যাত্রাবাড়ী দর্শনীয় স্থান সমূহ
ঢাকার ১০টি দর্শনীয় স্থানযাত্রাবাড়ী দর্শনীয় স্থান - সম্পর্কে নিশ্চয়ই আপনি জানতে চাচ্ছেন? তাই
যাত্রাবাড়ী দর্শনীয় স্থান গুলো এখন আপনার সামনে তুলে ধরা হবে। যাত্রাবাড়ী
দর্শনীয় স্থান সম্পর্কে জানতে আপনাকে এই আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ মনোযোগ সহকারে
পড়তে হবে।
যাত্রাবাড়ী দর্শনীয় স্থান অনেকে জানতে চাই, মূলত তাদের উদ্দেশ্যেই আমরা এই
আর্টিকেলটি সাজিয়েছি। তাহলে চলুন বন্ধুরা জেনে নেওয়া যাক যাত্রাবাড়ী দর্শনীয়
স্থান খোলো।
পোস্ট সূচীপত্রঃ যাত্রাবাড়ী দর্শনীয় স্থান
যাত্রাবাড়ী দর্শনীয় স্থানঃ ভূমিকা
যাত্রাবাড়ী দর্শনীয় স্থান সম্পর্কে অনেকেই বিভিন্ন জায়গাতে খোঁজাখুঁজি করে।
থাকে তাই আমরা এই আবেগের এর মাধ্যমে তাদের উদ্দেশ্যে জানাবো যাত্রাবাড়ী
দর্শনীয় স্থান গুলো সম্পর্কে। তাই আপনারা যারা যাত্রাবাড়ী দর্শনীয় স্থান
সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন তারা এই আর্টিকেলটি সম্পন্ন মনোযোগ সহকারে পড়তে থাকুন।
আপনারা যদি এই আর্টিকেলটি প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত পড়েন তাহলে বিস্তারিত ভাবে
জানতে পারবেন যাত্রাবাড়ী দর্শনীয় স্থান গুলো। তাহলে চলুন বন্ধুরা আর কথা না
বাড়িয়ে বিস্তারিত ভাবে জেনে নেওয়ার চেষ্টা করবে যাত্রাবাড়ী দর্শনীয় স্থান
সম্পর্কে। আশা করছি এই আর্টিকেলটি আপনাদের অনেক উপকারে আসবে।
যাত্রাবাড়ী মেট্রো স্টেশনঃ যাত্রাবাড়ী দর্শনীয় স্থান
যাত্রাবাড়ী মেট্রো স্টেশনঃ ঢাকা মেট্রোপলিটন দ্রুতগামী গণপরিবহন ব্যবস্থার
একটি মেট্রো স্টেশন। ঢাকার পূর্বাঞ্চলে যাত্রাবাড়ী এলাকায় এটি অবস্থিত। এই
স্টেশনটি নিল রুট (পল্লীবী গুলশান-২) এর অংশ। ২০২৩ সালের ২৬ মে উদ্বোধন করা হয়
রাজবাড়ী মেট্রো স্টেশনটি। এই মেট্রো স্টেশনটির নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছিল ২০১৯
সালে। ঢাকার-মাওয়া মহাসড়কের পাশেই অবস্থিত যাত্রাবাড়ী মেট্রো স্টেশনটি।
এই স্টেশনটি যাত্রাবাড়ী বাস টার্মিনালের ঠিক পাশেই অবস্থিত। যাত্রাবাড়ি
মেট্রো স্টেশনে আছে একটি প্ল্যাটফর্ম, একটি যাত্রীদের প্রবেশদ্বার, একটি
যাত্রীদের প্রস্থানদ্বার, একটি লিফট, একটি এস্কেলেটর, একটি দোকান, একটি
রেস্টুরেন্ট, একটি টয়লেট, স্টেশনে যাওয়ার উপায়। স্থানীয়দের কাছে
যাত্রাবাড়ী মেট্রো স্টেশনটি "যাত্রাবাড়ী মেট্রো" নামেই পরিচিত।
যাত্রাবাড়ী শেখ রাসেল পার্কঃ যাত্রাবাড়ী দর্শনীয় স্থান
যাত্রাবাড়ী শেখ রাসেল পার্কঃ ঢাকা মহানগরের যাত্রাবাড়ী থানা এলাকায়
অবস্থিত একটি বিনোদন কেন্দ্র হল যাত্রাবাড়ী শেখ রাসেল পার্ক। ২০২১ সালের ৯ জুন
উদ্বোধন করা হয় এই পার্কটি। যাত্রাবাড়ী শেখ রাসেল পার্কটি প্রায় ১৮ একর জমির
উপর নির্মিত এবং এটিতে রয়েছে একটি শিশু পার্ক, একটি খেলার মাঠ, একটি পিকনিক
স্পট এবং একটি পাবলিক টয়লেট। বর্তমানে এই পার্কটিকে ঘিরে বেশ কয়েকটি স্ট্রিট
ফুডের দোকান গড়ে উঠেছে। যাত্রাবাড়ী চৌরাস্তায় পার্কটি অবস্থিত।
আরো পড়ুনঃ চট্টগ্রামের সেরা ১০টি দর্শনীয় স্থান
এই পার্কে প্রবেশের জন্য কোন ধরনের প্রবেশ মূল্য নেওয়া হয় না। পার্কটি
প্রতিদিন বিকাল ৪ঃ০০ থেকে রাত ১০ঃ০০ পর্যন্ত খোলা থাকে। পার্কের চারপাশে ঘিরে
রয়েছে সবুজ ঘাসের গালিচা। শিশু পার্কে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের খেলনা ও বিনোদন
ব্যবস্থা। পিকনিক স্পটে বসার ব্যবস্থাও রয়েছে। খেলার মাঠে ক্রিকেট, ফুটবল এবং
অন্যান্য খেলাধুলার ব্যবস্থা রয়েছে। ক্যাফেতে কফি, চা, কোমল পানীয় এবং
অন্যান্য খাবার পাওয়া যায়।
যাত্রাবাড়ী বাজার/বউ বাজারঃ যাত্রাবাড়ী দর্শনীয় স্থান
যাত্রাবাড়ী বাজার/বউ বাজারঃ ঢাকা শহরের একটি বিখ্যাত বাজার হল যাত্রাবাড়ী
বাজার/বউ বাজার। ঢাকা মহানগরের দক্ষিণ অঞ্চলে যাত্রাবাড়ী এলাকায় বাজারটি
অবস্থিত। বাজারটি প্রতিদিন সকাল থেকে রাত পর্যন্তোই খোলা থাকে। ১৯৫০ সালে
যাত্রাবাড়ী বাজারটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। স্থায়ী ব্যবসায়ীরা বাজারটি
প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নিয়েছিলেন। এই বাজারটি শুরুতে একটি ছোট বাজার। কিন্তু
সময়ের সাথে সাথেই বাজারটিও বড় হতে থাকে। যাত্রাবাড়ী বাজারে সকল ধরনের পণ্য
পাওয়া যায়।
বাজারটিতে শাকসবজি, ফলমূল, মাছ, মাংস, ডিম, চাল, ডাল, মসলা কাপড় এবং আসবাবপত্র
ইত্যাদিও পাওয়া যায়। এই বাজারটি রাজধানী ঢাকা শহরের একটি গুরুত্বপূর্ণ
অর্থনৈতিক কেন্দ্র। প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ কেনাকাটা করার জন্য আসেন এই
বাজারটিতে। স্থানীয় ব্যবসায়ীদের জন্য বাজারটি একটি গুরুত্বপূর্ণ আয়ের উৎসেও
বটে। বাজারটি ঢাকা-মাওয়া মহাসড়কের পাশেই অবস্থিত। যাত্রাবাড়ী এলাকায়
বাজারটি অবস্থিত।
যাত্রাবাড়ী ঈদগাহ মাঠঃ যাত্রাবাড়ী দর্শনীয় স্থান
যাত্রাবাড়ী ঈদগাহ মাঠঃ যাত্রাবাড়ী ঈদগাহ মাঠ হল ঢাকা মহানগর-এর একটি
গুরুত্বপূর্ণ ঈদগাহ মাঠ। ঢাকা মহানগরের পূর্বাঞ্চলে যাত্রাবাড়ী এলাকায় এটি
অবস্থিত। এই ঈদগাহ মাঠে প্রতি বছর হাজার হাজার মানুষ ঈদের নামাজ আদায় করে
থাকেন। ১৯৫৩ সালে প্রতিষ্ঠা করা হয় যাত্রাবাড়ী ঈদগাহ মাঠটি। স্থায়ী মুসলিম
সম্প্রদায়ের নেতারা এই ঈদগাহ মাঠটির প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নিয়েছিলেন। প্রথমে এই
ঈদগাহ মাঠটি একটি ছোট মাঠ ছিল। তবে পরবর্তীতে মাঠটি বড় ঈদগাহ মাঠে রূপান্তর
করা হয়।
প্রায় ১০ একর আয়তন যাত্রাবাড়ী ঈদগাহ মাঠটির। এই ঈদগাহ মাঠটি একটি সমতল
এলাকায় অবস্থিত যেখানে একটি বড় ঈদগাহ মঞ্চ আছে। প্রতিবছরই ঈদের নামাজ আদায়ের
জন্য ব্যবহৃত হয় যাত্রাবাড়ী ঈদগাহ মাঠটি। তাছাড়াও এই ঈদগাহ মাঠটি বিভিন্ন
ধরনের সামাজিক এবং ধর্মীয় অনুষ্ঠানের জন্যও ব্যবহৃত হয়ে থাকে। ঢাকা-মাওয়া
মহাসড়কের পাশেই অবস্থিত যাত্রাবাড়ী ঈদগাহ মাঠটি। যাত্রাবাড়ী ঈদগাহ মাঠটি
যাত্রাবাড়ী বাস টার্মিনাল থেকে মাত্র ৫০০ মিটার দূরেই অবস্থিত।
তামিরুল মিল্লাত কামিল মাদ্রাসা যাত্রাবাড়ীঃ যাত্রাবাড়ী দর্শনীয় স্থান
তামিরুল মিল্লাত কামিল মাদ্রাসা যাত্রাবাড়ীঃ ঢাকার যাত্রাবাড়ী এলাকায়
অবস্থিত একটি ধর্মীয় উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হল তামিরুল মিল্লাত কামিল
মাদ্রাসা যাত্রাবাড়ী। ১৯৬৩ সালের মাদ্রাসাতে প্রতিষ্ঠিত হয় এবং তা'মিরুন
মিল্লাত ট্রাস্ট দ্বারা পরিচালিত হয়ে থাকে। এই মাদ্রাসাটিতে দাখিল, আলিম,
ফাজিল ও কামিল (এম.এ) পর্যায় শিক্ষা প্রদান করা হয়ে থাকে। বর্তমানে
মাদ্রাসাটিতে প্রায় ১০ হাজার ছাত্রছাত্রী অধ্যায়নরত।
আরো পড়ুনঃ কুমিল্লার সেরা ১০টি দর্শনীয় স্থান
এই মাদ্রাসার শিক্ষক কর্মচারীদের সংখ্যা প্রায় ৩০০ মত। শিক্ষার মান এবং
সাফল্যের জন্য মাদ্রাসাটি বেশ সুপরিচিত। এই মাদ্রাসাটি বিগত বছর গুলিতে
বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের অধীনে অনুষ্ঠিত সকল পরীক্ষায় শীর্ষস্থান
অর্জন করেছে। মাদ্রাসাটির প্রধান লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হল শিক্ষার্থীদেরকে ইসলামি
শিক্ষা এবং সাধারণ শিক্ষায় শিক্ষিত করে যোগ্য নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলার।
চিশতিয়া সাইদিয়া দরবার শরীফঃ যাত্রাবাড়ী দর্শনীয় স্থান
চিশতিয়া সাইদিয়া দরবার শরীফঃ ঢাকার যাত্রাবাড়ী এলাকার অন্তর্গত শাহিদাবাদ
এলাকায় অবস্থিত চিশতিয়া সাইদিয়া দরবার শরীফ। এটি একটি ধর্মীয়
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও মসজিদ। এটি হুজুরের বাড়ি নামেই পরিচিত। বর্তমানে
মাদ্রাসাটিতে প্রায় ১০ হাজার ছাত্রছাত্রী অধ্যায়নরত। এই মসজিদের শিক্ষক
কর্মচারীর সংখ্যা প্রায় ৩০০ জনের মতো। মসজিদটি তার সৌন্দর্য এবং কারো কাজের
সাফল্যের জন্য বেশ পরিচিত।
প্রতিবছর মসজিদটিতে ওয়াজ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। তাছাড়াও ধর্মীয় অনুষ্ঠানগুলি
পালিত হয়ে থাকে। মাহফিলকে কেন্দ্র করে মসজিদের চারপাশে মেলা বসে। বিভিন্ন
ধরনের স্ট্রিট ফুডের দোকান, ফুচকার দোকান, খেলনা, ঝালমুড়ি এবং মিষ্টান্নেরও
দোকান বসে। তাছাড়া মেলায় পাওয়া যায় ছোটদের জন্য পুতুল, খেলনা, মোটর গাড়িসহ
আরো অনেক কিছু। এই মেলায় মেয়েদের আল্তা, পাউডার, স্নো, মেকআপ সামগ্রী, চুড়ি,
ফিতা, জামা, শাড়ি ইত্যাদি অনেক কিছুই পাওয়া যায়।
এখানে ওয়াজ মাহফিল উপলক্ষে খাবারের আয়োজন করা হয়ে থাকে। ওয়াজ করার জন্য
দেশের সব সুনামধন্য ব্যক্তিদের নিয়ে আসা হয়। এই ওয়াজ মাহফিলে দেশের
নেতাকর্মীসহ অনেক মানুষ সমগম হয়। মসজিদে পুরুষ ও মহিলাদের জন্য আলাদা আলাদা
নামাযের ব্যবস্থা রয়েছে। সকল বাচ্চাদের খেলার জন্য মসজিদের ভেতরে বড় প্রাঙ্গণ
রয়েছে। তাছাড়া এখানে লাশ গোসল করানোর ব্যবস্থাও রয়েছে।
গোলাপবাগ খেলার মাঠঃ যাত্রাবাড়ী দর্শনীয় স্থান
গোলাপবাগ খেলার মাঠঃ ঢাকার একটি বিখ্যাত ফুটবল মাঠ গোলাপবাগ মাঠ। বর্তমানে এটি
ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের অধীনে পরিচালিত হয়ে থাকে। এই গোলাপবাগ খেলার
মাঠটি ঢাকা ধলপুর এলাকায় অবস্থিত। ১৯৭০ সালের নির্মিত হয়েছিল গোলাপবাগ মাঠটি।
মাঠটি প্রায় ৩০ একর জমি জুড়ে বিস্তৃত। গোলাপবাগ খেলার মাঠটিতে রয়েছে একটি
প্রধান মাঠ, একটি প্রশিক্ষণ মাঠ, একটি গ্যালারী এবং একটি স্টেডিয়াম।
গোলাপবাগ মাঠ ঢাকার একটি বেশ জনপ্রিয় গন্তব্য। এই মাঠটি বিভিন্ন ধরনের খেলার
জন্য ব্যবহৃত হয়ে থাকে যার মধ্যে রয়েছে, ক্রিকেট, ফুটবল এবং ব্যাডমিন্টন।
এছাড়াও মাঠটি বিভিন্ন ধরনের অনুষ্ঠানেরও আয়োজন করা হয় যার মধ্যে রয়েছে
কনসার্ট, সমাবেশ এবং রাজনৈতিক সভা। ঢাকার একটি গুরুত্বপূর্ণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্র
গোলাপবাগ মাঠটি। এটি ঢাকা শহরের মানুষের জন্য একটি জনপ্রিয় বিনোদন কেন্দ্র।
যাত্রাবাড়ী দর্শনীয় স্থানঃ শেষ কথা
যাত্রাবাড়ী দর্শনীয় স্থান গুলো নিশ্চয়ই আপনারা ইতিমধ্যে জেনে গেছেন, কারণ
আজকের এই আর্টিকেলের সুন্দরভাবে আলোচনা করা হয়েছে যাত্রাবাড়ী দর্শনীয় স্থান।
তারপরও যদি আপনাদের কথা বুঝতে সমস্যা হয়, তবে অবশ্যই কমেন্টে জানাবেন আমরা
আপনাদেরকে সঙ্গে সঙ্গে বুঝিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করব।
আরো পড়ুনঃ বাংলাদেশের সেরা ১০টি দর্শনীয় স্থান
এই আর্টিকেলটি আপনার কাছে তথ্যবহুল মনে হলে আপনি অবশ্যই আপনার বন্ধুদের সাথে
শেয়ার করতে ভুলবেন না, কারণ আপনার মাধ্যমে আপনার বন্ধুরা জেনে নিতে পারবে
যাত্রাবাড়ী দর্শনীয় স্থান গুলো। এরকম নিত্য নতুন তথ্য পেতে আমাদের সাথেই
থাকুন। কারণ আমরা বিভিন্ন জায়গার দর্শনীয় স্থান সম্পর্কে লেখালেখি করে থাকি।
আসসালামু আলাইকুম।
সাগর ম্যাক্স এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url