হিমোগ্লোবিন কত হলে রক্ত দিতে হয় - হিমোগ্লোবিন কম হওয়ার কারণ

কিভাবে স্বাস্থ্যের অধিকারী হওয়া যায়প্রিয় পাঠক, আপনি নিশ্চয় জানতে চান, হিমোগ্লোবিন কত হলে রক্ত দিতে হয় এবং হিমোগ্লোবিন কম হওয়ার কারণ কি সে সম্পর্কে। তাই আমরা এ পোস্টটের মাধ্যমে আপনাকে জানাবো হিমোগ্লোবিন কম হওয়ার কারণ এবং হিমোগ্লোবিন কত হলে রক্ত দিতে হয়। আশা করি এই পোস্টটি সম্পন্ন পড়ার মাধ্যমে আপনি হিমোগ্লোবিন কত হলে রক্ত দিতে হয় এবং হিমোগ্লোবিন কম হওয়ার কারণ সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জানতে পারবেন।
হিমোগ্লোবিন-কত-হলে-রক্ত-দিতে-হয়
তাই অবশ্যই আপনি চেষ্টা করবেন এই পোস্টটি সম্পূর্ণ মনোযোগ সহকারে পড়ার। হিমোগ্লোবিন কত হলে রক্ত দিতে হয় এবং হিমোগ্লোবিন কম হওয়ার কারণ, ছাড়াও হিমোগ্লোবিন বিষয়ে আরো অনেক অজানা তথ্য জানতে পারবেন, যেমন হিমোগ্লোবিন কম হলে কি কি সমস্যা হয় এ সকল বিষয়েও জানতে পারবেন। তাহলে চলুন হিমোগ্লোবিন কত হলে রক্ত দিতে হয় এবং হিমোগ্লোবিন কম হওয়ার কারণ সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জেনে আসি।
পোস্ট সূচিপত্রঃ

ভূমিকা

আমরা অনেকেই হিমোগ্লোবিন নামের সাথে পরিচিত। হিমোগ্লোবিন হচ্ছে রক্তের একটি উপাদান। যা আমাদের মধ্যে অধিকাংশ মানুষের হিমোগ্লোবিন বলতে রক্তের উপাদান কেই বুঝি। তবে আমাদের শরীরে হিমোগ্লোবিনের বিশেষ কিছু ভূমিকা রয়েছে। এবং আমরা অনেকেই জানিনা হিমোগ্লোবিনের কাজ কি? তা জানি না। সেজন্য আমরা আজকে এই আর্টিকেলের মাধ্যমে হিমোগ্লোবিন কত হলে রক্ত দিতে হয় এবং হিমোগ্লোবিন কম হওয়ার কারণ কি।

এগুলো সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করব গোটা পোস্ট জুড়ে। সেজন্য আপনি যদি আমাদের এই আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়েন তাহলে আপনি অবশ্যই এগুলো সম্পর্কে জানতে পারবেন। তাছাড়া শরীরের রক্ত কম হওয়ার লক্ষণ, শরীরে রক্ত বৃদ্ধির উপায়, হিমোগ্লোবিন কম হলে কি কি সমস্যা হয়। এগুলো সম্পর্কে সুন্দরভাবে আলোচনা করা হয়েছে। তাহলে চলুন দেরি না করে হিমোগ্লোবিন কত হলে রক্ত দিতে হয় এ বিষয়টি ভালোভাবে জেনে রাখার চেষ্টা করি।

শরীরে রক্ত কম হওয়ার লক্ষণ

আমাদের শরীরের সব সময় কোন না কোন বিভিন্ন ধরনের রোগ জীবাণু বাসা বেধে থাকে। এবং আমরা বিভিন্ন রোগে ভুগেও থাকি। তার মধ্যে আপনি একটি বলতে পারেন শরীরের রক্ত কম হওয়া বা রক্তশূন্যতার সমস্যা। তাছাড়া রক্তপাত, রক্তের লোহিত কণিকার উৎপাদন কম এবং লোহিত কণিকা ভঙ্গের কারণেও রক্তস্বল্পতা দেখা দিতে পারে আমাদের। তাই এখন আমরা জানতে চলেছি শরীরের রক্ত কম হওয়ার লক্ষণ গুলো কি কি।

রক্ত শরীরে রক্ত কম হওয়ার লক্ষণ

  • আমাদের জন্মগত রক্ত রোগ
  • কৃমি সংক্রমণ হওয়া
  • রক্তের ক্যান্সার হওয়া
  • আয়রনের ঘাটতি দেখা দেওয়া
  • বিভিন্ন রোগের কারণে
  • অনেক ক্ষেত্রে রক্তের লোহিত কণিকা সময়ের আগে ভেঙে যাওয়ায় রক্তশূন্যতা দেখা দিয়ে থাকে।
  • এবং গ্যাস্ট্রাইনটেস্টইনাল রক্তচাপের সমস্যা

শরীরে রক্ত বৃদ্ধির উপায়

বিভিন্ন কারণে আমাদের শরীরে রক্তস্বল্পতা দেখা দিতে পারে। যা আমরা ইতিমধ্যে জেনে এসেছি। আমাদের শরীর থেকে রক্ত কমে গেলে দেহে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দেয়। তাই শরীরের রক্ত বৃদ্ধির উপায়, হিসেবে কিছু খাবার আমাদের শরীরের জন্য অত্যন্ত জরুরী। তাই এই পোস্টে আমরা এখন জানতে চলেছি শরীরে রক্ত বৃদ্ধির উপায় সম্পর্কে। তাহলে চলুন শরীরে রক্ত বাড়ানোর খাবার সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জেনে নিই।

সবুজ শাক

আপনি যদি আপনার রক্তশূন্যতা পূরণ করতে চান তাহলে আপনাকে শাকসবজি খেতে হবে। কারণ সবুজ শাকের ভেতরে রয়েছে অনেক আয়রন, প্রোটিন, ভিটামিন সি জাতীয় উপাদান। যা আমাদের শরীরের রক্ত বৃদ্ধি করে থাকে।

ফল

ফলের বেশ কার্যকারিতা রয়েছে, আমাদের শরীরে রক্তস্বল্পতা এবং রোহিত কণিকার উৎপন্ন সহায়তা করতে। যেমন কমলা, গাজর, ডালিম, আঙ্গুর, কলা ইত্যাদি আমাদের শরীরে রক্তস্বল্পতা পূরণ করতে বেশ কার্যকর ভূমিকা রাখে।

ফলিক অ্যাসিড

ফলিক অ্যাসিডের গুরুত্ব অপরিসীম, কারণ আমাদের রক্তস্বল্পতা দূর করতে।আমাদের শরীরের রক্তের লোহিত রক্তকণিকা উৎপন্ন করতে সাহায্য করে ফলিক অ্যাসিড। আমাদের শরীরের জন্য অত্যন্ত জরুরী ফলিক অ্যাসিড খাবার। যেমন পালং শাক, তিলের বীজ, ডাল, বাদাম ইত্যাদি।

আয়রন সমৃদ্ধ খাবার

যেমন কলিজা, আলু, কচু শাক, মাংস, ডিম ইত্যাদি আয়রন সমৃদ্ধ খাবার। এই খাবারগুলোর কারণে আমাদের রক্তস্বল্পতা দেখা দিতে পারে। সেজন্য রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা কমে গেলে এবং আমাদের রক্তশূন্যতা দেখা দিলে আয়রনযুক্ত খাবার খাওয়া উচিত।

ভিটামিন বি ১২

আমাদের রক্তস্বল্পতা পূরণের জন্য বেশ সহযোগী হিসেবে কাজ করে ভিটামিন বি ১২ সমৃদ্ধ খাবার।আমাদের রক্তের লোহিত কণিকা উৎপাদন করতে সাহায্য করে এই সমৃদ্ধ খাবার। ভিটামিন বি ১২ সমৃদ্ধ খাবার যেমন মাংসের লিভার, ডিম, মাছ, দুগ্ন জাতীয় খাবার ইত্যাদি। এগুলো খাবার আমাদের শরীরে ভিটামিন বি ১২ চাহিদা পূরণ করে থাকে।

হিমোগ্লোবিন কত হলে রক্ত দিতে হয়

আমাদের শরীরে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা কমে গেলে বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেয়। আমাদের দেহ থেকে হিমোগরা কমে গেলে রক্তশূন্যতার প্রবণতা দেখায়। সে কারণে রক্তশূন্যতা দূর করার জন্য অনেক সময় রক্ত দিতে হয় যেটাকে বলা হয় পরিসঞ্চালন। তবে শরীরে রক্তশূন্যতা দেখা দিলে যে রক্ত পড়ে সঞ্চালনের প্রয়োজন হয় আসলে বিষয়টি সেটা নয়। সেজন্যই আমাদের জানতে হবে হিমোগ্লোবিন কত হলে রক্ত দিতে হয়। এ বিষয়টি জানা আমাদের জন্য অত্যন্ত জরুরি। তাহলে চলুন জেনে আসি হিমোগ্লোবিন কত হলে রক্ত দিতে হয়।

আমাদের শরীরে বিভিন্ন কারণে রক্তশূন্যতা দেখা দিতে পারে। তাই বলে শরীরের রক্তশূন্যতা দেখা দিলেই রক্ত দেয়ার প্রয়োজন পড়ে না। আমাদেরকে প্রথমে রক্তশূন্যতার কারন উদঘাটন করতে হবে। তারপর পরিস্থিতি অনুযায়ী রক্ত দিতে হয়। আমাদের প্রথমেই জানতে হবে হিমোগ্লোবিন কত হলে রক্ত দিতে হয় এবং শরীরে হিমোগ্লোবিনের মত স্বাভাবিক মাত্রা সম্পর্কে।

আমাদের শরীরে যদি হিমোগ্লোবিনের মাত্রা স্বাভাবিকের তুলনায় অনেক কম হয়। তাহলে সে ক্ষেত্রে রক্ত পরিস সঞ্চালনের প্রয়োজনীয়তা নেতা দেখা দিয়ে থাকে। একজন প্রাপ্তবয়স্ক মহিলা ও পুরুষের ক্ষেত্রে রক্তের হিমোগ্লোবিনের সঠিক বা স্বাভাবিক মাত্রা হলো- ১৫ - ১৭ এবং ১৩ - ১৬ ডেসিলিটার। এবং মধ্যম বয়সী পুরুষ ও মহিলাদের ক্ষেত্রে হিমোগ্লোবিনের সঠিক মাত্রা ধরা হয়ে থাকে মহিলাদের ক্ষেত্রে ১২ - ১৪ ডেসিলিটার ও পুরুষদের ক্ষেত্রে ১১ - ১৩ ডেসিলিটার।

সেক্ষেত্রে শরীর এবং বয়সের কারণে গ্লোবিনের মাত্রা কিছুটা কম বেশি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। রোগীর সার্জারি করার আগে শরীরে যদি রক্তে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ ৭ ডেসিলিটার বা এর কম হয়ে থাকে তাহলে সে ক্ষেত্রে রোগীর শরীরে রক্ত দেওয়া প্রয়োজন। তাছাড়া দীর্ঘ দিন রোগীর শরীরে রক্তশূন্যতা থাকলে বা দীর্ঘদিন হিমোগ্লোবিনের মাত্রা ৭ ডেসিলিটার বা এর চেয়ে কম থাকলে সেজন্য রোগীর শরীরের রক্ত পড়ে সঞ্চালন ও রক্ত দিতে হয়। আমরা আশা করছি আপনি হিমোগ্লোবিন কত হলে রক্ত দিতে হয় এই বিষয়টি ভালোভাবে বুঝতে পেরেছেন।

হিমোগ্লোবিন কম হলে কি কি সমস্যা হয়

আমাদের সবার শরীরে নির্দিষ্ট পরিমাণে রক্ত থাকে। এবং আমাদের শরীরের রক্ত কমে গেলে বিভিন্ন রকম সমস্যা দেখা দেয় দেহে। সেজন্য আমাদের প্রত্যেকের জানা অত্যন্ত জরুরী। আজকে আমরা ইতিমধ্যে এই পোস্টে জেনে এসেছি আমাদের শরীরে রক্ত কম হওয়ার কারণ সম্পর্কে। তো এখন আমরা জানতে চলেছি হিমোগ্লোবিন কম হলে কি কি সমস্যা হয়।
  • শরীরে প্রচুর পরিমাণে ঘাম হবে।
  • আস্তে আস্তে শরীর দুর্বল হয়ে পড়বে।
  • কিডনির সমস্যা দেখা দিবে।
  • অনেক সময় বুক ধরফর করতে পারে।
  • হাঠা ঝিমঝিম করবে।
  • শরীর ঠেকাসে হয়ে যাবে
  • তীব্র রক্ত শূন্যতা দেখা দিবে এবং হার্ট ফেলরও দেখা দিতে পারে।

হিমোগ্লোবিন কম হওয়ার কারণ

আমাদের শরীরের জন্য হিমোগ্লোবিন কতটা গুরুত্বপূর্ণ এতক্ষণে আপনি নিশ্চয়ই বুঝতে পেরেছেন। আমাদের রক্তে যদি সঠিক মাথায় হিমোগ্লোবিন না থাকে আমাদের শরীর বিভিন্ন ধরনের জটিলতার সম্মুখীন হয়ে থাকে। তাই এগুলো সম্পর্কে সঠিক ভাবে আমাদের জানা উচিত, হিমোগ্লোবিন কম হওয়ার কারণ কি।

আমাদের মধ্যে অনেকেই জানেন না হিমোগ্লোবিন কম হওয়ার কারণ? সেজন্য আমরা এখন জানাবো আপনাদেরকে হিমোগ্লোবিন কম হওয়ার কারণ সম্পর্কে। আমাদের রক্তের একাধিক কারণে হিমোগ্লোবিনের ঘাটতি দেখা দিতে পারে এবং হিমোগ্লোবিনের এই ঘাটতি নারী পুরুষ ছোট বড় সকলের ক্ষেত্রে দেখা দিতে পারে।

সে ক্ষেত্রে শারীরিক চাহিদা অনুযায়ী যদি ভিটামিন এবং পুষ্টি সম্পন্ন খাবার আপনি খেতে না পারেন। সেজন্য হিমোগ্লোবিনের ঘাটতি হাত দেখা দিতে পারে। তাছাড়া বিশেষ করে প্রেগনেন্ট মহিলাদের পুষ্টির অভাবে হিমোগ্লোবিনের ঘাটতি জনিত অসুবিধায় দেখা যায় অনেককেই। আমাদের খাদ্য পুষ্টি অভাব ছাড়াও হিমোগ্লোবিন কম হওয়া জন্য, জটিল বেশ কিছু কারণ রয়েছে।

হিমোগ্লোবিন কম হওয়ার কারণ

  • অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ
  • লিভার সিরোসিস
  • ভিটামিন বি ১২ ঘাটতি
  • লিউকোমিয়া
  • আমাদের শরীরে আয়রনের ঘাটতি
  • এইডস
  • ক্যান্সার
  • লিম্ফোমা
  • পাইলস
  • আমাদের পেটের আলসার
  • হিমলাইটিস
  • মুত্রাশয়ের সমস্যা
  • হাইপোথাইরয়েড
  • থ্যালাসেমিয়া
  • টিউমার ইত্যাদি।

শেষ কথা

প্রিয় পাঠক, এতক্ষন আমাদের সাথে থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আপনি নিশ্চয়ই এতক্ষণে জেনে গেছেন হিমোগ্লোবিন কত হলে রক্ত দিতে হয়? এবং হিমোগ্লোবিন কম হওয়ার কারণ কি। আশা করি এই পোস্টটি আপনার অনেক উপকারে আসবে। তাই এ পোস্টটি আপনার কাছে ভালো লেগে থাকলে আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন। এরকম বিভিন্ন ধরনের নতুন নতুন ব্লগ বা আর্টিকেল পেতে আমাদের সাথেই থাকুন। আসসালামু আলাইকুম।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

সাগর ম্যাক্স এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url