সকালে খালি পেটে টমেটো খাওয়ার উপকারিতা - গর্ভাবস্থায় টমেটো খাওয়ার উপকারিতা

টমেটো এমন একটি সুস্বাদু ও পুষ্টিকর সবজি, যা শীতকালীন সবজি হলেও এখন সারা বছর পাওয়া যায়। কাঁচা কিংবা পাকা দু'ভাগেই টমেটো খাওয়া যায়। খাবারের স্বাদ বাড়াতে টমেটোর জুড়ি মেলানো প্রায় অসম্ভব। অনেকে আবার সালাদে টমেটো খেতে খুবই পছন্দ করে থাকেন। শুধু খাবারে স্বাদই বাড়ায় না, টমেটো থেকে তৈরি হয় নানা ধরনের কেচাপ বা সস।
সকালে খালি পেটে টমেটো খাওয়ার উপকারিতা - গর্ভাবস্থায় টমেটো খাওয়ার উপকারিতা
টমেটোতে পুষ্টিগুণে ভরপুর থাকে, কাঁচা বা রান্না করে, জোশ, মিষ্টি চাটনি, টক বা নোনতা যে কোন উপায়ে এটি খাওয়া যায়। বিভিন্ন তরকারি তৈরিতে কিংবা সালাদ হিসেবে টমেটো প্রতি বাঙালির বাড়িতে ব্যবহার হয়ে থাকে। তাই আমাদের এই পোস্টটিতে টমেটো সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য আপনাদের সামনে তুলে ধরা হল।
পোস্ট সূচিপত্রঃ

ভূমিকা | সকালে খালি পেটে টমেটো খাওয়ার উপকারিতা

টমেটো এমন একটি ফল যা আমরা সাধারণত সবজি হিসেবেই খাই। এই টমেটোতে পুষ্টিগুণে ভরপুর রয়েছে। কাঁচা বা রান্না করে, জুস, সস, মিষ্টি চাটনি, টক বা নোনতা যেকোনো উপায়ে এটি খাওয়া যেতে পারে। বিভিন্ন তরকারি তৈরিতে কিংবা সালাদ হিসাবে টমেটো প্রতি বাঙালির বাড়িতে ব্যবহার হয়ে থাকে। কিন্তু এটা কি জানেন, এই রোজকার টমেটো খাওয়ার ফলে আপনার শরীরে কেমন প্রভাব পড়তে পারে?
টমেটোতে বিভিন্ন আশ্চর্যজনক উপকারিতা রয়েছে, যা রান্নায় স্বাদ এবং রং আনতে অবশ্যই টমেটোর জুড়ি মেলা ভার। কিন্তু তার পাশাপাশি টমেটো পটাশিয়ামের ঘাটতি পূরণ করে থাকে। এছাড়াও টমেটোতে রয়েছে ভিটামিন সি, বি৩, বি৬, বি৭, কে এবং এন্টিঅক্সিডেন্ট লাইকোপেন। টমেটোতে আরো অনেক গুনাগুন রয়েছে সেই গুণাগুণ গুলো চলুন জেনে নেওয়া যাক।

টমেটোর পুষ্টিগুণ

টমেটোর গুণের কথা সবারই জানা দরকার, এক কাপ বা ১৯০ গ্রাম টমেটোতে আছে ৪০ শতাংশ ভিটামিন সি, ৩৫ শতাংশ ভিটামিন এ, ২০ শতাংশ ভিটামিন কে, ১৫ শতাংশ পটাশিয়াম ও ১০ শতাংশ ম্যাঙ্গানিজ। এছাড়াও আছে ভিটামিন ই, লৌহ, ফলেট ও আঁশ। এত গুণের কারণে এই মৌসুমে প্রতিদিন সালাদের সঙ্গে টমেটো খাওয়া আপনার জন্য অনেক কার্যকরী হবে।
এবং প্রতি ১০০ গ্রাম কমিটিতে রয়েছে- খাদ্য শক্তি ১৮ কিলোক্যালরি, আমিষ০.৮, শর্করা ৩.৮ গ্রাম, ফাইবার ১.৫ গ্রাম, চর্বি ০. ৩ গ্রাম, কোলেস্টেরল ০ মিলিগ্রাম, ভিটামিন এ ৮৩৯ আইইউ, লাইকোপেন ২৬৭০ মাইক্রগ্রাম, ভিটামিন সি ১৩ মিলিগ্রাম, পটাশিয়াম ২৫৫ মিলিগ্রাম, ক্যালসিয়াম ১০ মিলিগ্রাম, সোডিয়াম ৭ মিলিগ্রাম, ম্যাগনেসিয়াম ১৫ মিলিগ্রাম, ফসফরাস ২৮ মিলিগ্রাম, লৌহ ০.৫ মিলিগ্রাম, জিংক ০. ২০ মিলিগ্রাম।

টমেটো খাওয়ার নিয়ম

টমেটো এমন একটা ফল যা পছন্দ করেনা এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া মুশকিল। কেউ এটাকে সবজি হিসেবে খায় আবার অনেকেই টমেটো খায় ফল হিসাবে। তবে টমেটো কিন্তু দুই ভাগেই উপভোগ করা যায়। শীতকালীন বাজারে ব্যাপক হারে টমেটো পাওয়া যায়, ওই সময় টমেটোর কদর অনেকটাই কমে যায়।

তবে বছরের অন্য সময় কিন্তু অল্পবিস্তর পাওয়া টমেটোর চাহিদা যেমন বেশি, তাই দাম একটু বেশি থাকে। সচরাচর টমেটো সবজি হিসেবে অন্য সবজির সঙ্গে রান্না করে খাওয়া যায়। এছাড়া সালাদ হিসেবেও খাওয়া যায়। এবং টমেটো সস অনেকেরই পছন্দ। ইদানিং প্যাকেট জাত টমেটো সস সারা বছর পাওয়া যায়।

রেস্তোরাঁতে তো টমেটো সসের নামে নকলের প্রচলন আছে। তবে আমাদের মধ্যে এক শ্রেণীর মানুষ টমেটোকে আপেলের মতো করে খেয়ে থাকেন। তারা টমেটোকে ফল হিসাবে ভাবতে চান। সে যাই হোক না কেন টমেটোর চাহিদা যে অনেক উপরে তা নিয়ে বলার অবকাশ নেই। কিন্তু টমেটো খাওয়ার কিছু সঠিক নিয়ম রয়েছে। আসুন জেনে নেয়া যাক সেই নিয়ম গুলো।

প্রথমে টমেটো তুলে নিন

টমেটো তুলতে হবে একেবারে গাছ থেকে। সেটা মাঠ থেকে তুললেও হবে না, গাছটি হতে হবে আপনার নিজ হাতে লাগানো। সেটা হতে পারে বাড়ির পাশের অল্প বস্তুর পড়ে থাকা জায়গা কিংবা ছাদের বাগানে। কারণ, বাজারে এমন কোন টমেটো পাওয়া যায় না যে টমেটোতে রাসায়নিক ব্যবহার করা হয়নি। সে কারণে জমি থেকে সরাসরি তুলে নিয়ে আসলেও সেটা আপনার লাগানো গাছ প্রাকৃতিকভাবে কল দিলে যে রকম হবে, সেটা তার মত হবে না।

টমেটো কেটে নিন

টমেটো ভালো করে কেটে নিন। এরপর তাদের লবণ মেশান। তবে বাড়িতে থাকা লবণ হলে চলবে না। লবণটা হতে হবে সামুদ্রিক। কারণ, টমেটো খাওয়ার জন্য ওই লবণের বিকল্প কিছু নেই।

এবার টমেটো খান

এবার আপনি টমেটো খেতে পারেন, টমেটো খাওয়ার সময় পরিবারের অন্যদের সঙ্গে বসার কোন দরকার নেই। কারণ, টেলিভিশন দেখতে দেখতে কিংবা স্মার্টফোন ব্যবহার করার সময়, অথবা পরিবারের অন্যদের সঙ্গে কথা বলতে বলতে এর মজা উপলব্ধি করা যায় না।

সকালে খালি পেটে টমেটো খাওয়ার উপকারিতা

প্রতিদিন সকালে খালি পেটে একটি বা দুটি করে টমেটো যদি আপনি খেতে পারেন, তাহলে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে অনেক ইতিবাচক ভূমিকা রাখতে সহযোগিতা করবে। এবং একটা বা দুইটা টমেটো খেলে রক্তস্বল্পতার সমস্যা অনেকটাই দূর হতে পারে। সর্দি কাশি প্রতিরোধও টমেটো দেহের জন্য বেশ কার্যকর।

টমেটোতে ভিটামিন সি, লাইকোপিন, ভিটামিন কে, পটাশিয়াম পর্যাপ্ত পরিমাণে পাওয়া যায়।এবং এর পাশাপাশি এতে রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণে কোলেস্টেরল কমানোর উপাদান। আমাদের মধ্যে যারা ওজন কমাতে চান তাদের জন্যও এটি খুবই উপকারী, তবে টমেটোর সবচেয়ে বড় বৈশিষ্ট্য হল টমেটো রান্না করার পরেও এর পুষ্টিগুণ সম্পন্ন বজায় থাকে।

এবং খাবারে টমেটোর বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। সবজি হিসাবে সালাদে, স্যুপ হিসাবে, এবং চাটনি হিসেবে এমনকি সৌন্দর্যপূর্ণ হিসেবে ব্যবহৃত হয়। সকালে খালি পেটে পাকা টমেটো খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য খুবই ভালো। শিশুর শুষ্ক রোগ হলে তাকে প্রতিদিন এক গ্লাস টমেটোর রস খাওয়ালে রোগ উপশম হয়। টমেটো শিশুদের মানসিক ও শারীরিক বিকাশের জন্য খুবই উপকারী।

স্থূলতা কমাতেও টমেটো ব্যবহার করা যেতে পারে। প্রতিদিন এক থেকে দুই গ্লাস টমেটোর রস পান করলে ওজন খুব তাড়াতাড়ি কমানো সম্ভব। বাতের রোগেও টমেটো খুব উপকারী তাই প্রতিদিন সকালে খালি পেটে টমেটোর রসে ক্যারাম বিষ মিশিয়ে খেলে বাতের ব্যথা থেকে উপশরম পাওয়া যায়। গর্ভাবস্থায় টমেটো খাওয়া খুব উপকারী।

এটি ভিটামিন সি সমৃদ্ধ রয়েছে, যা গর্ভবতী মহিলাদের জন্য ভালো। পেটে কৃমি হলে সকালে খালি পেটে টমেটো সঙ্গে কালো গোলমরিচ মিশিয়ে খেলে উপকার পাওয়া যায়। নুন মিশিয়ে কাঁচা টমেটো খেলে মুখে লাল ভাব দেখা দেয়। মুখে টমেটোর পাল্প ঘোষার মাধ্যমে ত্বকের উন্নতি ঘটানো সম্ভব। খালি পেটে নিয়মিত টমেটো খাওয়া ডায়াবেটিসে অনেক উপকারী। এতে চোখের আলো বাড়ে। এর পাশাপাশি এটি ত্বকের নানা ধরনের সমস্যায় কার্যকর।

টমেটো খেলে কি ওজন কমে

অনেক স্বাস্থ্য গবেষকেরা বলেছেন যে টমেটো খাওয়ার মাধ্যমে বাড়তি ওজন কমানো সম্ভব। দেহের অতিরিক্ত মেদ ঝরাতে ডায়েটে টমেটোকে রাখতেই হবে। টমেটোর মধ্যে থাকা অ্যামিনো এসিড মেয়েদের ঝরাতে সাহায্য করে থাকে। টমেটোতে থাকা ভিটামিন সি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা যেমন বাড়ায় পাশাপাশি আমাদের চোখের দৃষ্টি শক্তি বাড়াতেও সক্ষম হয়।

টমেটোতে ক্যালরির পরিমাণ খুব কম।একটি মাঝারি আকারে টমেটোর ক্যালরি মোট ১৫। তাই দুপুরে আর রাতে ভাতের পরিমাণ কমিয়ে দিয়ে দুটি করে টমেটোর সালাদ আপনি খান। পেটেও ভরবে, মেদো বাড়বে না। টমেটোর মধ্যে প্রচুর পরিমাণ সলিউবল ও ইনসলিউবল ফাইবার থাকে। যা ওজন কমানোর জন্য আমাদের দেহে অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।

ক্রোমেটর মধ্যে ন্যাচারাল সুগার থাকলেও গ্লাইসেমিক ইনডেক্স লো। হলে রক্তে শর্করার মাত্রা যেমন বাড়বে না, তেমনি ইনসুলিনের প্রভারে শরীরে মেদ জমবে না। টমেটোতে ফাইবারের পাস অপাশি থাকে প্রচুর পরিমাণে পানি। তাই শরীরের আদ্রতা রক্ষায় এর কোন জুড়ি নেই। এছাড়া পানির পরিমাণ বেশি থাকায় এটি পেট দীর্ঘক্ষণ ভরা রাখতেও সহযোগিতা করে।

হঠাৎ করে ক্ষুধা লাগলে অনেকেই সিঙ্গারা বা ফ্রেঞ্চফ্রাই বার্গারে পেট ভরান। রাস্তার ঝালমুড়ি, চানাচুর মাখা তো রয়েছে, আর এতেই নিজের অজান্তেই বাড়তে থাকে ওজন। এসবের বদলে গোটা দুই টমেটোর সালাদ, স্যুপ বা জুস খেলেও কিন্তু শরীর থাকে ফিট। তাছাড়া দূষণের এই সময়ে টমেটোর এন্টিঅক্সিডেন্ট শরীরকে রাখে ভেতর থেকে জীবাণুমুক্ত।

টমেটো খেলে কি গ্যাস হয়

তোকে এলার্জির সমস্যা থাকলে টমেটো খাওয়া উচিত নয়। গ্যাস ও অম্বল, টমেটো খেলে গ্যাস ও এসিডিটির (Gas And Acidity) সমস্যা বাড়তে পারে. সেক্ষেত্রে আপনি অম্বলের রোগী হলে টমেটো খাওয়া থেকে আপনাকে দূরে থাকতে হবে। টমেটো খেলে পেট ব্যথার সমস্যাও বাড়তে পারে আপনার। অবশ্যই পরিমিত টমেটো খেতে হবে, কারণ টমেটোতে থাকা বিভিন্ন উপাদান হজমের সমস্যা থেকে শুরু করে কিডনির রোগ পর্যন্ত হতে পারে। বেশি টমেটো খাওয়ার কয়েকটি পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে চলুন জেনে নেওয়া যাক।
  • টমেটোতে রয়েছে ম্যালিক ও সাইট্রিক এসিড। যা পাকস্থলীতে অতিরিক্ত এসিড বা অম্লের প্রবাহ সৃষ্টি করে থাকে। এই কারণে আমাদের দেহে গ্যাস্টিকের সমস্যা বেড়ে যায়।
  • যারা পেটের পীরাই ভোগেন, তাদের অতিরিক্ত টমেটো খাওয়া থেকে দূরে থাকা উচিত টমেটোতে ভিস্টামিন নামের এক ধরনের উপাদান আছে, যা থেকে ত্বকে এলার্জির সৃষ্টি করে। টমেটো অতিরিক্ত খেলে মুখ, জিব্বা ও মুখের ফোলাভাব, হাঁচি, গলার জালা ইত্যাদি মারাত্মক লক্ষণ দেখা দিতে পারে।
  • অতিরিক্ত টমেটো খেলে কিডনিতে পাথর হতে পারে। কারণ টমেটোতে আছে ক্যালসিয়াম ও অক্সালেট। যা সহজেই শরীর থেকে বের হয় না। এগুলো শরীরে জমা হতে শুরু করলেই কিডনিতে পাথর জমে।
  • বেশি মাথায় টমেটো খেলে পেটে বাতঁ দেখা দিতে পারে, কারণ এতে ছোলা নিন নামক বিশেষ অ্যালকালয়েড থাকে। এ যৌগ কোষে ক্যালসিয়াম তৈরির জন্য দায়ী। এ যৌগের পরিমাণ বেড়ে গেলে আস্তে আস্তে তা প্রদাহ তৈরি শুরু করে।
  • টমেটোতে সালমোলেনা নামের এক ধরনের ব্যাকটেরিয়া থাকতে পারে। এটি ডায়রিয়ার জন্য দায়ী।
  • টমেটোতে থাকা লাইকোপেন অতিরিক্ত মাত্রায় শরীরে জমা হলে লাইকোপিনোডার্মিয়া নামের এক ধরনের সমস্যা দেখা দেয়। রক্তে লাইকোপেন বেড়ে গেলে রক্তের রং বদলাতে শুরু করে। প্রতিদিন ৮০ মিলিগ্রামের বেশি লাইক ও পেমেন্ট গ্রহণ করা উচিত নয়।

টমেটো মুখে মাখার উপকারিতা

আপনি প্রতিদিনের ত্বক পরিচর্যায় টমেটো ব্যবহার করলে নানা উপকার পাবেন। এটা কেবল ত্বক উজ্জ্বলি রাখেনা পাশাপাশি ত্বক সুস্থ ও সুন্দর এবং মসৃণ রাখতেও সাহায্য করে। রূপচর্চা বিষয়ক একটি ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে ত্বকের যত্নে টমেটোর নানাবিধ ব্যবহার সম্পর্কে জানানো হল।

তৈলাক্ত ভাব কমায়

তৈলাক্ত ত্বকের উচিত ছিটে ভাব কমাতে ও ত্বককে সুস্থ রাখতে টমেটো ব্যবহার করা উপকারী। এটা ত্বকে তেলের উৎপাদন কমায় এবং বাড়তি চিটচিটে ভাব দূর করে।

পরামর্শ

একটা টমেটো কেটে দুই টুকরা করে তার সারা মুখে মালিশ করুন ৫ থেকে ১০ মিনিট অপেক্ষা করে পরিষ্কার পানি দিয়ে তা ধুয়ে নিন।

আদ্রতা দূরে রাখে

টমেটো ত্বকের তৈলাক্ত ভাব কমায় মানে এই নয় যে, একটা ত্বক শুষ্ক করে ফেলে। টমেটো ত্বকের প্রাকৃতিক তেল ধরে রাখে। ফলে আদ্রতা বজায় থাকে। আর ফুটে উঠে প্রাকৃতিক উজ্জ্বল ভাব।

পরামর্শ

টমেটো ও অ্যালোভেরা এর সঙ্গে মিশিয়ে ময়েশ্চারাইজার হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন।

মৃত কোষ দূর করে

টমেটোতে থাকা এনজাইম ত্বক এক্সফলিয়েট ট করে মৃত কোষ এবং ব্লাক ড্রেস দূর করে। যাদের ত্ব ক সংবেদনশীল ও ব্রণপ্রবণ তাদের ত্বক এক্সফলিয়েট পড়তে এবং মসিন্যভাব বজায় রাখতে টমেটো সহায়তা করে।

পরামর্শ

টমেটো বাদামী চিনি একসঙ্গে মিশিয়ে শরীরের জন্য স্ক্রাব তৈরি করে ব্যবহার করুন। মুখে ব্যবহার করতে চাইলে কেবল টমেটোর ভেতরের অংশের ব্যবহার করতে পারেন। টমেটোতে চিনি ভালোভাবে মেশানোর জন্য ব্যবহারের 10 মিনিট আগে প্যাক তৈরি রাখুন।

ব্রণ কমায়

বর্তমানে প্রাপ্তবয়স্কদের ত্বকে "এডাল্ট এক মি দেখা" যাচ্ছে। তৈলাক্ত ত্বকে ময়লা ও ব্যাকটেরিয়া বসে যায়। ফলে লোমকূপ বন্ধ হয়ে দেখা দেয় ব্রণ। অন্যদিকে, শুষ্ক ত্বকে দেখা দেয় মৃত কোষ, জাতকের তেল আটকে রাখে। ফলে দেখা দেয়" ব্রেক আউট"। টমেটো ত্বক পরিষ্কার করার পাশাপাশি ত্বকের স্বাস্থ্য ভালো রাখে এবং প্রাকৃতিকভাবে ব্রণ দূর করে থাকে।

পরামর্শ

ব্রণের সমস্যা দূর করতে টমেটোর রসের সঙ্গে তিন চার ফোঁটা টি ট্রিয়ের তেল মিশিয়ে নিন।

ত্বকের জ্বালাপোড়া কমানো

ঘন ঘন মেকআপ ব্যবহার, অনেকক্ষণ রোদে পোড়া, দীর্ঘদিন ব্রণ বিরোধী পণ্য ব্যবহারের কারণে ত্বকে জলনে দেখা দিতে পারে। টমেটোর কয়েকটি প্রদাহ উপাদান যেমন- ব্যাটা ক্যারোটিন, লুটেইন, ভিটামিন ই, সি এবং লাইক করবেন সমৃদ্ধ যা প্রদাহ ও অস্বস্তি কমাতে সাহায্য করে।

পরামর্শ

টমেটো ও চোষা একসঙ্গে মিশিয়ে প্যাক তৈরি করে ত্বকে ব্যবহার করলে জ্বালাপোড়া ভাব কমাতে অনেকটাই সহযোগিতা করে থাকে।

গর্ভাবস্থায় টমেটো খাওয়ার উপকারিতা

গর্ভাবস্থায় টমেটো খাওয়া খুব উপকারী। এটি ভিটামিন সি সমৃদ্ধ, যা গর্ভবতী মহিলাদের জন্য ভালো। পেটে কৃমি হলে সকালে খালি পেটে টমেটোর সঙ্গে কালো গোলমরিচ মিশিয়ে খেলে উপকার পাওয়া যায়। এবং নুন মিশিয়ে কাঁচা টমেটো খেলে মুখে লাল ভাব দেখা দেয়। টমেটো কার্বোহাইড্রেটের একটি ভালো উৎস।

কার্বোহাইড্রেট গর্ভবতী মহিলাদের অলসতা কাটাতে এবং হজম সিস্টেমকে সর্বতম স্তরে কার্যকর রাখতে সহায়তা করে। কার্বোহাইড্রেটগুলি ভ্রূণেরব স্বাস্থ্যকর বিকাশের সহায়তা করে। টমেটোতে ভিটামিন সি এবং ভিটামিন এ রয়েছে। ভিটামিন সি আয়রন শোষণকে সহায়তা করে, অন্যদিকে ভিটামিন এ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী করে, সংক্রমনের বিরুদ্ধে লড়াই করে।

এবং প্রসবের পরে টিস্যুর মেরামত কে উৎসাহ দেয়। টমেটোর ফাইবার যুক্ত উপাদানগুলি হজম সিস্টেমকে স্বাস্থ্যকর এবং মজবুত রাখতে পারে। টমেটোতে পাওয়া একটি শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট হলো লাইকোপেন, যা শিশুদের কোষের ক্ষয়, প্রিক্ল্যাম্পসিয়া এবং জন্মগত অক্ষমতা প্রতিরোধ করে। তাছাড়া হাটকে স্বাস্থ্যকর রাখে,

নিকোটিনিক এসিড খারাপ কলেস্টরল রাস করে এবং গর্ভাবস্থায় হাটকে সুস্থ রাখতে সহায়তা করে। রক্ত সঞ্চালন উন্নত করে, এবং টমেটো রক্তকে বিশুদ্ধ করতে শরীরের বিভিন্ন অংশের সঞ্চালন উন্নত করতে পারে। ক্যান্সার প্রতিরোধ করে, লাইকোপেন ক্যান্সার সৃষ্টিকারী র‌্যাডিক্যালগুলির বিরুদ্ধেও লড়াই করতে পারে, ফলে গর্ভবতী মহিলাদের জলবায়ু ক্যান্সার, মলদ্বারের ক্যান্সার ইত্যাদি থেকে রক্ষা করে।

নিয়মিত টমেটো খাওয়া বর্গকালীন ডায়াবেটিসের চাপকে কমায়। টমেটোতে থাকা উচ্চ পরিমাণের ভিটামিন সি ভ্রমণের ত্বক, হার, মারি এবং দাঁত গঠনে সহায়তা করে। টমেটোতে প্রচুর পরিমাণে জল থাকে বলে তারা মূত্রত্যাগকে উদ্দীপিত করে। এবং মূত্রনালের সংক্রমণের প্রকোপকে হ্রাস করে ফেলে।

পাকা টমেটো খাওয়ার উপকারিতা

আমাদের দাঁত এবং হাড়ের জন্য অনেক উপকারী। টমেটোতে থাকা ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন কে হাড় শক্ত রাখে এবং হাড়ের সঠিক গঠনে সাহায্য করে থাকে। তাছাড়া দাঁতকে সুস্থ রাখতে টমেটো অনেক কার্যকারী। ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে টমেটো অনেক সহায়তা করে। টমেটোতে থাকা লাইকোপেন ক্যান্সারের পোস্ট বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণ করে।
  • রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে খেতে পারেন পাকা টমেটো। ভিটামিন সমৃদ্ধ টমেটো রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং স্ট্রেস হরমোন কমায়। এ কারণে নিয়মিত টমেটো খেলে শরীরের শক্তি বাড়ে এবং শরীর সুস্থ থাকে।
  • পাকা টমেটো খেলে শরীরের রক্তশূন্যতা দূর হয়। নিয়মিত দু একটি করে পাকা টমেটো খেলে রক্তের কণিকা বৃদ্ধি পায়, রক্তশূন্যতা রোধ হয়। এছাড়া রক্ত পরিষ্কার, হজমে ভালো হয় এবং কন্ঠকাঠিন্য দূর হয়ে থাকে।
  • পাকা টমেটোতে থাকা লাইকোপিন ত্বকের ক্লিনযার হিসেবে কাজ করে। এটি ত্বক পরিষ্কার ও সতেজ রাখতে সহায়তা করে।
  • পাকা টমেটো ভিটামিন এ এবং ভিটামিন সি ভালো উৎসব। এ দুটি উপাদান ক্ষতিকারক ফ্রি র‌্যাডিক্যাল থেকে শরীরকে মুক্তি দিতে সহায়তা করে। এতে শরীর সুস্থ থাকে।
  • পাকা টমেটোতে থাকা ভিটামিন এ, ভিটামিন বি এবং পটাশিয়াম কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে। সে সঙ্গে রক্তচাপ কমাতে সহযোগিতা করে থাকে।
  • পাকা টমেটো কর্মিয়াম নামক এক ধরনের খনিজ থাকায় এটি রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে। এ কারণে এটি ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য উপকারী।

অতিরিক্ত টমেটো খাওয়ার ক্ষতিকর দিক

অতিরিক্ত টমেটো খেলে হজমে গন্ডগোল হতে পারে এমনকি কিডনি সমস্যা, চুলকানির মতো শরীরে নানা সমস্যা হতে পারে। বেশি টমেটো খাওয়ার ফলে কয়েকটি পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সম্পর্কে জেনে নিন।

অম্লের প্রবাহ

টমেটোতে ম্যালিক অ্যাসিড ও সাইট্রিক অ্যাসিড রয়েছে, যা পাকস্থলীতে অতিরিক্ত এসিড বা অম্লের প্রবাহ তৈরি করতে পারে। তাই বেশি টমেটো খেলে বুক জ্বালা করতে পারে। এমনকি পেটে গ্যাস্টিক এসিড বেশি হয়ে হজমে গন্ডগোল হয়। যারা প্রায় পেটের সমস্যায় ভুবেন বা যাদের গ্যাস্ট্রিক দেহে রয়েছে, তাদের অতিরিক্ত টমেটো খাওয়া থেকে দূরে থাকা উচিত।

এলার্জি

টমেটোতে হিস্টামির নামের এক ধরনের যৌগ আছে, যা থেকে ত্বকে ছোপ ছোপ ডাকবা র‍্যাশ দেখা দিতে পারে। এছাড়াও দেহে নানারকম এলার্জি হতে পারে। যাদের টমেটো খেলে এলার্জি হয়, তারা টমেটো খাওয়া থেকে বিরত থাকার চেষ্টা করবেন। কারণ টমেটো মুখে দিলেই মুখের ভেতর চুলকানি, জীব ও গাল ফুলে যাওয়া, যদিও গলা চুলকানোর মতো মারাত্মক সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে।

গিঁটে বাত

অতিরিক্ত টমেটো খেলে গিঁটে বাতঁ দেখা দিতে পারে। এমনকি অস্থিসন্ধিগুলো ফুলে ওঠার সম্ভাবনা থাকে। এতে সোলানিন নামে বিশেষ অ্যালকালয়েড থাকে। এ যৌগ বিভিন্ন কোষে ক্যালসিয়াম তৈরির জন্য দায়ী। এ যৌগের পরিমাণ বেড়ে গেলে তা প্রদাহ তৈরি শুরু হয়।

ডায়রিয়া

টমেটোতে শালমো সালমোনেলা নামের এক ধরনের ব্যাকটেরিয়া থাকতে পারে। এটি ডায়রিয়ার জন্য দায়ী। তাছাড়া যারা টমেটো সহ্য করতে পারেন না, তাদের ছাড়া টমেটো খেলে ডায়রিয়া কম দেখা যায়।

পরামর্শ

স্বাস্থ্যগণের ভরপুর হলেও টমেটো পরিমিত খাওয়ার পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা।

শেষ কথা | সকালে খালি পেটে টমেটো খাওয়ার উপকারিতা

প্রিয় পাঠক, এতক্ষণ আমাদের সাথে থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আমাদের পোস্টে যদি আপনি সুন্দরভাবে পড়ে থাকেন, তাহলে অবশ্যই আপনি টমেটো খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে ইতিমধ্যে জেনে গেছেন। এমনকি আপনি অনেক উপকৃত হয়েছেন এই পোস্টটি পড়ে।

তাই এই পোস্টটি আপনার কাছে ভালো লেগে থাকলে আপনি এই পোস্টটি আপনার বন্ধুদের কাছে শেয়ার করতে পারেন। এবং এরকম বিভিন্ন ধরনের পোস্ট আমরা নিয়মিত পাবলিশ করে থাকি, এরকম নতুন নতুন ব্লগ পোস্ট পেতে আমাদের সাথেই থাকুন। আসসালামু আলাইকুম।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

সাগর ম্যাক্স এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url