কোন গরু পালনে লাভ বেশি - গরুর খামার কিভাবে শুরু করতে হয়
আধুনিক পদ্ধতিতে গরু মোটাতাজাকরণকোন গরু পালনে লাভ বেশি এবং গরুর খামার কিভাবে শুরু করতে হয় তা সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন?। তাই আমরা এখন জানাবো কোন গরু পালনে লাভ বেশি এবং গরুর খামার কিভাবে শুরু করতে হয় সে বিষয়ে। আপনি যদি আমাদের এই আর্টিকেলটি সম্পন্ন পড়েন, তাহলে কোন গরু পালনে লাভ বেশি এবং গরুর খামার কিভাবে শুরু করতে হয় তা সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জানতে পারবেন।
কোন গরু পালনে লাভ বেশি এবং গরুর খামার কিভাবে শুরু করতে হয় এই সমস্ত বিষয়গুলি ছাড়াও আরো জানতে পারবেন বাছুরকে প্রতিদিন খাওয়াতে কত টাকা লাগে সে সম্পর্কে। তো চলুন বন্ধু আর দেরি না করে আমরা বিস্তারিতভাবে জেনে নেওয়ার চেষ্টা করি কোন গরু পালনে লাভ বেশি এবং গরুর খামার কিভাবে শুরু করতে হয় তা সম্পর্কে। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনার অনেক উপকারে আসবে।
পোস্ট সূচিপত্রঃ কোন গরু পালনে লাভ বেশি - গরুর খামার কিভাবে শুরু করতে হয়
ভূমিকাঃ কোন গরু পালনে লাভ বেশি | গরুর খামার কিভাবে শুরু করতে হয়
কোন গরু পালনে লাভ বেশি এবং গরুর খামার কিভাবে শুরু করতে হয় এ বিষয়গুলি আমরা এই আর্টিকেলের মাধ্যমে খুবই সুন্দর ভাবে আলোচনা করেছি। শুধু তাই নয় আপনি যদি আমাদের এই আর্টিকেলটি সম্পন্ন মনোযোগ সহকারে স্টেপ বাই স্টেপ পড়েন তাহলে গরুর সম্পর্কে আরো অনেক অজানা তথ্য জানতে পারবেন। তো চলুন আমরা এক নজরে দেখে নেওয়ার চেষ্টা করি সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ার মাধ্যমে আমরা কি কি বিষয় সম্পর্কে বিস্তারিত ভাবে জানতে পারব।
আমরা যদি এই আর্টিকেলটি সম্পন্ন মনোযোগ সহকারে স্টেপ বাই স্টেপ সকল পয়েন্ট গুলো পড়ে তাহলে যে সমস্ত বিষয়গুলি আমরা জানতে পারবো সেগুলো হল কোন গরু পালনে লাভ বেশি, বাছুরকে প্রতিদিন খাওয়াতে কত টাকা লাগে, গরুর খামার পরিকল্পনা, গরুর খামার কিভাবে শুরু করতে হয় এবং গরুর খামারের লাভ কেমন তা সম্পর্কে। তো চলুন বন্ধু আর দেরি না করে আমরা এ সমস্ত বিষয়গুলি বিস্তারিতভাবে জেনে নেওয়ার চেষ্টা করি। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনার অনেক উপকারে আসবে।
কোন গরু পালনে লাভ বেশি
কোন গরু পালনে লাভ বেশি? এ প্রশ্নটি আমাদের অনেকের মাঝে হয়ে থাকে, তাই আমরা এখন আপনাকে এমন কিছু গরু নাম বলব সেগুলো লালন পালন করার মাধ্যমে আপনি অনেক অর্থ উপার্জন করতে পারবেন। তো বন্ধু চলুন আর দেরি না করে আমরা বিস্তারিতভাবে জেনে নেওয়ার চেষ্টা করি কোন গরু পালনে লাভ বেশি সে বিষয়ে।
আপনি যদি গরু লালন পালন করেন অনেক অর্থ উপার্জন করতে চান তাহলে অবশ্যই আপনাকে উন্নত জাতের গরু লালন পালন করতে হবে। কেননা উন্নত জাতের গরুর চাহিদাও আকাশচুম্বী। আমরা আমাদের শরীরের পুষ্টির চাহিদা মেটানোর জন্য দুধ ও গরুর মাংস খেয়ে থাকি। আসলে উন্নত জাতের গরু থেকে যেমন দুধ পাওয়া যায় প্রচুর পরিমাণে।
তেমনিভাবে মাংসের উপাদান করা যায় অধিক পরিমাণে। বর্তমান সময়ে আমাদের দেশেও কিছু উন্নত জাতের গরু লালন পালন করা শুরু হয়ে গেছে। তবে বেশ কিছু জাতের গরু আমাদের দেশের পরিবেশের সাথে এখনো খাপ খাইয়ে নিতে পারেনি। সেজন্যই মূলত অনেকেই ক্রসব্রিড লালন পালন করছে।
আবার অনেকেই অত্যাধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার করে নিবিড় পরিচর্যার মাধ্যমে বিদেশি উন্নত জাতের গরু লালন-পালন করছে। এতে করে মোনাফাও পাওয়া যাচ্ছে প্রচুর পরিমাণে।সেজন্যই মূলত আমরা এখন আপনাকে কয়েকটি গরু নাম বলব, এ সকল গরুগুলো হচ্ছে উন্নত জাতের গরুর মধ্যে উল্লেখযোগ্য।
যেমনঃ জার্সি, সিন্ধি, হলস্টেইন ফ্রিজিয়ান, শাহীওয়াল, থারপারকার, ব্রাহমা এবং সংকর প্রভৃতি।
জার্সিঃ
এই জার্সি গরুর উৎপত্তি ইংলিশ চ্যানেলের জার্সি নামক ব্রিটিশ দ্বীপে। উন্নতমানের গাভীর মধ্যে জার্সি গরুর আকার সবচাইতে ক্ষুদ্র। বর্তমানে এই জার্সি গরু ইংল্যান্ড, আমেরিকা সহ সারা বিশ্বের প্রায় সব দেশে দেখা যায়। জার্সি গরুর গায়ের রং হয় মেহগনি বা লাল।
জার্সি পূর্ণবয়স্ক গাভীর ওজন হয়ে থাকে ৪০০ থেকে ৫০০ কেজির মত এবং এর ষাঁড়ের ওজন হয়ে থাকে প্রায় ৫৫০ থেকে ৮৫০ কেজি। এর পাশাপাশি জার্সি গরুর বাসরের ওজন হয়ে থাকে প্রায় ২৫ থেকে ৩০ কেজি।
সিন্ধিঃ
সিন্ধি গরুর উৎপত্তি হয় পাকিস্তানের সিন্ধু প্রদেশের করাচি, হায়দ্রাবাদ ও লাসবেলাদে।সিন্ধি গরুর গায়ের রং হয়ে থাকে লাল। এই গরুর গাভীর ওজন হয় ৩৫০ থেকে ৪০০ কেজির মতো এবং ষাঁড়ের রোজার হয়ে থাকে ৪৫০ থেকে ৫০০ কেজি মত। এই গরুগুলো দৈনিক ৮ থেকে ১০ লিটার দুধ দিয়ে থাকে। সিন্ধি গরুর বাছরের ওজন হওয়ায় প্রায় ২২ থেকে ২৪ কেজির মতো।
হলস্টেইন ফ্রিজিয়ানঃ
এই হলস্টেইন ফ্রিজিয়ান গরুর উৎপত্তিস্থল হচ্ছে শীত প্রধান অঞ্চলের হল্যান্ডের ফ্রিজল্যান্ড প্রদেশে। হলস্টেইন ফ্রিজিয়ান গরু গুলি বিশেষ করে দুধের জন্যই বিখ্যাত।এই গরুগুলি নিয়মিত ৪০ থেকে ৪৫ লিটার পর্যন্ত দুধ দিয়ে থাকে। এই গরুগুলোর গায়ের চামড়া হালকা ছোট বড় কালো ছাপযুক্ত। তাছাড়া অনেকটাই সাদা কিংবা কালোও হতে পারে।
হলস্টেইন ফ্রিজিয়ান গরুর গাভীর ওজন হয়ে থাকে ৫৫০ থেকে ৬৫০ কেজি আর ষাঁড়ের ওজন হয়ে থাকে প্রায় ৮০০ থেকে ৯০০ কেজি। এই গরুগুলো ১৮ থেকে ২৪ মাস বয়সে প্রথম গর্ভধারণ করে থাকে। এর সদ্যজাত বছরের ওজন হয়ে থাকে প্রায় ৩০ থেকে ৩৫ কেজি।
শাহীওয়ালঃ
শাহীওয়াল গরুর উৎপত্তি স্থল হচ্ছে পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের মন্টগোমারী জেলায়। এ সমস্ত গরুগুলো ধীর এবং শান্ত প্রভৃতির হয়ে থাকে। এই গরুর গায়ের রং হয় ফ্যাকাশে লাল কিংবা কিছুটা হলুদ। এ সকল গরুগুলি প্রতিবছর প্রায় ২,১৫০ থেকে ৪,০০০ লিটার দুধ দিয়ে থাকে।
এই গরুর গাভীর ওজন হয় ৪৫০ থেকে ৫৫০ কেজির মতো। এবং এদের ষাঁড়ের ওজন হয়ে থাকে প্রায় ৬০০ থেকে ১০০০ কেজি। আর এই গরুগুলির সদ্যজাত বছরের ওজন হয়ে থাকে প্রায় ২৫ থেকে ৩০ কেজির মতো।
থারপারকারঃ
থারপারকার গরুর গায়ের রং হয়ে থাকে সাদা, এবং এ সমস্ত গরুর মাথায় বড় শিং থাকে, দেহ সুগঠিত। এ সকল গরুর গাভী রোজা হয়ে থাকে প্রায় ৪০০ থেকে ৪৫০ কেজি মতো এবং এদের ষাঁড়ের ওজন হয় প্রায় ৫০০ থেকে ৬০০ কেজি। থারপারকার গরুর প্রতিবছর দুধ উৎপাদন ক্ষমতা হচ্ছে ৪,০০০ থেকে ৪,৫০০ লিটার পর্যন্ত।
ব্রাহমাঃ
ব্রাহমা গরুগুলি আসলে সংকর শ্রেণীর জাত। এ সমস্ত গরুগুলি বিশেষ করে মাংসের জন্য খুবই বিখ্যাত। আর্জেন্টিনা, ব্রাজিল, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, কলম্বিয়া, অস্ট্রেলিয়া, প্যারাগুয়ে এবং পানামাই ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। কিন্তু এ সকল গরুর মূল উৎপত্তি স্থল হচ্ছে ভারতীয় উপমহাদেশে।ব্রাহমা গরুগুলি উচ্চ তাপমাত্রা সহনশীল ও পরিবেশের সাথে সহজে ভাব খাইয়ে নিতে পারে।ব্রাহমা গরুর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও অধিক পরিমাণে।
এ সমস্ত গরুর গায়ের রং হয়ে থাকে ধূসর লাল, কালো এবং সাদা। এ সমস্ত গরুর পূর্ণবয়স্ক গাভীর ওজন হয়ে থাকে ৪৫০ থেকে ৬৫০ কেজির মত, এবং এদের ষাঁড়ের ওজন হয়ে থাকে ৮০০ থেকে ১০০০ কেজির মতো। তাছাড়া এ সমস্ত গরুর সদ্যজাত বাছুরের ওজন হয় ৩০ থেকে ৩৫ কেজির মতো।
সংকরঃ
আসলে দুইটি ভিন্ন বিশুদ্ধ জাতের গাভী এবং সারের মিলনে অথবা প্রজন্মে সৃষ্টি নতুন জাতকেই মূলত বলা হয়ে থাকে সংকর জাত। আমাদের দেশের প্রায় সকল গরুই দেশি জাতের হয়ে থাকে। আসলে দেশি জাতের গরু থেকে দুধ মাংস উৎপাদন পাওয়া যায় অনেকটাই কম তবুও এ সমস্ত গরুর কাজ করার ক্ষমতা তুলনামূলকভাবে অনেকটাই বেশি। বিদেশি উন্নত জাতের গাভী থেকে পর্যাপ্ত পরিমাণে দুধ পাওয়া যায়।
তবে এই সমস্ত বিদেশী জাতের গাভী আমাদের দেশে এসে জলবায়ু ও আবহাওয়ায় এবং গ্রাম অঞ্চলগুলোতে লালন পালন একেবারেই উপযুক্ত নয়। সেজন্যই মূলত আমাদের দেশে বিদেশি ও বিদেশী জাতের সংমিশ্রণে সংকর জাতের গরু পালনের উপর গরুর লালন পালনকারীরা অধিক পরিমাণে গুরুত্ব দিয়ে থাকে। তাছাড়া এই সংকর জাতের গাভী বিশেষ করে আমাদের দেশে জলবায়ু ও আবহাওয়া এবং গ্রাম অঞ্চল গুলোতে বিশেষভাবে লালন পালন করার জন্য উপযোগী।
তাছাড়াও, বর্তমান সময়ে আরো কিছু জাতের গরু পালন করা হচ্ছে আমাদের দেশে। উন্নত জাতের এ সমস্ত গরুগুলির পালন করে অধিক মুনাফা অর্জন করা যায়। আমাদের দেশের বিভিন্ন গ্রামগঞ্জে উন্নত জাতের গরুর খামার গড়ে উঠলে সেখানে অনেকের কর্মস্থল ও দারিদ্র দূরীকরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখা যাবে। শুধু তাই নয় এর পাশাপাশি প্রয়োজনীয় দুধ এবং মাংস উৎপাদন সম্ভব হবে অনেকটাই। যেটি আমাদের শরীরে পুষ্টি চাহিদা পূরণে বিশেষ ভূমিকা পালন করবে।
আশা করি আপনি ইতিমধ্যেই জেনে গেছেন, কোন গরু পালনে লাভ বেশি সে সম্পর্কে। আসলে বন্ধু আপনি যেই গরুই পালন করেন না কেন। আপনি যদি সঠিকভাবে গরু পালন না করতে পারেন। তাহলে আপনি যে গরুই পালন করেন না কেন সেখান থেকে আপনি খুব একটি লাভবান হতে পারবেন না। তাই বন্ধু চেষ্টা করুন সঠিকভাবে একটি গরু পালন করার। তবেই আপনি প্রতিবছর অনেক অর্থ উপার্জন করতে পারবেন শুধুমাত্র একটি গরুর মাধ্যমে।
বাছুরকে প্রতিদিন খাওয়াতে কত টাকা লাগে
বাছুরকে প্রতিদিন খাওয়াতে কত টাকা লাগে? আপনি কি এই বিষয়টি জানার জন্য অনেক আগ্রহী। তাহলে আমাদের আর্টিকেলের এই অংশটুকু আপনার জন্য। কারণ আমরা এখানে খুবই সুন্দর ভাবে আলোচনা করেছি বাছুরকে প্রতিদিন খাওয়াতে কত টাকা লাগে সে বিষয়ে। তো চলুন আর দেরি না করে আমরা বিস্তারিত ভাবে জেনে নেওয়ার চেষ্টা করি বাছুরকে প্রতিদিন খাওয়াতে কত টাকা লাগে সে সম্পর্কে।
আরো পড়ুনঃ কালমেঘ পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা
বাছুরকে প্রতিদিন খাওয়াতে কত টাকা লাগে এই বিষয়টি নির্ভর করবে পুরোপুরি আপনার উপর। তবে কিছু নিয়ম আছে এ নিয়মের মাধ্যমে আপনি যদি আপনার বাছুরকে খাওয়াতে পারেন তাহলে আপনার অনেক অর্থ বাজবে। সেজন্য আমরা এখন আপনার সাথে শেয়ার করব কিভাবে আপনি আপনার বাছুরকে খাওয়াবেন। তো চলুন জেনে নিই আপনি আপনার বাছুরকে কিভাবে নিয়মিত খাওয়াবেন।
একটি বাছুর প্রসবের পর পরেই তার মায়ের প্রথম শালদুধ খাওয়াতে হবে। কেননা এতে প্রচুর পরিমানে রোগ প্রতিরোধ উপাদান রয়েছে। একটি বাসরের প্রধান খাদ্যই হচ্ছে শাল দুধ কারণ বাছুর জন্মের পর পরই প্রথম সপ্তাহে দুধ ছাড়া কিছু খেতে পারেনা। একটি বাছুরের ওজনের প্রতি ১০ কেজির জন্য প্রায় ১ কেজি দুধ নিয়মিত খাওয়াতে হবে। যখনই বাচ্চাটির ওজন ৩০ কেজির ওপর হবে তখনই তিন কেজি দুধ সরবরাহ করতে হবে।
বছর দুই সপ্তাহ হয়ে গেলে সামান্য পরিমাণে ঘাস ও দানাদার খাবার দিতে হবে। আর যখনই বাছরের বয়স সাত থেকে আট মাস হয়ে যাবে তখন যথেষ্ট পরিমাণে আমিষ জাতীয় দানাদার খাদ্য দিতে হবে।মূলত ছোবড়াজাতীয় খাদ্য না দিয়ে সহজপচ্য সবুজ ঘাস বাছুরকে খেতে দিলে সব থেকে বেশি ভালো হয়। একটি বাছুরের শারীরিক বৃদ্ধি প্রধানত পরিপাকযোগ্য আমিষ শরবরাহের উপর নির্ভরশীল হয়ে থাকে।
বাছুরের বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে খাদ্যের পরিমাণও বাড়াতে হবে। বছরের বয়স যখনই ১০ মাস বার হবে তখন আপনি যে কোন খাদ্যই তাকে খাওয়াতে পারবেন তবে সেটা হতে হবে আমিষ যুক্ত। এভাবে আপনি যদি নিয়ম কানুন মেনে আপনার বাছুরকে খাওয়াতে পারেন। তাহলে আপনি এক বছরের মধ্যেই বাছুরকে সুন্দরময় করে তুলতে পারবেন। এবং সে বাছুর থেকে আপনি অনেক অর্থ উপার্জন করতে পারবেন।
গরুর খামার পরিকল্পনা
গরুর খামার পরিকল্পনা সম্পর্কে অনেকেই জানতে চাই? মূলত তাদের সঙ্গে আজকে আমরা পরিকল্পনা করবো গরুর খামার নিয়ে। আমরা যদি গরুর খামার পরিকল্পনা বিষয়ে সচেতন হয় তাহলে অবশ্যই অল্প সময়ের মধ্যে আমরা লাভের মুখ দেখতে পাবো খামারে গরু পালন করার মাধ্যমে। তো চলুন আর দেরি কিসের ঝটপট জেনে নেওয়ার চেষ্টা করে গরুর খাবার পরিকল্পনা সম্পর্কে।
আপনার যদি মনে খুব ইচ্ছা হয় একটি গরুর খামার তৈরি করতে তাহলে অবশ্যই আমরা আপনাকে বলব আপনি অল্প কিছু গরু নিয়ে ছোটখাটো একটি খামার দিয়ে শুরু করতে পারেন। কেননা আপনি যদি প্রথমে বড় গরুর খামার তৈরি করেন তাহলে সেক্ষেত্রে আপনি অনেক বিপদের সম্মুখীন হতে পারেন। তাই চেষ্টা করুন কয়েকটি গরু নিয়ে ছোটখাটো একটি খামার তৈরি করে গরু পালন করার।
তাহলে আপনি কয়েক বছরের মধ্যেই খামার সম্পর্কে এবং গরু কিভাবে লালন পালন করতে হয় সে সম্পর্কে একটি স্বচ্ছ ধারণা পেয়ে যাবেন। তারপরে যদি আপনি নিজে নিজে আপনার বাসায় বড় খামার তৈরি করেন তাহলেও কোন সমস্যা হবে না। সে ক্ষেত্রে আপনি অনেক ঝুঁকি থেকে মুক্তি পাবেন। কারণ আমরা অনেক সময় দেখেছি বিভিন্ন মানুষ হঠাৎ করে একটি বড় গরুর খামার দিয়ে বসে।
কিন্তু তাদের খামার সম্পর্কে সঠিকভাবে ধারণা না থাকায়, বা কিভাবে খামারে গরু লালন পালন করতে হয় সে সম্পর্কে না জানায়। খুব তাড়াতাড়ি তারা ঝরে পড়ে। তাই বন্ধু গরুর খামার পরিকল্পনা হিসেবে আপনাকে বলতে চাই আপনি একটি ছোট খামার দিয়ে শুরু করুন। এবং সে খামার আপনি আস্তে আস্তে বড় করার চেষ্টা করুন। সেক্ষেত্রে আপনি একটি গরুর খামার থেকে গরু পালন করে অনেক অর্থ উপার্জন করতে পারবেন।
আপনার বাসা গ্রামে বা শহরে যেখানে হোক না কেন সেখানে আপনি একটি ছোট খামার দিয়ে গরু পালন শুরু করতে পারেন। আমাদের দেশে এখন গরুর খামার করে অনেক অর্থ উপার্জন করছে এবং প্রতিনিয়তই গরুর খামার বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাই আপনি নিঃসন্দেহে একটি গরুর খামার তৈরি করতে পারেন।আশা করি কয়েক বছরের মধ্যে আপনি গরুর ব্যবসাকে সুন্দরভাবে বড় পর্যায়ে নিয়ে যেতে পারবেন এবং প্রতিবছর অনেক অর্থ উপার্জন করতে পারবেন।
গরুর খামার কিভাবে শুরু করতে হয়
গরুর খামার কিভাবে শুরু করতে হয়? তা আমরা অনেকেই জানিনা। তাই আপনিও যদি না জানেন গরুর খামার কিভাবে শুরু করতে হয় তাহলে আর্টিকেলের এই অংশটুকু আপনার জন্য। কারণ আমরা এখানে খুবই সুন্দরভাবে আলোচনা করেছি গরুর খামার কিভাবে শুরু করতে হয় তা সম্পর্কে। তো চলুন আর দেরি না করে আমরা বিস্তারিতভাবে জেনে নেওয়ার চেষ্টা করি গরুর খামার কিভাবে শুরু করতে হয় সে বিষয়ে।
আসলে বন্ধু গরুর খামার অনেকেই অনেক ভাবেই তৈরি করে থাকে তবে আমরা এখানে এমন কিছু কৌশল আপনার সাথে শেয়ার করব সে কৌশল মেনে চলে আপনি যদি গরুর খামার তৈরি করতে পারেন তাহলে কয়েক বছরের মধ্যে অনেক অর্থ উপার্জন করতে পারবেন। তো আর দেরি কিসের আমরা এখনই জেনে নিই লাভজনক গরুর খাবার কিভাবে শুরু করতে হয় সে সম্পর্কে। ছয়টি উপায়ে আপনি আপনার লাভজনক গরুর খাবার শুরু করতে পারবেন।
১। আপনি যখনই খামার শুরু করবেন তার আগে অবশ্যই তিন থেকে ছয় মাস মেয়াদে যুব উন্নয়ন অথবা বেসরকারিভাবে ট্রেনিং নিবেন। তাছাড়া আপনি প্রাণী সেবা হাসপাতালে সাপ্তাহিক এবং মাসিক ট্রেনিং গুলোতে যোগ দেওয়ার চেষ্টা করতে পারেন। কিন্তু আপনি একদিনে ট্রেনিং করে সব শিখতে চাইলে আপনার অনেক ক্ষতি হতে পারে। কারণ খামার বিষয়ক তথ্য গুলি একদিনে শিখা সম্ভব হবে না।
২। আপনি যদি গরুর ঠিকঠাক মতো যত্ন নিতে চান তাহলে আপনাকে অবশ্যই সঠিক সময় খাদ্য দিতে হবে। আপনি আপনার গরুকে যে খাদ্য খাওয়াবেন দুই বেলা কাঁচা ঘাস, খর, দানাদার এবং পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি। এর মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন কোম্পানির রেডি ফিট তো সেক্ষেত্রে ফিল্ড না দিয়ে নিজে খাদ্য তৈরি করতে পারেন এতে করে আপনার খরচ অনেকটাই কমে যাবে এর পাশাপাশি আপনি ভালো খাদ্যও তৈরি করতে পারবেন।
৩। গরুকে ওষুধ খাওয়ানোর নিয়ম সম্পর্কে সঠিকভাবে জানা খুবই জরুরী। কেননা শ্বাসনালীতে ওষুধ গেলে আপনার গরু মারা যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে অনেকটাই। সেক্ষেত্রে আপনার গরুকে ওষুধ খাওয়ানোর সবচাইতে নিরাপদ উপায় হচ্ছে আব্দুর সাথে অথবা পানির সঙ্গে মিশিয়ে।
৪। আপনার আশেপাশে যদি পরিচিত খামার থাকে তাহলে সেই খামারে কিছুদিন সময় দিন।এবং সেই খামারে গিয়ে খেয়াল করুন তাদের কাজকর্ম করে। সেই খাবার মালিক কিভাবে তার গরু গুলোকে খাদ্য দেয় কখন গোসল করায় এবং কোন সময় খামার পরিষ্কার করে। অবশ্যই চেষ্টা করুন চিকিৎসকের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক তৈরি করার, এবং জেনে নিন কোন কোন রোগে কি কি চিকিৎসা গরুকে দিতে হয় সে বিষয়ে।
৫। আরেকটি বিষয়ে আপনার জানা খুবই জরুরী সেটা হল রোগে খামারে গরুর যে সমস্যাগুলি বেশি হয়ে থাকে সে বিষয়ের সমাধানের উপায় সম্পর্কে। সাধারণত গরুর জ্বর সর্দি খাবারের কম রুচি, পেট ফাঁপা, ব্যথা পাওয়া, হিটে আসার লক্ষণ, ডায়রিয়া এবং বীজ দেওয়ার সঠিক সময় সকল ছোটখাটো বিষয়গুলি জানা খুবই জরুরি।
৬। আপনার খামারে গরু অসুস্থ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে যত দ্রুত পারেন চিকিৎসার ব্যবস্থা নিতে হবে।তাছাড়া প্রতি সপ্তাহে গরুর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করার চেষ্টা করুন। এবং প্রতিনিয়ত গরুর খাবারের দিকে ভালো নজর দিন।
এই ছয়টি তথ্য মূলত আমরা কৃষি তথ্য সার্ভিস থেকে সংগ্রহ করেছি। এই বিষয়গুলি যদি আপনার খামারে আপনি অবলম্বন করতে পারেন। তাহলে আপনি অবশ্যই লাভজনক ব্যবসা খুব তাড়াতাড়ি দ্বার করাতে পারবেন।
গরুর খামারের লাভ কেমন
গরুর খামারের লাভ কেমন আপনি কি তা জানেন?। যদি না জানেন তাহলে কোন সমস্যা নেই আমরা এখনই আপনাকে জানাবো গরুর খামারের লাভ কেমন সে সম্পর্কে। বর্তমান সময়ে আমাদের দেশে বহু মানুষ শুধুমাত্র গরুর খামারের মাধ্যমে অনেক অর্থ উপার্জন করছে। যদি বলি তা লাখ টাকাও ছাড়িয়ে যাচ্ছে শুধুমাত্র খামারের মাধ্যমে গরু পালন করে। তাহলে বন্ধু আপনিও যদি চান আপনিও পারবেন একটি গরুর খামার দিয়ে প্রতি মাসে লাখ টাকা ইনকাম করতে।
কেউ যদি লাভজনক ব্যবসা খুঁজে তাহলে আমরা তাদেরকে বলব অবশ্যই তারা যেন গরুর ব্যবসা শুরু করে। একটি মানুষ যদি জীবনে একটু বেশি অর্থ রোজগার করতে চাই তাহলে তাকে অবশ্যই একটু মূলধন ও পরিশ্রম বেশি দিতে হবে। বিশেষ করে যারা খুবই খুঁজাখুঁজি করছেন লাভজনক ব্যবসা নিয়ে, তারা নিঃসন্দেহে গরুর খামার ব্যবসাটিকে বেছে নিতে পারেন।
বিশেষ করে আমাদের দেশে গরুর চাহিদা প্রচুর পরিমাণে রয়েছে এবং দিনের পর দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।আপনি গরুর খামার দিয়ে সাধারণত দুধের ব্যবসা করতে পারেন। শুধু তাই নয় এর পাশাপাশি বায়োগ্যাস, গোবর এবং শেষে গরু বিক্রি করার মাধ্যমে ব্যবসা করতে পারবেন।তাছাড়া আপনি চাইলে গরুর দুধ দিয়ে মাখন ঘি এবং পানির তৈরি করে বিক্রি করতে পারবেন।
কেউ যদি পাঁচ লক্ষ টাকা দিয়ে গরুর খামার তৈরি করতে পারে এবং সেখানে গরু পালন করতে পারে তাহলে সে অনেক অর্থ খামার থেকে প্রতি মাসে বা বছরে উপার্জন করতে পারবে। তো চলুন আপনাকে এক নজরে দেখিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করি দৈনিক আপনি কিভাবে আপনার গরু থেকে অর্থ উপার্জন করতে পারবেন খুব সহজে।
ধরুন, আপনার একটি গাভী গরু আছে সেই গরুটি দৈনিক ২০ লিটার দুধ দিয়ে থাকে! ধরুন প্রতি লিটার দুধের দাম হচ্ছে ৬০ টাকা করে তাহলে হিসাবটি হচ্ছেঃ
৬০*২০ = ১,২০০ টাকা।
ধরুন, আপনার গাভিটির দৈনিক খাদ্য খরচ লাগে ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা। সেক্ষেত্রে আপনার দৈনিক লাভ থাকবে।
১,২০০-৩৫০ = ৮৫০ টাকা।
তাহলে আপনার যদি প্রত্যেকদিন ৮৫০ টাকা করে লাভ হয় তাহলে মাসে ৮৫০*৩০ = ২৫,৫০০ টাকা। যেটি আমাদের দেশের সাধারণ চাকরি থেকে অনেকটাই বেশি। আপনি যদি এই হিসাবটি বছরের হিসাব করেন তাহলে কত অর্থ দাঁড়াবে সেটি একবার চিন্তা করুন। এভাবে যদি আপনি কয়েক বছর ব্যবসা করেন তাহলে আপনি আপনাকে কোথায় নিয়ে দাঁড় করাতে পারবেন সেটা কি বুঝতে পেরেছেন।
তাই বন্ধু, আপনার সময় গুলো অযথা নষ্ট না করে আপনি গরুর খামারের ব্যবসায় লেগে পড়ুন। আপনি কয়েক বছরের মধ্যেই আপনার গরুর খামারের ব্যবসাকে অনেক বড় জায়গাতে নিয়ে যেতে পারবেন।এবং আপনার অর্থ নিয়ে কোন প্রকার টেনশন করা লাগবে না। আপনি যেকোনো সময় অনেক অর্থ উপার্জন করতে পারবেন শুধুমাত্র আপনার একটি গরুর খামার থেকে। আশা করি আপনি এতক্ষণে বসতে পেরেছেন, গরুর খামারের লাভ কেমন তা সম্পর্কে।
লেখকের মন্তব্যঃ কোন গরু পালনে লাভ বেশি | গরুর খামার কিভাবে শুরু করতে হয়
প্রিয় পাঠক, এতক্ষণ আমাদের সাথে থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আপনি নিশ্চয়ই এতক্ষণে জেনে গেছেন, কোন গরু পালনে লাভ বেশি এবং গরুর খামার কিভাবে শুরু করতে হয় তা সম্পর্কে। আমরা যেহেতু অনেকেই গরু লালন পালন করে থাকে, সেহেতু আমাদের প্রত্যেকেরই উচিত উক্ত বিষয়গুলি সম্পর্কে বিস্তারিত ভাবে জানার। তবে আপনার যদি কোথাও কোন কথা বুঝতে সমস্যা হয় তাহলে অবশ্যই আমাদেরকে কমেন্টে জানিয়ে দেবেন,
আমরা যত দ্রুত পারি আপনাকে সমাধান দেওয়ার চেষ্টা করব। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনার কাছে অনেক ভালো লেগেছে এবং এই আর্টিকেলটি আপনার অনেক উপকারে আসবে। তাই এই আর্টিকেলটি আপনার কাছে ভালো লেগে থাকলে আপনি অবশ্যই আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে ভুলবেন না, কেননা আপনার মাধ্যমে আপনার বন্ধুরাও জানতে পারবে কোন গরু পালনে লাভ বেশি - গরুর খামার কিভাবে শুরু করতে হয় তা সম্পর্কে।
আর অবশ্যই আমাদের এই ওয়েবসাইটে নিয়মিত ভিজিট বা ফোলো করার চেষ্টা করবেন। কারণ আমরা এই ওয়েবসাইটে নিয়মিত নতুন নতুন ব্লগ পোস্ট বা আর্টিকেল পাবলিশ করে থাকি। নিজে ভালো থাকবেন পরিবারকে ভালো রাখার চেষ্টা করবেন, আসসালামু আলাইকুম।
সাগর ম্যাক্স এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url