বৈশাখী মেলা অনুচ্ছেদ - সকল ক্লাস
বইমেলা অনুচ্ছেদবৈশাখী মেলা অনুচ্ছেদ সম্পর্কে নিশ্চয়ই আপনি জানতে চাচ্ছেন? তাই আমরা এখন বৈশাখী মেলা অনুচ্ছেদ আপনার সামনে তুলে ধরব। বৈশাখী মেলা অনুচ্ছেদ জানতে আর্টিকেলটি সম্পন্ন পড়ুন। আমরা আজকের আর্টিকেলে পাঁচটি বৈশাখী মেলা অনুচ্ছেদ আপনার সামনে তুলে ধরার চেষ্টা করব।
অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ অনুচ্ছেদ গুলির মধ্যে বৈশাখী মেলা অনুচ্ছেদটি অন্যতম। কারণ বিভিন্ন পরীক্ষাতেই বৈশাখী মেলা অনুচ্ছেদ লিখতে হয়। তাই আপনি এই পাঁচটি বৈশাখী মেলা অনুচ্ছেদ থেকে আপনার পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে পারেন। তাহলে চলুন বৈশাখী মেলা অনুচ্ছেদ গুলো পড়ে আসি। আশা করি বৈশাখী মেলা অনুচ্ছেদ গুলো আপনার অনেক উপকারে আসবে।
পোস্ট সূচিপত্রঃ বৈশাখী মেলা অনুচ্ছেদ - সকল ক্লাস
- বৈশাখী মেলা অনুচ্ছেদ - ১
- বৈশাখী মেলা অনুচ্ছেদ - ২
- বৈশাখী মেলা অনুচ্ছেদ - ৩
- বৈশাখী মেলা অনুচ্ছেদ - ৪
- বৈশাখী মেলা অনুচ্ছেদ - ৫
বৈশাখী মেলা অনুচ্ছেদ - ১
বৈশাখী মেলা সকল বাঙ্গালীদের কাছে অন্যতম একটি আনন্দের উৎসব। বৈশাখী মেলা বাংলা বছরের প্রথম দিন পালন হয়ে থাকে। বিভিন্ন এলাকায় বৈশাখী মেলা এক থেকে সাত দিন পর্যন্ত হয়। শহর এবং গ্রামের স্থানীয় মানুষেরাই এই মেলার আয়োজন করে থাকে। সারা বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে ছোট-বড় অনেক মেলার আয়োজন করা হয়ে থাকে। আবার কোথাও কোথাও বৈশাখী মেলায় সারা মাস জুড়েই চলে। বৈশাখী মেলাগুলোকে সর্বসাধারণের উপভোগী করে গড়ে তোলা হয়ে থাকে। মেলাতে পুতুলনাচ, গান, নাগরদোলা এবং যাত্রাপালাসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃতিক উৎসবের আয়োজন করা হয়ে থাকে। বৈশাখী মেলার দিনে প্রায় ছোট বড় সকলেই অনেক আনন্দ উপভোগ করে। ছোট ছোট ছেলে মেয়েরা সবাই একসাথে দলবেঁধে বৈশাখী মেলায় যায়। মেয়েরাও সবাই মিলে একসাথে বৈশাখী মেলাতে যাই। বৈশাখী মেলাতে বিভিন্ন ধরনের হাড়ি পাতিল, খেলনা, ঘর সাজানোর সৌখিন জিনিস কিনতে পাওয়া যায়। বৈশাখী মেলায় হারিয়ে যাওয়া সাংস্কৃতির অনেক কিছুই কিনতে পাওয়া যায়। বৈশাখী মেলার মধ্যে সবচাইতে আকর্ষণীয় খাবার হল বিভিন্ন আকৃতির সন্দেশ এবং হাওয়ায় মিঠাই। বৈশাখী মেলার দিন সকাল থেকেই পুরো গ্রাম ও শহর সাজ সাজ রবে মেতে ওঠে। সাধারণত গ্রামে বৈশাখী মেলায় নদীর ধারে বট গাছের নিচে আয়োজন করা হয়ে থাকে। গ্রামের বৈশাখী মেলা থেকে শহরের বৈশাখী মেলা অনেকটাই ভিন্ন। ঢাকায় রমনার বটমূলে অনেক বড় আকারের বৈশাখী মেলার আয়োজন করা হয়। এই মেলায় সারাদিনব্যাপী পুতুলনাচ, -গান, কবিতার আয়োজন করা হয়ে থাকে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগের শিক্ষার্থীরা নানান ধরনের আলপনা দিয়ে পুরো সহজ সাজিয়ে তুলে। ঢাকা শহরে ছোট বড় খাবারের অনেক স্টল দেখা মেলে। বৈশাখীর দিনে সকালবেলায় বাঙালির ঐতিহ্যের প্রান্তা ভাতের সঙ্গে ইলিশ মাছ এবং হরেক রকম ভর্তা খায়। বৈশাখী মেলা সকল বাঙ্গালীদের প্রাণের উৎসব। বাঙালিরা এই উৎসবে হরেক রকম ভর্তা খায়। বাঙ্গালীদের এই উৎসবে সকল ভেদাভেদ ঘুচে যায়। সকল ধর্মের সকল শ্রেণীর মানুষ এক সাথে আনন্দ উৎসবে মেতে ওঠে। বৈশাখী মেলা বাঙ্গালীদের এনে দেয় খুশির বন্যা, ধুয়ে মুছে যায় সারা বছরের যত ক্লান্তি ও মানসিক অশান্তি।
বৈশাখী মেলা অনুচ্ছেদ - ২
নববর্ষের একটি উৎসব বৈশাখী মেলা। নববর্ষ উপলক্ষে সারাদেশের বিভিন্ন স্থানে এই বৈশাখী মেলা বসে। বৈশাখী মেলা বৈশাখের প্রথম দিনে অনুষ্ঠিত হয়। এই বৈশাখী মেলার আয়োজন করে স্থানীয় লোকেরা। বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় ছোট বড় অনেক স্থানে পহেলা বৈশাখ আয়োজন করা হয়। বৈশাখী মেলা শুরু করে স্থায়ী লোকেরা এই মেলাতে বিভিন্ন ধরনের গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী খেলা গুলো শুরু করে থাকে। বৈশাখী মেলা গুলো এক সপ্তাহ অথবা এক মাস ব্যাপীও হয়। বৈশাখী মেলাগুলো সাধারণত বসে খোলা আকাশের নিচে। প্রত্যেক বছর রমনার বটমূলে বৈশাখী মেলার প্রভাতি আসর বসে। তাছাড়াও বৈশাখী মেলা গ্রামের হাট বাজার, নদীর তীর, মন্দির প্রাঙ্গণে বসে। সকল মানুষের মাঝে প্রাণচাঞ্চল্য লক্ষ্য করা যায়। বিভিন্ন ধরনের প্রয়োজনীয় পণ্য, নানান ধরনের কুটির শিল্প, খেলনা সহরের রকম পণ্যের সমাহার ঘটে বৈশাখী মেলায়। তাছাড়াও বৈশাখী মেলায় থাকে যাত্রাপালা পুতুলনাচ, নাগরদোলা, সার্কাসসহ বিনোদনমূলক বিভিন্ন রকমের অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়ে থাকে। বৈশাখী মেলায় বিভিন্ন ধরনের মিষ্টি জাতীয় খাবার ও পাওয়া যায় যার মধ্যে সন্দেশ, হাওয়ায় মিঠাই অন্যতম। বৈশাখী মেলায় বসে বাঙালির ঐতিহ্যবাহী নানান খাবারের পশরা। এছাড়া বৈশাখী মেলার প্রধান আকর্ষণ হরেক রকমের মিষ্টি, বাতাসা, খই, মুড়ি আচার সহ বিভিন্ন রকমের বাহারি বাঙালি খাবার। বৈশাখী মেলায় রংবেরঙের বেলুন আর বাঁশের বাশির সুর এবং কচিকাঁচাদের কোলাহলে মুখরিত থাকে মেলা প্রাঙ্গণ। বৈশাখী মেলায় গিয়ে তালপাতার তৈরি হাতপাখা কিনেন না এমন মানুষের সংখ্যা খুবই কম। এই বৈশাখী মেলায় আরো পাওয়া যায় লোহা ও কাঠের তৈরি সামগ্রির মধ্যে দা, বঁটি, ছুরি, কান্তে, খুন্তি, কোদাল, শাবল, পিড়ি, জল চৌকি, টেবিল, চেয়ার, খাট-পালঙ্ক ইত্যাদি। বৈশাখী মেলা আমাদের জীবনের আনন্দের পাশাপাশি অনেক প্রয়োজন মেটায়।
বৈশাখী মেলা অনুচ্ছেদ - ৩
অসম্প্রদায়িক চেতনায় উজ্জীবিত বাঙালি জাতির জীবনে এই পহেলা বৈশাখ যেন একটি সর্বজনীন উৎসব। বৈশাখী মেলা বাংলা নববর্ষের এ উৎসবকে আরো প্রাণবন্ত করে তুলে।আমাদের বাংলাদেশের উৎসবগুলোর মধ্যে বৈশাখী মেলা অথবা পহেলা বৈশাখ অন্যতম। কারণ জাতি, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সব মানুষের এক মহামিলন ক্ষেত্র হয়ে উঠে এই বৈশাখী মেলা।বাংলা নববর্ষ কে কেন্দ্র করেই সারাদেশে শহর ও গ্রামের বৈশাখী মেলার আয়োজন করা হয়ে থাকে। বৈশাখী মেলা বৈশাখ মাসের প্রথম দিনে শুরু হয় এবং এক সপ্তাহব্যাপী কিংবা একমাস ব্যাপী শিল্পের এমন কোন পণ্য নেই যেটি বৈশাখী মেলায় দৃষ্টিগোচর হয় না। স্থানীয় লোকজন বৈশাখী মেলা থেকে কৃষিজাত দ্রব্য, কারু পণ্য, লোকশিল্পজাত, কুটিরশিল্পজাত, হস্তশিল্পজাত এবং মৃৎশিল্পজাত পণ্য ক্রয় করে থাকে।এছাড়াও শিশু-কিশোরদের খেলনা, মহিলাদের সাজসজ্জার সামগ্রী এবং বিভিন্ন রকমের লোকজ খাবার যেমনঃ মড়ি, খৈ, চিড়া, বাতাসা ইত্যাদির সমারোহ এই বৈশাখী মেলায় থাকে। বৈশাখী মেলাতে শিশু কিশোরদের বিনোদনের জন্য নাগরদোলা, পুতুল নাচ, জাদু খেলা ইত্যাদির ব্যবস্থাও থাকে। বৈশাখী মেলার প্রাঙ্গণ মুখরিত থাকে বিভিন্ন অঞ্চলের লোকগায়কদের গানে। কোন কোন অঞ্চলে বৈশাখী মেলা উপলক্ষে যাত্রাপালার আয়োজনও করা হয়। আবার অনেক জায়গায় সার্কাসের প্রচলন রয়েছে। এতে করে বৈশাখী মেলার আনন্দ দ্বিগুণ বেড়ে যায়। সুতরাং বৈশাখী মেলা বাঙালি জাতির ঐতিহ্য ও সাংস্কৃতির এক অবিচ্ছেদ্য অংশ বলা যেতে পারে।
বৈশাখী মেলা অনুচ্ছেদ - ৪
বৈশাখী মেলা নববর্ষের সর্বজনীন অনুষ্ঠানগুলোর মধ্যে অন্যতম। নববর্ষের প্রথম দিন সুতরাং, পহেলা বৈশাখ থেকে বাংলাদেশের ছোট-বড় অনেক মেলা শুরু হয়ে থাকে। স্থানীয় লোকেরা এই মেলার আয়োজন করে। বৈশাখী মেলার স্থাপিত্যকাল সাধারণত ১ থেকে ৭ দিন পর্যন্ত। কিন্তু কোথাও কোথাও বৈশাখী মেলা সারা বৈশাখ মাস পর্যন্ত চলে। আমাদের বাংলাদেশের উত্তরবঙ্গের দিনাজপুর জেলার নেকমর্দানে পহেলা বৈশাখে যেই মেলাটি বসে সেটি হল উত্তরবঙ্গের সবচাইতে বড় এবং যাক জাঁকজমকপূর্ণ মেলা। এ মেলা সাধারণত এক সপ্তাহ স্থায়ী হয়ে থাকে। সারা উত্তরবঙ্গের এমন বস্ত্র নেই যা এই মেলায় পাওয়া যায় না। এই বৈশাখী মেলাকে সর্বসাধারণের উপভোগী করে গড়ে তোলা হয়। পুতুল নাচ, গান, নাগরদোলা প্রভৃতি মেলার হাজার হাজার বছরের ঐতিহ্য বলে বিবেচিত। বৈশাখী মেলার দিনগুলোতে ছোট বড় সবার মাঝেই বিরাজ করে সাজ-সাজ রব। সারা বাংলাদেশের বৈশাখী মেলাগুলোতে খুঁজে পাওয়া যায় এদেশের হারিয়ে যাওয়া বিভিন্ন ধরনের দ্রব্য সামগ্রী, যা বাঙালির ঐতিহ্যের ধারক এবং বাহক বলে বিবেচিত। বাংলাদেশের বৈশাখী মেলা বাঙ্গালীদের ইতিহাস-ঐতিহ্যের মিলন মেলা। বৈশাখী মেলা সকলের প্রাণে এনে দেয় খুশির বন্যা, ধুয়ে মুছে দেয় সারা বছরের কর্ম ক্লান্তি ও মানসিক অশান্তি। আমরা বৈশাখী মেলা থেকে নতুন ভাবে বাঙালি ঐতিহ্য লালন করে বাঁচার অনুপ্রেরণা লাভ করে থাকি।
বৈশাখী মেলা অনুচ্ছেদ - ৫
বৈশাখী মেলা নববর্ষের সর্বজনীন অনুষ্ঠান গুলোর মধ্যে অন্যতম। নববর্ষ উপলক্ষে বৈশাখ মাসের প্রথম দিনে বাংলাদেশের বিভিন্ন শহর ও গ্রামের বিভিন্ন স্থানে বৈশাখী মেলা বসে। এই বৈশাখী মেলার কোন নির্দিষ্ট সময় সীমা নেই। বৈশাখী মেলা একদিন থেকে শুরু করে মাসব্যাপী চলতে থাকে। নতুন বছরের মানুষের আনন্দ অনুভূতির প্রকাশ ঘটে বৈশাখী মেলার মাধ্যম দিয়ে। বৈশাখী মেলা বাঙালি সংস্কৃতির ঐতিহ্য হিসেবে প্রচলিত। যুগ যুগ ধরে আমাদের দেশে বৈশাখী মেলা চলে আসছে। বৈশাখী মেলা উপলক্ষে উৎসব অনুষ্ঠান এবং প্রতিযোগিতামূলক খেলাধুলার আয়োজন করা হয়ে থাকে। এ সকল খেলাধুলার মধ্যে বলী খেলা, ঘোড়দোর, নৌকাবাইচ উল্লেখযোগ্য। সাধারণত বৈশাখী মেলা খোলা আকাশের নিচে বসে।প্রতিবছর রমনার বটমূলে বৈশাখী মেলার প্রভাতি আসর বসে। তাছাড়া গ্রামের হাট বাজার, নদীর তীরে, মন্দির প্রাঙ্গণে বৈশাখী মেলার আসর বসে। বৈশাখী মেলায় মানুষের মাঝে প্রাণচঞ্চল্য লক্ষ্য করা যায়। এই মেলায় নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য, নানান ধরনের কুটিরশিল্প, খেলনাসহ হরেক রকমের পণ্যের সমাহার ঘটে। তাছাড়াও থাকে যাত্রাপালা, নাগরদোলা, সার্কাস, পুতুলনাচসহ বিনোদনমূলক বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন। এই মেলায় বিভিন্ন ধরনের মিষ্টি জাতীয় খাবার ও পাওয়া যায়। নতুন করে বরণ করার জন্য এই মেলার আয়োজন করা হয়। কোন রকম ধর্মীয় চেতনা এই বৈশাখী মেলায় পরিলক্ষিত হয় না। সেজন্য এই মেলা একটি সর্বজনীন উৎসবে পরিণত হয়। বৈশাখী মেলা জাতি ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবার মিলনমেলায় পরিণত হয়। এতে করে প্রতিটা মানুষের প্রগতিশীল চেতনা জাগ্রত হয় এবং ঐতিহ্যকে লালন করে বাঁচার অনুপ্রেরণা লাভ করা যায়। সুতরাং বলাই যায় বৈশাখী মেলার গুরুত্ব অপরিসীম।
সাগর ম্যাক্স এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url