গ্রাম্য মেলা অনুচ্ছেদ - সকল ক্লাস
বৈশাখী মেলা অনুচ্ছেদগ্রাম্য মেলা অনুচ্ছেদ নিশ্চয়ই আপনি অনেক খোঁজাখুঁজি করছেন। তাই আমরা আপনার সামনে এখন গ্রাম্য মেলা অনুচ্ছেদ তুলে ধরবো। এই আর্টিকেলটি সম্পন্ন পড়ার মাধ্যমে গ্রাম্য মেলা অনুচ্ছেদ সম্পর্কে আপনি জানতে পারবেন।
গ্রাম্য মেলা অনুচ্ছেদ খুবই গুরুত্বপূর্ণ অনুচ্ছেদ কারণ বিভিন্ন সময় বিভিন্ন পরীক্ষাতেই গ্রাম্য মেলা অনুচ্ছেদ লিখতে হয়। সেজন্য আপনার পরীক্ষার প্রস্তুতির উদ্দেশ্যে আমরা এখানে মোট তিনটি গ্রাম্য মেলা অনুচ্ছেদ রেখেছি। আপনি চাইলে এই তিনটি গ্রাম্য মেলা অনুচ্ছেদ পড়ে আপনি আপনার পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে পারেন
পোস্ট সূচীপত্রঃ গ্রাম্য মেলা অনুচ্ছেদ - সকল ক্লাস
গ্রাম্য মেলা অনুচ্ছেদ - ১
গ্রাম্য মেলা সকল বাঙালি সংস্কৃতির স্বতঃস্ফূর্ত প্রকাশ। এটি আবহমানগ্রাম বাংলার সাংস্কৃতিক ঐতিহের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। আর মেলা শব্দটির আভিধানিক অর্থ হচ্ছে বিশেষ কোনো উপলক্ষে হাট বাজার অপেক্ষা প্রচরতর পূর্ণ ক্রয়-বিক্রয় তৎসহ আমোদ-প্রমোদের অস্থায়ী এক ব্যবস্থা। মেলা কথাটির আরেকটি অর্থ হলো “মিলন”। সুতরাংগ্রাম্য মেলা উপলক্ষে গ্রামবাংলার সাধারনমানুষজন সব কষ্ট ও বিভেদ ভুলে পরস্পরের সাথে মিলিত হয়, প্রাণের মিলন ঘটায়। তাইতো গ্রাম্য মেলার সাথে বাঙালির আত্মিক সম্পর্ক বেশ সুনিবিড়। গ্রাম্য মেলাকে কেন্দ্র করে আমাদের লোক জীবন ও লোকসংস্কৃতির অন্তরঙ্গ পরিচয় পাওয়া যায়। এছাড়াও গ্রাম্য মেলার বিশেষ ভূমিকা রয়েছে পল্লীর মানুষের নিরানন্দ জীবনে আনন্দের বার্তা ছড়িয়ে দিতে। প্রায় প্রাচীনকাল থেকেই বাঙালির জীবন ইতিহাসে মেলার অস্তিত্ব ভীষণভাবে লক্ষণীয়।গ্রাম্য মেলা আয়োজন হতে দেখা যায় বিচিত্র উপলক্ষ্যকে কেন্দ্র করে। গ্রাম্য মেলা অনুষ্ঠিত হয় ধর্মীয় অনুষ্ঠান, লৌকিক বিশ্বাস অথবা বিশেষ দিবসে। বাংলাদেশের অনেক স্থানে বাংলা বছরের শেষ দিনে। সুতরাং চৈত্র-সংক্রান্তিতে মেলা আয়োজনের রেওয়াজ রয়েছে। আবার দেখা মিলে পহেলা বৈশাখে আয়োজিত বৈশাখী মেলার মাধ্যমে, বাংলা নববর্ষকে স্বাগতম জানানো হয়ে থাকে। এভাবেও হেমন্তের নতুন ধান কাটার পর কোথাও না কোথাও মেলা বসে, পরশের বিদায় লগ্নে হয় পৌষ সংক্রান্তির মেলা।মুসলমানদের মহররম, হিন্দু সম্প্রদায়ের রথযাত্রা এবং দোল পূর্ণিমা উপলক্ষে গ্রাম্য মেলা অনুষ্ঠিত হয়। অগণিত মানুষের পদচারণায় মুখর এ সকল মেলা গ্রামিণ সংস্কৃতির ধারক ও বাহক। নাগরদোলা, পুতুলনাচ, লাঠি খেলা, যাত্রা, সার্কাস এবং ম্যাজিক প্রদর্শন ইত্যাদির মাধ্যমে সবাই আনন্দে মেতে ওঠে। গ্রাম বাংলার শিল্পী, বিভিন্ন কারিগরদের নিপুন হাতে তৈরি জিনিসপত্র ও অন্যান্য দ্রব্য সামগ্রী বেচাকেনা চলে ভীষণভাবে। বিন্নি ধানের খই, মুড়ি, মুড়কি, জিলাপি বাতাসা এবং অন্যান্য মিষ্টি জাতীয় খাবার ছেলে থেকে শুরু করে বুড়ো সবার রসনাকে তৃপ্ত করে দেয়। বর্তমানে সময়ের পরিক্রমায়, যন্ত্রসভ্যতার প্রভাবে গ্রাম্য মেলার আবেদন দিনকে দিন প্রায় হারিয়ে যাচ্ছেন, এবং তার নিজস্ব রূপ যাচ্ছে পাল্টে। তারপরও কথা স্মরণ রাখতে হবে, গ্রাম্য মেলায় গ্রাম বাংলার শাশ্বত রূপ সার্থক ভাবে ফুটে ওঠে। প্রায় যুগ যুগ ধরেই বাঙালির প্রাণোচ্ছ্বাসকে ধারণ করে গ্রাম্য মেলা গ্রামবাংলার মানুষের সার্বজনীন উৎসবে পরিণত হয়েছে। তাইতো বাঙালির নিজস্বতা প্রকাশে গ্রাম্য মেলার গুরুত্ব অনস্বীকার্য।
গ্রাম্য মেলা অনুচ্ছেদ - ২
গ্রাম্য মেলা আমাদের বাংলাদেশের গ্রামীণ ঐতিহ্য। আমাদের বাংলাদেশ বিভিন্ন উৎসব উপলক্ষে গ্রাম্য মেলার প্রচলন রয়েছে, প্রায় বহুকাল ধরেই এই দেশের মানুষের মেলার মাধ্যমে তাদের উৎপাদিত পণ্য ও তৈরি জিনিস কিনা বেচা করে আসছে। তাছাড়া গ্রাম্য মেলায় আনন্দ উপভোগেরও অনেক সুযোগ রয়েছে। এতে সার্কাস, যাত্রাপালা, সং, নাগরদোলা, নৃত্যগীত, লাঠি খেলা, ঘরদৌড়,লটারি ইত্যাদির আয়োজন হয়। শিশু ও কিশোরসহ সকল বয়সী মানুষী এগুলো উপভোগ করে অনেক আনন্দ পায়। গ্রাম্য মেলায় সংসারের নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের পাশাপাশি বিভিন্ন রকম খেলনা, পুতুল এবং মিষ্টি সহ বিভিন্ন খাবারও পাওয়া যায়। গ্রাম্য মেলায় গ্রামের মেয়েরা বাহারি কাচের চুরি ও প্রসাধন সামগ্রিক কিনতে আসে। এই গ্রাম্য মেলার আয়োজন করা হয় চৈত্রসংক্রান্তি, অষ্টমী, গাজন, শিবরাত্রি, মহররম, ঈদ, মাটি পূর্ণিমা, পহেলা বৈশাখ ইত্যাদি উপলক্ষে। তাছাড়া পীর সন্ন্যাসীর নামে, রথযাত্রা, নৌকাবাইচ, দুর্গাপূজা অথবা কালী পূজা, বিভিন্ন ধরনের লৌকিক উৎসব উপলক্ষে ছোট বড় গ্রাম্য মেলা বসে। গ্রাম্য মেলা নদীর পাড়ে, রাস্তার উপর বা পাশে, মাঠে ঘাটে, মন্দির অথবা মাজারের সামনে, হাট বাজারের স্থানে। গ্রাম্য মেলা কে ভীষণভাবে আকর্ষণীয় করে তুলে দূর দূরান্ত থেকে মানুষজন এসে পূর্ণ সাজিয়ে। গ্রাম্য মেলা উপলক্ষে বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আসা ক্রেতা দর্শনার্থীদের মধ্যে আলাপ আলোচনা পরিচয়, বন্ধুত্ব, এমনকি আত্মীয়তাও গড়ে ওঠে। একসাথে গল্প গুজব, আনন্দ ফুর্তি, খাওয়া দাওয়া, অনুষ্ঠান উপভোগ করার মধ্য দিয়ে পারস্পরিক সোহহার্য সম্পত্তি ও ভ্রাতৃত্ববন্ধন দৃঢ় হয়ে থাকে। ধর্ম-বর্ণ গোষ্ঠী নির্বিশেষে মানুষে মানুষে মিলনের ক্ষেত্রে গ্রাম্য মেলা ভরে ওঠে। গ্রাম্য মেলার এসব কারণেই ঐতিহ্য ধরে রাখা অপরিহার্য। তাই পুরনো লোকমেলাগুলোকে পূর্ণ জীবিত করা এবং বিভিন্ন উপলক্ষে নতুন নতুন মেলার আয়োজন করা হলে গ্রামীণ জীবন যেমন পুনরুজ্জীবিত হবে তেমনি ভাবে অনেক উপকৃতও হবে। গ্রাম্য মেলা লোকজনকে ক্ষুদ্র থেকে বৃহতের সংকীর্ণতা থেকে উদারতার চেতনায় অভিষিক্ত করে।
গ্রাম্য মেলা অনুচ্ছেদ - ৩
গ্রাম্য মেলা আমাদের বাংলাদেশের গ্রামীণ ঐতিহ্য। আমাদের দেশে নানা উৎসব উপলক্ষে গ্রামীণ মেলার প্রচলন রয়েছে।এই দেশের মানুষ দীর্ঘদিন ধরেই মেলার মাধ্যমে তাদের পণ্য ও উৎপাদিত পণ্য ক্রয়-বিক্রয় করে আসছে। তাছাড়া মেলাউপভোগ করারও অনেক সুযোগ রয়েছে। কেননা গ্রাম্য মেলায় নাচ, গান, সার্কাস, লোকনৃত্য,বিভিন্ন ধরনের লটারি, লাঠি খেলা এবং ঘোরদৌড় ইত্যাদি। শিশু কিশোরসহ সকল বয়সের মানুষ এই মেলা উপভোগ করে। গ্রাম্য মেলায় নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র ছাড়াও নানান ধরনের খেলনা ও পুতুল, মিষ্টিসহ আরো বিভিন্ন খাবার পাওয়া যায়। গ্রামের মেয়েরা মেলায় আসে বাহারি কাঁচের চুড়ি ও প্রসাধনী কেনাকাটা করতে। সাধারণত চৈত্রসংক্রান্তি, অষ্টমী, গাজন, শিবরাত্রি, মহররম ঈদ, বুদ্ধ পূর্ণিমা,মাঘী পূর্ণিমা পহেলা বৈশাখ ইত্যাদি উপলক্ষে গ্রাম্য মেলার আয়োজন করা হয়ে থাকে। তাছাড়াও পীর সন্ন্যাসীর নামেও ছোট বড় মেলা অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। নৈবহার, রথযাত্রা,দুর্গা অথবা কালী পূজা বিভিন্ন ধরনের ধর্মনিরপেক্ষ এক উৎসব। মাঠে-ঘাটে, নদীর ধারে, রাস্তার পাশে, মন্দির অথবা মাজারের সামনে এবং বাজারে এ সকল মেলা বসে। দূর দূরান্ত থেকে মানুষজন আসে তাদের পণ্য প্রদর্শন ও মেলাকে আকর্ষণীয় করে তুলতে।গ্রাম্য মেলা উপলক্ষে বিভিন্ন অঞ্চলের ক্রেতা-দর্শনার্থীদের মধ্যে মিথস্ক্রিয়া বন্ধুত্ব এমনকি আত্মীয়তার সম্পর্ক গড়ে উঠতে দেখা যায়। গল্প গুজব, বিভিন্ন কথাবার্তা আদান-প্রদানের মাধ্যমে একসাথে খাওয়া-দাওয়া, অনুষ্ঠান উপভোগ, পারস্পরিক সম্প্রীতি ও ভ্রাতৃত্ব মজবুত হয়। ধর্ম, বর্ণ, গোষ্ঠী নির্বিশেষে সকল মানুষের মিলন মেলা নেই। এসব কারণেই গ্রামের মেলার ঐতিহ্য ধরে রাখা অপরিহার্য। পুরাতন লোকমেলা পুনরুজ্জীবিত করা ও বিভিন্ন উপলক্ষে নতুন নতুন মেলার আয়োজন গ্রামীণ জীবনকে সজীব করার পাশাপাশি অনেক উপকৃতও করবে। গ্রাম্য মেলা মানুষকে ছোট থেকে বড়, সংকীর্ণতা থেকে উদারতার চেতনায় অভিষিক্ত করে।
সাগর ম্যাক্স এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url