সুন্দরবনের প্রাণী রচনা - সকল ক্লাস
সুন্দরবন রচনাসুন্দরবনের প্রাণী রচনা সম্পর্কে নিশ্চয় আপনি জানতে চাচ্ছেন? তাই আমরা
সুন্দরবনের প্রাণী রচনা আপনার সামনে তুলে ধরবো। সুন্দরবনের প্রাণী রচনা সম্পর্কে
জানতে এই আর্টিকেলটি সম্পন্ন পড়ুন। বিভিন্ন সময় অনেক পরীক্ষাতেই সুন্দরবনের
প্রাণী রচনা লিখতে হয়।
সেজন্য অনেক শিক্ষার্থীর গুগলে সার্চ দিয়ে থাকে সুন্দরবনের প্রাণী রচনা
সম্পর্কে। মূলত তাদের উদ্দেশ্যেই আমরা সুন্দরবনের প্রাণী রচনা তুলে ধরব। তাহলে
চলুন পড়ে নেওয়া যাক সুন্দরবনের প্রাণী রচনা।
পোস্ট সূচীপত্রঃ সুন্দরবনের প্রাণী রচনা - সকল ক্লাস
- ভূমিকা
- সুন্দরবনের অবস্থান
- সুন্দরবনের বাস্তুতন্ত্র কি
- সুন্দরবনের মোট কত শতাংশ বাংলাদেশ অংশে অবস্থিত
- সুন্দরবনের অপর নাম কি
- সুন্দরবনের কয়টি প্রাণী আছে
- সুন্দরবনের প্রাণী
- সুন্দরবনের রয়েল বেঙ্গল টাইগার
- সুন্দরবনের হরিণ
- সুন্দরবনের বানর
- সুন্দরবনের মৌমাছি
- সুন্দরবনের বিলুপ্ত প্রাণী
- সুন্দরবনের গণ্ডার
- সুন্দরবনের হাতি
- সুন্দরবনের বাঘ
- সুন্দরবনের তৃতীয় স্তরের খাদক কোনটি
- সুন্দরবনের উপর মানুষের প্রভাব
- সুন্দরবনে আমাদের দায়িত্ব
- উপসংহার
ভূমিকাঃ আমাদের জাতীয় বন হল সুন্দরবন। সারা পৃথিবীর আশ্চর্য স্থানের মধ্যে সুন্দরবন সবচেয়ে অন্যতম। আমাদের জাতীয় পশু রয়েল বেঙ্গল টাইগার সুন্দরবনের প্রাণী। সুন্দরবনে অনেক আগে প্রচুর হাতীয় দেখা যেত, তবে বর্তমানে সুন্দরবনে এখন আর হাতি দেখা যায় না।
সুন্দরবনের অবস্থানঃ বাংলাদেশের সাতক্ষীরা জেলার অধিকাংশ এবং ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কিছু অংশজুড়ে সুন্দরবনের অবস্থান। আর সুন্দরবনের দক্ষিণে রয়েছে বঙ্গোপসাগর।
সুন্দরবনের বাস্তুতন্ত্র কিঃ সুন্দরবন সারা পৃথিবীর বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ ইকোসিস্টেম। প্রভাবশালী ম্যানগ্রোভ গাছের প্রজাতির নাম অনুসারে, হেরিটিযরা ফোমস, যেটি বাংলায় সুন্দ্রি নামে বিশেষভাবে পরিচিত, সুন্দরবনের আক্ষরিক অর্থ বাংলায় "সুন্দর বন"।
সুন্দরবনের মোট কত শতাংশ বাংলাদেশ অংশে অবস্থিতঃ সুন্দরবন বাংলাদেশের খুলনা, সাতক্ষীরা ও বাগেরহাট এবং পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলা জুড়ে অবস্থিত। সুন্দরবনের মোট আয়তন ১০ হাজার বর্গকিলোমিটার যার মধ্যে বাংলাদেশ অংশে পড়েছে ৬ হাজার ০১৭ বর্গকিলোমিটার সুতরাং শতকরা তা ৬০%-এর একটু বেশি।
সুন্দরবনের অপর নাম কিঃ সুন্দরবন স্থায়ীভাবে বাদা অথবা বাদাবন, হুলোবন, শুলোবন, মাল এবং মহাল হিসেবে পরিচিত। বাধা মানে জোয়ার ভাটা বয়ে যায় যে বোন দিয়ে। ব্রিটিশ ওপনিবেশের সময়ে এই বাদার নাম হয়ে যায় মহাল, মধুমহল, গোলমাহাল।
সুন্দরবনের কয়টি প্রাণী আছেঃ সুন্দরবনে ৬৯৩ প্রজাতির বন্যপ্রাণীসহ প্রাণী জগতের সমৃদ্ধ। যার মধ্যে রয়েছে ৪৯টি স্তন্যপায়ী প্রাণী, ৫৯টি সরীসৃপ, আটটি উভচর, ২১০টি সাদা মাছ, ২৪টি চিংড়ি, ১৪টি কাকড়া, এবং ৪৩টি মলাস্ক প্রজাতি রয়েছে।
সুন্দরবনের প্রাণীঃ সুন্দরবনের বিভিন্ন প্রজাতির প্রাণে রয়েছে। যার মধ্যে জলে রয়েছে কুমির, হাঙ্গর প্রভৃতি। স্থলে রয়েছে রয়েল বেঙ্গল টাইগার, হরিণ, বানর, শেয়াল, শজারু, বিভিন্ন ধরনের পাখি, মৌমাছি এবং বন মোরগ ইত্যাদি।
সুন্দরবনের রয়েল বেঙ্গল টাইগারঃ পৃথিবীর কোন কোন প্রাণীর সাথে জড়িয়ে থাকে দেশের নাম অথবা জায়গার নাম। রয়েল বেঙ্গল টাইগার নামটি পৃথিবীতে সকলেই জানে যে এই টাইগার বেঙ্গলে সুতরাং একমাত্র বাংলাদেশে দেখা যায়।
সুন্দরবনের হরিণঃ সুন্দরবনের হরিণ উল্লেখযোগ্য প্রাণী গুলির মধ্যে অন্যতম। সুন্দরবনের এ প্রাণী তৃণভোজি। সুন্দরবনের রয়েল বেঙ্গল টাইগার এর প্রিয় খাদ্য হরিণ।
সুন্দরবনের বানরঃ সুন্দরবনের প্রচুর পরিমাণে বানর রয়েছে। সুন্দরবনের বানরগুলো হরিণের বন্ধু হিসেবে পরিচিত। সুন্দরবনের হরিণকে যখন বাঘ অথবা রয়েল বেঙ্গল টাইগার ধাওয়া করতে আসে, তখনই বানর গাছ থেকে চেঁচামেচি করার মাধ্যমে হরিণকে আগে থেকেই সতর্ক করে দেয়।
সুন্দরবনের মৌমাছিঃ সুন্দরবনে প্রচুর পরিমাণে মৌচাক রয়েছে। আর মৌয়ালরা মধু সংগ্রহ ও বিক্রি করার মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহ করে থাকেন।
সুন্দরবনের বিলুপ্ত প্রাণীঃ সুন্দরবন বিখ্যাত বিভিন্ন ধরনের প্রাণীর জন্য। কিন্তু শিকারীদের অত্যাচার, প্রাকৃতিক বিপর্যয় এবং রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে সুন্দরবনের প্রাণীগুলো আজ প্রায় বিলুপ্ত। এই প্রাণীগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল গণ্ডার, হাতি ও বাঘ।
সুন্দরবনের গণ্ডারঃ সুন্দরবনের গণ্ডারের মাথায় লোম দ্বারা আবৃত একটি শিং থাকে। সুন্দরবনের গণ্ডার ৩০ থেকে ৪০ মাইল বেগে ছুটতে পারে। একটি সময় সুন্দরবনে প্রচুর পরিমাণে গণ্ডার দেখা যেত, তবে বর্তমান সময়ে সুন্দরবনে সম্পূর্ণভাবে এই প্রাণীটি বিলুপ্ত।
সুন্দরবনের হাতিঃ সুন্দরবনের হাতি খুবই পরিচিত প্রাণী। সুন্দরবনে একটা সময় অনেক হাতি দেখা যেত, তবে বর্তমানে সুন্দরবনে এখন একটিও হাতে দেখা যায় না। বর্তমানে শুধু পার্বত্য চট্টগ্রামের হাতির দেখা মিলে।
সুন্দরবনের বাঘঃ সুন্দরবনে একটা সময় চিতাবাঘ, ওলবাগ নামে আরো কিছু বাঘ দেখা যেত। তবে বর্তমান সময়ে সুন্দরবনে এই প্রাণীগুলো আর দেখা যায় না।
সুন্দরবনের তৃতীয় স্তরের খাদক কোনটিঃ সুন্দর বনের তৃতীয় স্তরের খাদক হল শুকুর, হরিণ, বানর ও মুরগি।
সুন্দরবনের উপর মানুষের প্রভাবঃ সুন্দরবনের প্রচুর পরিমাণে তেল ছড়িয়ে পড়েছে। প্রতিদিন সুন্দরবনের নদী দিয়ে যাওয়া পণ্যবাহী জাহাজ থেকে শব্দ দূষণ এবং আলো দূষণ প্রাণীদের রুটিনকে ব্যাহত করে থাকে এবং প্রাণীদের আত্মগোপনে অনেক ভীত করে। তেলের ছিটা এবং বিলজ জলের নিষ্পত্তি সেই জলকে দূষিত করে ফেলে যেটি সামুদ্রিক জীবন বেঁচে থাকার জন্য নির্ভর করে।
সুন্দরবনে আমাদের দায়িত্বঃ বিভিন্ন প্রাণী বিদরা বলেছেন, সকল প্রাণী সুন্দরবনের জন্য প্রয়োজন। বাঘ, গন্ডার, হাতি এবং অন্যান্য প্রজাতির প্রাণী সুন্দরবন থেকে বিলুপ্ত হওয়ার কারণে এখন তারা অনেক চিন্তিত। এই ব্যাপারে পরিবেশ বিজ্ঞানীদের অবশ্যই সতর্ক হতে হবে এবং আমাদের সরকারকে বিশেষ উদ্যোগ নিতে হবে।
উপসংহারঃ আমাদের সুন্দরবনের বিশ্বময় কর জীব জন্তু ক্রমান্বয়ে বিলীন হয়েই চলেছে। আমাদের থেকে যদি প্রাণী জগৎ বিলুপ্ত হয়ে যায় তাহলে প্রাকৃতিক ভারসাম্য অনেকটাই নষ্ট হয়ে যাবে। সেজন্য আমাদের সবার দায়িত্ব এদের বাঁচিয়ে রাখার।
সাগর ম্যাক্স এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url