শিশুর মানসিক বিকাশের ধাপ গুলি কি কি - শিশুর মানসিক বিকাশে মায়ের ভূমিকা

প্রিয় পাঠক, আপনি নিশ্চয়ই জানতে চান শিশুর মানসিক বিকাশের ধাপ গুলি কি কি? এবং শিশুর মানসিক বিকাশে মায়ের ভূমিকা সম্পর্কে। তাহলে বন্ধু আপনি সঠিক জায়গাতেই এসেছেন কারণ আপনার সামনে আমরা এখন শেয়ার করতে চলেছি শিশুর মানসিক বিকাশের ধাপ গুলি কি কি এবং শিশুর মানসিক বিকাশে মায়ের ভূমিকা কতটুকু। আশা করি এই আর্টিকেলটি সম্পন্ন মনোযোগ সহকারে পড়ার মাধ্যমে আপনি বিস্তারিতভাবে জানতে পারবেন শিশুর মানসিক বিকাশের ধাপ গুলি কি কি এবং শিশুর মানসিক বিকাশে মায়ের ভূমিকা কতটুকু।
শিশুর মানসিক বিকাশের ধাপ গুলি কি কি - শিশুর মানসিক বিকাশে মায়ের ভূমিকা
এছাড়াও জানতে পারবেন মায়ের মানসিক স্বাস্থ্য শিশুর বিকাশকে কিভাবে প্রভাবিত করে থাকে। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনার অনেক উপকারে আসবে। তাহলে চলুন বন্ধু দেরি না করে আমরা বিস্তারিতভাবে জেনে আসার চেষ্টা করি শিশুর মানসিক বিকাশের ধাপ গুলি কি কি ও শিশুর মানসিক বিকাশে মায়ের ভূমিকা কতটুকু এবং মায়ের মানসিক স্বাস্থ্য শিশুর বিকাশকে কিভাবে প্রভাবিত করে থাকে।

পোস্ট সূচিপত্রঃ শিশুর মানসিক বিকাশের ধাপ গুলি কি কি

ভূমিকা | শিশুর মানসিক বিকাশের ধাপ গুলি কি কি

শারীরিক ও মানসিক বিকাশ বলতে শিশুর মানসিক বিকাশে খেলার গুরুত্ব বিকাশ হল একটি শিশুর সেই জাতীয় শারীরিক ও মানুষের ক্ষমতার পরিবর্তন যার দ্বারা শিশু যে কোনো জাগতিক ক্রিয়াকলাপ করে থাকে। এবং আরো বেশি দক্ষতার সঙ্গে সম্পূর্ণ করতে পারে। সুতরাং বলা যায় বিকাশ হল বিশেষভাবে আকৃতির পরিবর্তন এবং কাজের ক্ষেত্রে উন্নতি।
তাছাড়াও শরীরচর্চা ও খেলাধুলা শিশু শারীরিক ও মানুষের অগ্রগতি ভূমিকা পালন করে থাকে। এবং খেলাধুলার মাধ্যম দিয়ে শিশুর চিন্তাভাবনার সৃজনশীলতা বিকাশ ভোটে থাকে, নৈতিক দব্যের দক্ষতা আস্তে আস্তে অর্জন হয়। সে সঙ্গে তার জয় পরাজয় মেনে নেয়ার সাহস বেড়ে যায়। দেশের প্রতি ভালোবাসা জন্মায় এবং নৈতিক চরিত্রের বিকাশ ঘটতে থাকে।

তাছাড়া শুধু তাই নয় শিশুদের মধ্যে অপরাধ প্রবণতা অনেকটাই কমে যায়। যাই হোক বন্ধু আমরা এখনই জেনে নেব শিশুর মানসিক বিকাশের ধাপ গুলি কি কি ও শিশুর মানসিক বিকাশে মায়ের ভূমিকা কতটুকু এবং মায়ের মানসিক স্বাস্থ্য শিশুর বিকাশ কে কিভাবে প্রভাবিত করে থাকে। আশা করি আপনি যদি প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত স্টেপ বাই স্টেপ সকল পয়েন্টগুলো পড়েন তাহলে শিশুর মানসিক বিকাশ বিষয়ক আরো অনেক অজানা তথ্য জানতে পারবেন।

শিশুর মানসিক বিকাশের ধাপ গুলি কি কি

একটি ধারাবাহিক প্রক্রিয়া বলতে পারেন শিশুর বৃদ্ধিকে। কারণ শিশুর এক একটা বয়সে এক একটা কার্যকলাপ ঘটে থাকে। এবং সেই ধারাবাহিক প্রক্রিয়াকেই শিশুর বিকাশের স্তর। তাছাড়াও বয়স অনুযায়ী শিশু কাজকর্ম করছে কিনা সে দিকে নিয়মিত নজরদারি রাখতে হবে প্রত্যেকের বাবা মাকে। কারণ কোন দুটির বাচ্চার বিকাশ একই সম গতিতে হয় না।

শিশুর ব্যবহার অন্য রকম হচ্ছে কিনা, কারণ হিসেবে হয়তো সে অসুস্থ বা কোন কারণে বিপর্যস্ত হয়েও থাকতে পারে। তাছাড়াও একটি শিশুর কখনো কখনো তার বিকাশ কোন না কোন বিষয়ে সমবয়সের অন্য বাচ্চাদের তুলনায় অনেক দেরিতে হতে পারে। কিন্তু আবার দেখা যাবে অন্য বাচ্চাদের চেয়ে সে অন্য দিক দিয়ে অনেক এগিয়ে আছে।

শিশু যদি নিজে নিজে হাঁটার জন্য প্রস্তুত না হয় তাকে জোর করে হাঁটালে বরঞ্চ আরো ফুটি হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। সেজন্য প্রত্যেক মা-বাবাকে এ বিষয়ে গুলিতে খুব সচেতন থাকতে হবে। কারণ শিশুকে কখনোই জোরপূর্বক করানো ঠিক নয়। এটি শিশুর মানসিক বিকাশের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর।

শিশুর বিকাশের লক্ষণগুলো জেনে নিন। আমাদের শিশু স্বাভাবিক বিকাশে বিলম্ব হচ্ছে কিনা তা ওদের কিছু লক্ষণ দেখে বোঝা যেতে পারে।
  • ২ মাসের সময় আপনি কোন ধরনের কথা বলতে গেলে হাসি দিবে।
  • মাকে চিনতে পারবে ৩ মাস পর থেকে।
  • ৪ মাস পর আস্তে আস্তে মাকে গলা জড়িয়ে ধরবে, এবং ঘুরে তাকাবে।
  • এবং ৫ মাস পর কোন জিনিসের কাছে যাবে এবং তা ধরতে চেষ্টা করবে।
  • ৬ মাস পর কিছু কিছু শব্দ উচ্চারণ করবে যেমনঃ "বা", "মা", "দা" ইত্যাদি।
  • ৭ থেকে ৮ মাস পর কারো কোনো সাহায্য ছাড়া সে একা একা বসতে শিখবে।
  • ৯ মাস পরে, হামাগুড়ি বা হামপুর পড়া শিখবে।
  • ১০ থেকে ১২ মাস পর, একা একা দাঁড়াতে শিখবে বা পারবে।
  • ১৩ মাস পর, যে কোন একটা জিনিসের সাহায্য নিয়ে হাঁটতে শেখবে।
  • ২০ থেকে ২৪ মাস পর শিশু একা একা ছোট ছোট বাক্য বলবে এবং সিঁড়ি দিয়ে উঠার চেষ্টা করবে।
  • ৩৬ মাস পর শিশুর তিন চাকার সাইকেল একা একা চালাতে শিখবে।
  • ৪৮ মাস পরে, শিশু সিড়ির একটা ধাপে একা একা পা দিতে পারবে। এবং হাত দিয়ে আস্তে আস্তে বল ছুড়তে পারবে।
  • এবং ৭২ মাস পর, শিশু জটিল আকৃতির অংকন আঁকতে পারবে একা একাই।
শিশুর বিকাশের স্তরগুলো যেমন
  • জন্ম হওয়ার পর থেকে প্রায় ছয় সপ্তাহ পর্যন্ত।
  • শিশু বাচ্চাদের মাথার একদিকে ফিরিয়ে চিত করে শোয়ানো।
  • হঠাৎ হঠাৎ করে আওয়াজের মাধ্যমে চমকে উঠে যায় বা শরীর স্থির হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা দেখা দেয়।
  • শিশু সব সময় হাতের মুঠ বন্ধ করে রাখে।
  • এবং শিশুদের হাতে তালুতে কিছু ছোয়ালে সেটিকে ধরার চেষ্টা করে।
শিশুর ৬ থেকে ১২ সপ্তাহের মধ্যে
  • শিশু তার চোখের দৃষ্টি একটি জিনিসের উপর স্থির করতে পারে।
  • এবং শিশু নিজে নিজেই নিজের মাথায় স্থির করতে শিখে।
শিশুর ৩ মাস সম্পূর্ণ হওয়ার পর
  • শিশু তার মাকে চিনতে পারে এবং তার গলার আওয়াজ আস্তে আস্তে গাঢ় হয়ে থাকে।
  • এবং শিশু চিৎ হয়ে শুয়ে দুই হাত পা সমান ভাবে নাড়াতে থাকে। তাছাড়া তার নড়াচড়া ঝাকুনি দিয়ে বা অসংবদ্ধ হয় না।শুধু যে শিশু কান্নার আওয়াজ করে সেটা নয় তার পাশাপাশি শিশু নানা ধরনের আওয়াজ করতে থাকে।
  • শিশুকে যখন বিছান থেকে তোলা হয় তখন সে কিছুক্ষণ মাথা সোজা রাখতে পারে।
  • সেক্ষেত্রে হাত প্রায়ই সব সময় খোলাই থাকে।
শিশুর ৬ মাস সম্পূর্ণ হওয়ার পর
  • শিশু দুই হাত জোড় করে খেলে একা একাই।
  • আশেপাশে কোন ধরনের আওয়াজ বা শব্দ হলে শিশু মাথা ঘুরিয়ে দেখে।
  • শিশু একা একাই উপর থেকে চিত বা চিত থেকে উপর হতে পারে।
  • কিছু কিছু গুণের জন্য টাকা দিয়ে অল্প সময়ে বসতে পারে।
  • বাচ্চাকে একটু উঁচু করে ধরলে পায়ে কিছু ভার দিয়ে থাকে।
  • এবং শিশু ওপর হয়ে শুয়ে হাত পা ছড়িয়ে নিজের শরীরের ভারসাম্য নিতে পারে।
শিশুর ৯ মাস সম্পূর্ণ হওয়ার পর
  • শিশু নিজে নিজেই হাত ও হাটুর উপর ভর করে হামাগুড়ি বা হামপুর দিতে শিখে।
  • শিশু কোন কিছু সাহায্য ছাড়াই একা একাই বসতে পারে।
শিশুর ১২ মাস সম্পূর্ণ হওয়ার পর
  • শিশু যে কোন আসবাবপত্র ধরে হাটতে পারে।
  • "শিশু মামা" "মামা" বলতে পারে।
  • শিশু নিজে নিজেই দাঁড়ানোর চেষ্টা করে।
শিশুর ১৮ মাস সম্পূর্ণ হওয়ার পর
  • শিশু কোন কিছুর সাহায্য ছাড়াই হাটতে পারে।
  • শিশু আস্তে আস্তে দুই একটা শব্দ বলতে পারে।
  • শিশু একা একা খেতে পারে
  • এবং শিশু কারো কোন সাহায্য ছাড়াই গেলাস ধরতে পারে এবং তার থেকে পানিও খেতে পারে।
শিশুর ২ বছর সম্পূর্ণ হওয়ার পর
  • শিশু দাঁড়াতে পারে কোনরকম না পড়ে গিয়ে।
  • শিশু নিজে নিজে পায়জামা ধরনের কিছু বা জামাকাপড় খুলে ফেলতে পারে।
  • শিশু যেকোনো বইয়ের ছবি দেখে আনন্দিত হয়ে থাকে।
  • বাচ্চা কি চায় সেটা সুন্দরভাবে বোঝাতে পারে।
  • এবং শিশু অন্যদের কথা নকল করতে শুরু করে।
  • তাছাড়া শিশু তার কিছু কিছু শরীরের অংশ চিনাতে পারে।
শিশুর ৩ বছর সম্পূর্ণ হওয়ার পর
  • শিশু একটা রঙের নাম বলতে পারে।
  • যে কোন জিনিস ছড়িয়ে রাখতে সাহায্য করে থাকে।
  • কিছু কিছু সাধারণ প্রশ্নের উত্তর দিতে পারে।
  • খেলনা বল ছুড়তে পারে।
শিশুর ৪ বছর সম্পূর্ণ হওয়ার পর
  • যেকোনো বই খাতার ছবি দেখে সেগুলোর নাম বলতে পারে।
  • শিশু সুন্দরভাবে সাইকেল চালাতে পারে।
শিশুর ৫ বছর সম্পূর্ণ হওয়ার পর
  • শিশু খেলাধুলা বা লাফালাফি করতে পারে।
  • নিজে নিজেই ধাপি বা সিঁড়ি দিয়ে চলাফেরা করতে পারে।
  • এবং বিভিন্ন রকমের রঙ্গের নাম বলতে পারে।
  • তাছাড়া শিশু তার নিজের জামা কাপড়ের বোতাম লাগাতে পারে।
শিশুর বিকাশের বিলম্বতা

এগুলো আলোচিত বিকাশের স্তর গুলির মধ্য থেকে যদি কয়েকটি শিশুর মধ্যে প্রকাশ না পায়, তাহলে শিশুর বিকাশ নিয়ে সংশয় প্রকাশ করা যাই। এই সাধারণ দক্ষতা গুলোর র মধ্যে ৩০ শতাংশ না দেখা গেলে বলা যেতে পারে শিশুর বিকাশে বিলম্ব রয়েছে। তাছাড়াও শিশু কয়েক মাস পরেও যদি বয়স অনুযায়ী স্বাভাবিক কাজ করতে না পারে তাহলে শিশু রোগ বিশেষজ্ঞর কাছে পরামর্শ বা নিয়ে যেতে হবে।

শারীরিক ও মানসিক বিকাশ কি

শারীরিক বিকাশ ও মানসিক বিকাশ বলতে শারীরিক সক্ষমতা এবং সমন্বয় সহ শরীরের আকার ও আকৃতি এবং বিভিন্ন ধরনের শারীরিক পরিপক্ক তার পরিবর্তনকেই বোঝায়। তাছাড়া বুদ্ধিভিত্তিক বিকাশ তার সঙ্গে ভাষা শেখা এবং ব্যবহার, যুক্তি, ধারণা সংঘটিত করার ক্ষমতা, সমস্যা সমাধান, এটি আমাদের মস্তিষ্কে শারীরিক বৃদ্ধির সাথে মানসিক বিকাশ ঘটাতে সহযোগিতা করে থাকে।

এখন সব বাবা-মায়েই শিশুর বিকাশ নিয়ে বেশ সচেতন থাকেন। কিভাবে আরও সফলভাবে সেটাকে করা সম্ভব হয় সে নিয়ে। তাছাড়াও বাবা মায়েরা অনলাইনের মাধ্যমে বিভিন্ন পত্রিকা তথ্য সংগ্রহ করে থাকেন। এবং বই কিনেন, তারপর নিজেরা বুঝেশুনে সেই প্রক্রিয়ার মাধ্যম দিয়ে শিশুকে গড়ে তোলার চেষ্টা করে।
আপনাদের প্রথমে জানাতে চাই, আপনার যেমন কোন বড় লক্ষ্য অর্জনের জন্য যেমন দরকার কঠোর পরিশ্রম এবং অসীম ধৈর্য থাকা খুব প্রয়োজন তেমনি আপনাদের শিশুর শারীরিক ও মানসিক বিকাশের জন্য মা-বাবাকে হতে হবে বিশেষ যত্নবান। সে সঙ্গে আপনার শিশুকে আদর করতে হবে। তাছাড়া কিছু নিয়মকানুন মানার চেষ্টা অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে।

অনেক সময় আমাদের শিশুরা বিভিন্ন রকম দুষ্টামি করে থাকে, সে ক্ষেত্রে আমরা না বুঝে শুনে তাকে ভয় দেখায় বা শাস্তির দিকে থাকে। এতে করে আমাদের শিশুর আত্মবিশ্বাস অনেকটাই কমে যায়। সেজন্য আমাদের শিশুর প্রত্যেকটি কথা মনোযোগ দিয়ে শোনা প্রয়োজন। এবং বিশেষ করে তার কথার গুরুত্ব দিতে হবে। তাছাড়া শিশুর ভালো দিকগুলো বা ভালো কাজগুলোর প্রশংসা করতে হবে।

শিশুর মানসিক বিকাশে মায়ের ভূমিকা

শিশুর মানসিক বিকাশে, এবং শিশুর প্রাথমিক জীবনে মায়েরা শিক্ষাবিদ হিসেবে সবচেয়ে বেশি মৌলিক ভূমিকা পালন করে থাকে। কারণ শিশুর শৈশব কাল থেকে তাদের বেড়ে ওঠা পর্যন্ত শিক্ষার কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে কাজ করে মা। একজন মা ই পারে, একজন শিশুর মানসিক বিকাশ ও সামাজিক দক্ষতা বিকাশে সাহায্য করতে। এবং একটি শিশুর দৈনন্দিন জীবনের চ্যালেঞ্জের মধ্য দিয়ে যেতে অনেক সহযোগিতা করে থাকে মা।

মা তার সন্তানকে তাদের আত্মবিশ্বাস বাড়ানোর জন্য মানসিক সমর্থন প্রদান করে থাকেন। যেটা একটা শিশুর জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। কারণ একটা শিশু সব সময় বাসাতেই বেশি থাকে সেক্ষেত্রে একটি মা যদি তার সন্তানকে সুন্দরভাবে মানুষ করতে পারে তাহলে সে সন্তানটি অনেক সফল হওয়ার ভূমিকা রাখে।

তাই আমাদের প্রত্যেক মায়েদের উচিত সন্তানকে সুন্দরভাবে মানুষ করা। কারণ বাবার থেকে সন্তানের যেকোনো মানসিক বিকাশে মায়ের ভূমিকাটাই বেশি থাকে। তাই সর্বদা সবসময় মায়েদের সচেতন থাকতে হবে সন্তানের ওপরে। কিন্তু এখানে আমরা বাবাকে ছোট করে দেখছি না।

কারণ বাবা অনেক কাজের ক্ষেত্রে বাইরেই সব সময় থাকে সে ক্ষেত্রে শিশুদের মানসিক বিকাশের জন্য তারা খুব একটা ভূমিকা পালন করতে পারে না। সেজন্য সর্বদা মায়েদের চেষ্টা করতে হবে তার সন্তানকে সুন্দরভাবে মানসিক বিকাশে গড়ে তোলা। তাছাড়াও মায়ের ভূমিকা শিশুদের প্রতি বাড়ির বাইরে সামাজিক সমন্বয়ের ক্ষেত্রে একটি অপরিহার্য ভূমিকা পালন করে।

মায়ের মানসিক স্বাস্থ্য শিশুর বিকাশকে কিভাবে প্রভাবিত করে

আমরা সকলেই জানি, একটি শিশুর মানসিক বিকাশের জন্য সবথেকে বেশি ভূমিকা পালন করে থাকে মা। সেজন্য মায়েরা যখন খুশি এবং শান্ত বোধ করেন তখন শিশুকে এটি খুশী এনে দেয়। এবং সুন্দর শান্ত পরিবেশে বিকাশ ঘটে শিশুর। সেজন্য মানসিক চাপ ও উদ্বেগের মতো আবেগ আপনার শরীরে বিশেষ হরমোন বাড়িয়ে থাকে।

সে কারণে আপনার শিশুর বিকাশ মান শরীর এবং মস্তিষ্ককে প্রভাবিত করে। তাই আমাদের প্রত্যক্ষ মায়েদের উচিত নিজের সুস্বাস্থ্যকে শান্ত এবং সুন্দর রাখা। তাই শিশুদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশে মায়ের কোন বিকল্প নেই। সে ক্ষেত্রে সব মায়েরায় তাদের সন্তানের মঙ্গল এর জন্য ভিন্নভাবে চেষ্টা করেন।

কিন্তু অনেক শিশুর মানসিক বিকাশে মায়ের করনীয় কি বা মায়ের করনীয় বিষয়গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে অনেক সময় অনেকে গুগলে সার্চ করে থাকে। সেজন্য আমরা নিচে কিছু উপায় সম্পর্কে আপনাদেরকে জানাবো সেগুলো আপনি অবলম্বন করলে আপনার মানসিক স্বাস্থ্য শিশুর বিকাশে প্রভাবিত করবে। যেমন
  •  শিশুকে তার নিজের ইচ্ছা প্রকাশ করতে দিন।
  • এবং শিশুর বেড়ে ওঠা ধাপ গুলো সম্পর্কে বিশেষ করে জানুন।
  • উপহাস না করে শিশুকে উৎসাহ দিন, যাতে করে শিশুর আত্মবিশ্বাস কমে না যায়।
  • শিশুর স্বাস্থ্যকর অভ্যাস গড়ে তুলুন।
  • আপনি মা হিসেবে আপনার শিশুকে প্রচুর সময় দিন, তাতে করে শিশুর সুস্থ মানসিক বিকাশ ঘটবে।
  • শিশুর মেধা বিকাশের জন্য শিক্ষামূলক বই বা গল্পের বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন। এতে করে শিশুর মনের ভাব প্রকাশের ক্ষমতা বাড়ে।
  • আপনাকে হতে হবে বিশ্বাস্ততা। আপনাকে সন্তানের জন্য সবচেয়ে নির্ভরযোগ্যতা স্থান হয়ে উঠতে হবে, এতে করে আপনাকে সন্তানের সামনে নিজেকে মেলে ধরতে সাহায্য করবে।
  • যদি আপনি চান আপনার শিশু মানসিক বা মানসিকতা নিয়ে বড় হোক এবং শিশুকে মানসিকভাবে সুস্থ দেখতে। প্রথমে আপনাকে নিজের মানসিক শান্তির যত্ন নিতে হবে।
  • এবং যতটুকু পারেন শিশুর সামনে ভালো কাজগুলো করার চেষ্টা করুন।
  • ছোটখাট বিষয় নিয়ে শিশুকে বকাঝকা করবেন না।
  • শিশুকে কোনভাবে জোরপূর্বক কোনো কাজ করাবেন না।
  • শিশুকে সবসময় তার নতুন কিছু করার উৎসাহ দিতে পারেন।
  • তাছাড়া আপনার ছুটির দিন শিশুকে নিয়ে ঘুরতে যেতে পারেন এতে করে শিশুর বুদ্ধি বিকাশ ঘটবে।

শিশুর শারীরিক বিকাশ কি

শিশুর শারীরিক বিকাশ বলতে শিশুর দৈহিক পরিবর্তন এবং আকারের বুদ্ধিকে বোঝানো হয়ে থাকে। এছাড়াও শিশুর শারীরিক বিকাশে শিশুর অঙ্গ পতঙ্গের বিকাশ এবং তাদের কর্মক্ষমতার দৃঢ় তাকেই বোঝানো হয়। তার ফলে শিশুরা পরিপূর্ণতার দিকে ধাবিত হয়ে থাকে। বলা যেতে পারে শিশুর সব চাহিদা পরিতৃপ্তির জন্য অন্যের উপর নির্ভর করতে হতো। কিন্তু বয়স বৃদ্ধির সাথে সাথে এই নির্ভরতা অনেকটাই কমে আসে।

সে নিজে নিজেই কাপড় পড়তে পারে, গোসল করতে পারে, খেতে পারে, ইত্যাদি। সে ক্ষেত্রে বলা যায় তার অবিরত দৈহিক বিকাশের ফলে এসে উপরোক্ত আচরণ গুলি সম্পাদন করতে পারে। শিশুর দুই ধরনের দৈহিক বিকাশ হয়ে থাকে। একটি হলো শিশুর অঙ্গ পতঙ্গের বিকাশ, এবং আরেকটি হলো শিশুর ক্রিয়ার বিকাশ। এই দুই ধরনের বিকাশ গুলো শিশুর জীবনের অন্যান্য বিকাশ কে অনেকটাই সহযোগিতা করে থাকে।

শেষ কথা | শিশুর মানসিক বিকাশের ধাপ গুলি কি কি

প্রিয় পাঠক, এতক্ষণ আমাদের সাথে থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আপনি নিশ্চয়ই এই পোস্টটি পড়ার পর জেনে গেছেন শারীরিক ও মানসিক বিকাশ কি এবং শিশুর শারীরিক বিকাশ কি এগুলো সম্পর্কে। আশা করি এই পোস্টটি আপনার অনেক উপকারে আসবে। তাই এই পোস্টটি আপনার কাছে ভালো লেগে থাকলে আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন। এবং এরকম নতুন নতুন ব্লক পোস্ট বা আর্টিকেল নিয়মিত পেতে আমাদের সাথেই থাকুন। আসসালামু আলাইকুম।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

সাগর ম্যাক্স এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url