনে না তাকিয়ে সাফল্যের উদ্দেশ্যে বিরূপ প্রচেষ্টা দ্বারা লক্ষ্যের দিকে অগ্রসর হতে পারে তারাই সফলতা অর্জন করে। পৃথিবীর উন্নত দেশগুলি এবং সফল ব্যক্তিদের লক্ষ্য করলে দেখা যায় প্রত্যেকের সফলতার পিছনে অধ্যবসায় এর হাত রয়েছে। দক্ষিণ আফ্রিকার বর্ণবাদ বিদ্রোহী আন্দোলনে বিপ্লবী নেলসন ম্যান্ডেলা বলেছেন -
বেঁচে থাকার সবচেয়ে বড় গৌরব কখনো না পড়ে থাকা নয়,
কিন্তু ততবারই আপনি পড়ে যান।
উপসংহার
ব্যক্তি জীবনে সাফল্য লাভ করে জাতিকে গৌরবান্বিত করার ক্ষেত্রে অধ্যাবসায় এর বিকল্প নেই। লক্ষ্যে পৌঁছানোর উদ্যমি নিরন্তর প্রচেষ্টা থাকলে, কোন প্রতিকূলতায় জাতিকে নিরস্ত করতে পারবে না। অধ্যাবসায়ী মানুষ ধৈর্য এবং অবিচলতার পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে একসময়-না-একসময় সাফল্য ছিনিয়ে আনবেই। তাইতো প্রতিটি সফল জীবন এক অর্থে অধ্যাবসায়েরই চালচিত্র। সেজন্য ছোটবেলা থেকেই প্রত্যেকের উচিত অধ্যবসায় গুণের অধিকারী হওয়ার।
আরো পড়ুনঃ সুন্দরবন রচনা
সাগর ম্যাক্স এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url