জন্ডিস থেকে মুক্তি পাওয়ার উপায় - জন্ডিস হলে কি খেতে হয়

সকালে দুধ খাওয়ার উপকারিতাপ্রিয় পাঠক, আপনি নিশ্চয় জন্ডিস নিয়ে অনেক চিন্তিত। তাই জানতে চাচ্ছেন জন্ডিস থেকে মুক্তি পাওয়ার উপায় এবং জন্ডিস হলে কি খেতে হয় সে সম্পর্কে। তাহলে আপনি সঠিক জায়গাতেই এসেছেন কারণ আমরা এখনই আপনাকে জানাবো জন্ডিস থেকে মুক্তি পাওয়ার উপায় এবং জন্ডিস হলে কি খেতে হয় সে সম্পর্কে। শুধু তাই নয় এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আপনারা জানতে পারবেন জন্ডিসের চিকিৎসা সম্পর্কেও।
জন্ডিস থেকে মুক্তি পাওয়ার উপায় - জন্ডিস হলে কি খেতে হয়
আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনার অনেক উপকারে আসবে কারণ এই আর্টিকেলে আমরা খুবই সুন্দরভাবে আলোচনার করার চেষ্টা করেছি আপনি কিভাবে জন্ডিস থেকে মুক্তি পাওয়ার উপায় খুঁজে বের করবেন এবং নিজে বাসায় এর চিকিৎসা নিবেন। তাহলে চলুন বন্ধু আমরা দেরি না করে জন্ডিস থেকে মুক্তি পাওয়ার উপায় এবং জন্ডিস হলে কি খেতে হয় সে সম্পর্কে জেনে আসার চেষ্টা করি। জন্ডিস হলে কি খেতে হয় এবং জন্ডিস থেকে মুক্তি পাওয়ার উপায় জানার জন্য আপনাকে এই আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ মনোযোগ সহকারে পড়তে হবে।
পোস্ট সূচিপত্রঃ জন্ডিস থেকে মুক্তি পাওয়ার উপায় - জন্ডিস হলে কি খেতে হয়

ভূমিকা

জন্ডিস থেকে মুক্ত পাওয়ার জন্য আপনাকে সব সময় বিশুদ্ধ খাদ্য ও পানি পান করতে হবে। এবং আপনার শরীরের রক্ত নেওয়ার দরকার হলে অবশ্যই প্রয়োজনীয় স্ক্রিনিং করে নিতে হবে। ডিসপোজিবল সিরিঞ্জ শরীরে ব্যবহার করা জরুরী। সেক্ষেত্রে হেপাটাইটিস বি এর টিকা আপনাকে নেওয়া দরকার। আপনাদের মধ্যে যারা সেলুনে সেভ করেন, তাদের খেয়াল রাখতে হবে যেন আগের ব্যবহার করা বেলেট বা ফুল পুনরায় ব্যবহার না করে।
সে ক্ষেত্রে জন্ডিস হলে টিকা নিয়ে কোন প্রকার লাভ হয় না, তাই আপনাকে সুস্থ থাকতেই টিকা নিতে হবে। হেপাটাইটিস বি এর ক্ষেত্রে প্রথম মাসে একটি দ্বিতীয় মাসে একটি বা ছয় মাসের মধ্যে একটি রোজ আপনাকে কমপ্লিট করতে হবে। হেপাটাইটিস এ এর একটি ডোজি যথেষ্ট আপনার জন্য। এবং পাঁচ বছর পর পর বুস্টার টিকা দিতে হবে। তাই আমরা জন্ডিসের চিকিৎসা নিয়ে পুরো পোস্টটিতে আলোচনা করব।

তো চলুন আমরা এক নজরে দেখে নিই এই আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ পড়ার মাধ্যমে আমরা কি কি বিষয় সম্পর্কে জানতে পারব। আমরা এই আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ পড়ার মাধ্যমে যে সকল বিষয়গুলো জানতে পারবো সেগুলো হল জন্ডিস থেকে মুক্তি পাওয়ার উপায়, জন্ডিসের সিরাপ, জন্ডিস হলে কি ডিম খাওয়া যাবে, জন্ডিস হলে কি ওষুধ খাব, জন্ডিস হলে কি খেতে হয় এবং জন্ডিসের চিকিৎসা। তাহলে চলুন বন্ধু এই আর্টিকেলটি পড়তে থাকি আর জানতে থাকি এ সমস্ত বিষয়গুলো সম্পর্কে।

জন্ডিস থেকে মুক্তি পাওয়ার উপায়

আমাদের শরীরে জন্ডিসের কারণে নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে। এবং এর মধ্যে অবশ্যই অন্যতম হলো হলুদ হয়ে যাওয়া। এক্ষেত্রে আপনার নখ, খ পোশাক, এবং চোখ হলুদ হয়ে যাবে। পাশাপাশি শরীর হয়ে যায় ক্লান্তময়। আপনার খাদ্য হজমে সমস্যা দেখা দিতে পারে। এই রোগ শরীরের জন্য বড়ই ভয়ংকর। তাছাড়া লিভার রোদাহের প্রধান কারণ হেপাটাইটিস ই, ও বি ভাইরাস। এবং এর মধ্যে প্রথম দুটি প্রাণী ও খাদ্য বাহিত আর তৃতীয়টি ছড়ায় আমাদের রক্তের মাধ্যমে। এক্ষেত্রে কয়েকটি উপায় জন্ডিস থেকে মুক্তি পাওয়ার চিকিৎসা করা দরকার।

কফি এবং গ্রিন টি

আপনি যদি প্রতিদিন তিন কাপ কফি বা গ্রিন টি খেতে পারেন তাহলে আপনার লিভারের সমস্যা কমে যাবে। পাশাপাশি হারবালটি পাম্প করলেও অনেকটাই সমস্যা দূর হবে। সে ক্ষেত্রে এই পানীয়ে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমস্যা কমাতে সহায়তা করবে।

জল পান

এ সময় লিভারের বাড়তি খেয়াল রাখতে চাইলে আপনাকে বেশি মাত্রায় জল পান করা উচিত। বেশি পরিমাণে জল পান করায় শরীর থেকে টস্কিন সহজে বেরিয়ে যেতে পারে।

ধনে

গোটা ধনে জন্ডিসের জন্য দারুন কাজ করতে পারে। এক্ষেত্রে সারারাত একটি গ্লাসে অল্পসংখ্যক গোটা ধনে ভিজিয়ে রাখতে পারেন। এবং সেটি সকালে উঠে সেই জল পান করতে পারেন। তাহলে কিছুদিনের মধ্যে আপনার সমস্যা অনেকটাই কমে যাবে।

আখের রস

আপনার মধ্যে যদি ডায়াবেটিসের কোন ভাব থেকে থাকে তাহলে আখের রস খাওয়ার কথা ভাববেন না। তবে এই বিশেষ শ্রেণী বাদে সকলেই মোটামুটি পান করতে পারেন এই রস। আখের রস আপনার জন্ডিসের সমস্যা কমাতে পারে। তবে আপনাকে আখের রসের পাশাপাশি লেবু, এবং কমলালেবুর রসও এ সময় দারুন কাজ করে।

ত্রিফলা চূর্ণ

আপনি সারারাত ১ চা চামচ ত্রিফলা চূর্ণ ভিজিয়ে রাখতে পারেন। এবং সেটি সকালে উঠে পান করতে পারেন। তাহলে আশা করা যায় এই সমস্যা থেকে আপনি মুক্তি পাবেন।

তবে মনে রাখবেন এই লেখাটি কেবল সচেতন উদ্দেশ্যে লেখা হয়েছে, আপনাকে কোন প্রকার চিকিৎসার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে না। তাই আপনাকে চিকিৎসকের পরামর্শ না নিয়ে কোন পদক্ষেপ নেওয়া যাবে না

জন্ডিসের সিরাপ

  • সিরাপ জাবিন (Syrup Jabeen) আমাদের জন্ডিসের জন্য এই সিরাপটি বেশ কার্যকারী এবং বেশ গুনাগুন রয়েছে। এই সিরাপটি আপনি সুন্দর ভাবে ব্যবহার করতে পারলে আপনি জন্ডিস থেকে মুক্ত পেতে পারেন।
  • সিরাপ জাবিন - জটামাংসি, কাসনি বীজ, রান্ধুনী বিজ, মৌরি ও অন্যান্য মূল্যবান সমন্বয়ে প্রস্তুত করা হয়। এতে বিদ্যমান থাকে কাসনি বীজ পিত্ত নিঃসারক হিসেবে শরীরে কাজ করে এবং পিত্ত জন্ডিস ও দীর্ঘমেয়াদি জ্বর উপসরণ করতে অনেকটা সহায়তা করে থাকে।
  • রান্ধুনী বিজ আপনার হজম কারক, সংক্রমণ প্রতিরোধ এবং বিষক্রিয়া দূর করতে পারে।
  • জটামাংসি প্রদাহ, জ্বর এবং শরীরের জ্বালা পোড়া থেকে মুক্তি দেয় আবার রক্ত প্রতিষোধন করে তুলে এবং আপনার লিভার সুরক্ষা রাখতে সহায়তা করে।
  • মৌরি প্রদাহ নিবারক করে, মত্র মানব এবং পিতনালী ও মন্ত্র যন্ত্রের প্রতিবন্ধকতা উপসারন করে তোলে।

জন্ডিস হলে কি ডিম খাওয়া যাবে

জন্ডিস হলে কখনোই ডিম খাওয়া যাবেনা। ডিম খেলে জন্ডিসের মাত্রা বেড়ে যায়। এবং আপনার শারীরিক সমস্যাও দেখা দিতে পারে। তাই জন্ডিস হলে আপনি ডিম খাবেন না যতদিন না আপনার জন বৃষ্টি ভালো না হয়।

জন্ডিস হলে কি ওষুধ খাব

আমাদের দেহে যখন বিলিরুবিনের মাত্রা বৃদ্ধি পায়। তখন আমাদের শরীরে জন্ডিসর মতো রোগ দেখা দেয়, আমাদের রক্তের লোহিত কণাগুলো একসময় স্বাভাবিক নিয়মে ভেঙে গিয়ে বিলিরুবিন তৈরি করে। যা লিভারে প্রক্রিয়াজাত হয়ে পিওরসের সাথে আমাদের শরীরে পরিপাকতন্ত্রে প্রিয়ন আলীর মাধ্যমে সঞ্চালন হয়। এই বিলিরুবিন আমাদের শরীর থেকে পায়খানার মাধ্যমে একসময় বের হয়ে যায়।

বিলিরুবিন নির্গত হওয়ার এই প্রক্রিয়ায় বিভিন্ন ধরনের অসংগতি দেখা দিলে আমাদের দেহে রক্তের বিলিরুবিনের মাত্রা বৃদ্ধি পায় যার ফলে জন্ডিসের মতো রোগ হয়ে থাকে আমাদের দেহে। তাই জন্ডিস ভালো করার কিছু ওষুধ আছে এটি যদি আপনি ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী খেতে পারেন তাহলে আপনার জন্ডিস দ্রুত ভালো হবে।

জন্ডিসের ৪টি ওষুধের নাম

  1. Solvit B Syrup
  2. Bioliv Capsule
  3. Omidon Tablet
  4. Avolac Syrup 

জন্ডিস হলে কি খেতে হয়

আপনার জন্ডিস হলে এমন খাবার খাওয়া উচিত, যাতে যকৃৎ কিংবা পাকস্থলীর ওপর কোনো চাপ না পরে। আপনাকে অল্প করে একটু পর পর সঠিক খাবার গ্রহণ করতে হবে এবং পর্যাপ্ত পরিমাণে বিশ্রাম নিতে হবে। তাহলে আপনার জন্ডিস খুব তাড়াতাড়ি সেরে যাওয়া সম্ভব না থাকে।

আপনার জন্ডিস হলে যা খাবেন

গোটা শস্য খেতে পারেনঃ কার্বোহাইড্রেটের চাহিদা পূরণে বাদামি চাল, রুটি, ওটস খেলে ভালো হয়। গোটা শস্যে প্রচুর পরিমাণে আশ থাকায়, এতে ভিটামিন থাকে যা ক্ষতিকর টক্সিন বের করে দেয়।

প্রোটিন

আপনার খাদ্যাভেসে প্রতিদিন মাছ, মুরগির মাংস, ডাল পরিমাণ মত থাকলে ভালো হয়। কারণ এগুলো না খেলে রোগী দুর্বল হয়ে পড়বে। আমাদের মধ্যে অনেকে মনে করেন, জন্ডিসে আক্রান্ত রোগী মাছ মাংস জাতীয় খাবার থেকে বিরত থাকতে হবে। এটা আসলে পুরোটাই ভুল ধারণা।

সবজি

মিষ্টি আলু, মুলা, ব্রকলি, টমেটো, ফুলকপি, গাজর, বিট, মিষ্টি কুমড়া, বাঁধাকপি এবং পালং শাক জন্ডিস রোগীর জন্য খুব কার্যকারী।

ফল

পেঁপে, প্যারিস, তরমুজ, আনারস, পাকা আম, কলা, জলপাই, কমলা, অ্যাভোকাডো, তাছাড়া আঙ্গুরের মতো সহজপাচ্য আপনার প্রতিদিনের খাদ্যভেসে থাকাটা প্রয়োজন।

দুবর্ণ জাতীয় খাবার

আপনার জন্ডিস হলে ফুল ক্রিম দুধ বা দই, পনির খাওয়া ঠিক নয়। কারণ এতে স্যাচুরেটেড ফ্যাট বেশি থাকায়, যকৃদতের জন্য ক্ষতিকারক।

জন্ডিসের চিকিৎসা

যেহেতু আমরা জানি জন্ডিস কোন রোগ নয়, সেক্ষেত্রে এর কোন ওষুধও পাওয়া যায় না। ১০ থেকে ২৫ দিনের মধ্যে রক্তে বিলেরোবিনের পরিমাণ হলো স্বাভাবিক হয়ে গেলে জন্ডিস আপনার শরীর থেকে এমনিতেই সেরে যাবে। সেজন্য আপনার পর্যাপ্ত বিশ্রামী মূল চিকিৎসা হিসেবে কাজ করবে।

এ সময়ে ব্যথার ওষুধ যেমন, প্যারাসুটামল, এসপিরিন, এবং ঘুমের ওষুধ সহ অন্য কোন অপ্রয়োজনীয় ও কবিরাজের ওষুধ থেকে আপনাকে বিরত থাকতে হবে। এক কথায় বলা যায় বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া সেবন করা একেবারেই ঠিক হবে না। এর কারণে পরবর্তীতে আপনার শারীরিক সমস্যা বা শারীরিক ঝুঁকি বেশি হয়ে যেতে পারে।

জন্ডিসের চিকিৎসা সাধারণত নির্ভর করবে ঠিক কি কারণে জন্ডিস হলো আপনার। এজন্য জন্ডিসের উপসর্গ দেখা দিলে অবশ্যই একজন লিভার বিশেষজ্ঞ পরামর্শ অনুযায়ী আপনাকে চিকিৎসা নিতে হবে। চিকিৎসক আপনার শারীরিক লক্ষণ এবং রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে জন্ডিসের তীব্রতা ও কারণ নির্ণয় করে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দিবেন।

শিশুদের জন্ডিস হলে অনেক সময় হাসপাতালে ভর্তি করে বিভিন্ন থেরাপিও করতে হতে পারে। তবে গ্রামগঞ্জে জন্ডিসের অনেক অবৈজ্ঞানিক চিকিৎসা এখনো প্রচলিত রয়েছে।যতটুকু পারেন এইসব চিকিৎসা থেকে দূরে থাকুন। এতে করে লিভারসহ শরীরের মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে আপনার।

শেষ কথা

প্রিয় পাঠক, এতক্ষণ আমাদের সাথে থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আপনি নিশ্চয়ই এতক্ষণে জেনে গেছেন জন্ডিস থেকে মুক্তি পাওয়ার উপায় কি এবং জন্ডিস হলে কি খেতে হয় সে সম্পর্কে। যেহেতু আমাদের মধ্যে অনেকেই আছেন যাদের মাঝেমধ্যে জন্ডিস দেখা দেয় সেও তো আমাদের সকলকে উড়তো বিষয় সম্পর্কে জেনে রাখা উচিত। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনার কাছে অনেক ভালো লেগেছে এবং আপনার অনেক উপকারে আসবে।
তাই এই আর্টিকেলটি যদি আপনার কাছে ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে ভুলবেন না। কেননা আপনার বন্ধুরাও আপনার মাধ্যমে জানতে পারবে জন্ডিস থেকে মুক্তি পাওয়ার উপায় কি এবং জন্ডিস হলে কি খেতে হয়। আর অবশ্যই আমাদের এই ওয়েবসাইটে নিয়মিত ভিজিট বা ফোলো করার চেষ্টা করবেন। কারণ আমরা এই ওয়েবসাইটে নিয়মিত নতুন নতুন ব্লগ পোস্ট বা আর্টিকেল পাবলিশ করে থাকি। আসসালামু আলাইকুম।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

সাগর ম্যাক্স এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url