দুধ খাওয়ার উপযুক্ত সময় - দুধ খাওয়ার উপকারিতা
লিচুর উপকারিতা ও অপকারিতাবাংলাদেশের মানুষের কাছে দুধ খুবই জনপ্রিয় একটি খাবার। দুধ খেতে পছন্দ করেন না এমন মানুষ প্রায় অসম্ভব। বিভিন্ন রোগের কারণে অনেকেই দুধ খেতে পারেন না। কিন্তু দুধের অনেক উপকারিতা রয়েছে। কারন দুধে রয়েছে ভিটামিন, ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম, প্রোটিন, ফসফরাস ইত্যাদি যা আমাদের শরীরকে সুস্থ রাখতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।
তাই প্রতিদিন যদি এক গ্লাস দুধ পান করতে পারেন তো রোগ থেকে মুক্তি পেতে পারেন। তাহলে চলুন জেনে নেই দুধ খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু তথ্য এবং দুধ খাওয়া নিয়ে আপনার মনের মাঝে যত প্রশ্ন আছে সবগুলোর উত্তর দিতে।
পোস্ট সূচিপত্রঃ
ভূমিকা
দুধ পুষ্টিগুনে ভরপুর। শিশু, প্রাপ্তবয়স্ক ও বৃদ্ধ- সবারই প্রতিদিন এক গ্লাস দুধ পান করা উচিত। দুধ ভিটামিন ডি ও ক্যালসিয়ামের উৎস। দুধে আছে প্রোটিন, কার্বোহাইড্রেট, চর্বি, ওমেগা থ্রি, ওমেগা সিক্স সহ অনেক গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। দুধকে বলা হয় সুপার ফুড। এতে আছে প্রয়োজনীয় ভিটামিন ও খনিজ পদার্থ, যা দেহের জন্য খুবই উপকারী। এতে প্রচুর পরিমাণে বি-১২ আছে, যা মস্তিষ্কের জন্য প্রয়োজন।দুধ শরীরকে সক্ষম রাখতে সাহায্য করে।
এছাড়া দেহে কিছু কোষ মেরামতের জন্য দারুন উপকারী। আমাদের দেশে গরু ও ছাগলের দুধ সহজলভ্য। শিশুরা নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত মায়ের বুকের দুধ পান করতে পারে। মায়ের বুকের দুধের পর নিয়মিত গরু-ছাগলের দুধ পান করা উচিত। পাশাপাশি প্রাপ্তবয়স্ক ও যুদ্ধরাও গরু-ছাগলের দুধ পান করলে অবশ্যই অনেক উপকার পাবেন। কারণ দুধে অনেক পুষ্টি রয়েছে, যেগুলো আমাদের দেহের জন্য অনেক উপকারী।
সকালে দুধ খাওয়ার উপকারিতা
সকালে খালি পেটে দুধ খাওয়া কি উপকারিতা জানতে চেয়েছেন। আগে মনে করা হতো ঘুমানোর আগে এক গ্লাস দুধ পান স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারী। কিন্তু যেহেতু দুধ নিজেই একটি সম্পূরক খাদ্য, তাই ঘুমানোর আগে দুধ পান করলে তা হজম প্রক্রিয়া ধীর করে দেয়, এবং গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা তৈরি করতে পারে। পোস্টটি বিশেষজ্ঞরা বলেন, দুধ একটি "কমপ্লিট মিল"।
পোস্টটি বিশেষজ্ঞরা আরো বলেন, যাদের দেহের কোন সমস্যা হচ্ছে না তারা সকালে খালি পেটে দুধ পান করতে পারেন। তবে যাদের শর্করায় সমস্যা আছে তাদের ক্ষেত্রে সকালে কিছু খেয়ে তারপর দুধ পান করা ভালো। ডায়েটে স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার কথা হলে সবার আগে ঠাঁই খাই দুধ। পুষ্টিবিদদের মতে, রোদ খাদ্য তালিকায় দুধ রাখা সব বয়সীদের জন্য খুব ভালো। স্বার্থের জন্য যত্ন নিতে দুধকে টেক্কা দেয় এমন খাবার খুবই কম।
সদ্যোজাত শিশু থেকে বয়স্ক মানুষ, সকালের জন্য ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, ভিটামিন, পটাশিয়াম, ভিটামিন ডি-ঝামিদ্ধ দুধ স্বাস্থ্যকর একটি খাবার। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানো থেকে শুরু করে হার এবং দাঁত মজবুত রাখতে দুধ অনেক সহায়তা করে। বিপাকক্রিয়া উন্নত করতেও দুধ সাহায্য করে। অনেকেই দিনের শুরুটা করেন দুধ দিয়ে। অনেকেরই পছন্দের তালিকায় থাকে দুধ-কর্নফ্লেক্স বা দুধ-মুসলি। কবে আয়ুর্বেদ শাস্ত্রর মতে সকালে খালি পেটে দুধ খাওয়া উচিত নয়।
খালি পেটে দুধ খেলে উপকারে তুলনায় বেশি ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। বেশ ভারী খাবার, হজম হতে বেশি সময় নেই। সকালে হজম শক্তি স্বাভাবিক তুলনায় কম থাকে, তাই যাদের হজম শক্তি এমনিতেই দুর্বল, তাদের সকাল বেলা খালি পেটে দুধ এড়িয়ে চলাই ভালো। দীর্ঘদিন খালি পেটে দুধ খাওয়ার অভ্যাস থাকলে বদ হজম, গ্যাস, পেট ব্যথার সমস্যা দেখা দিতে পারে। এছাড়াও খালি পেটে দুধ খেলে ত্বকের অনেক ক্ষতি হয়।
রাতে দুধ খাওয়ার উপকারি
দুধে যে প্রোটিন থাকে তা খারাপ কোলেস্টেরল কমিয়ে ভালো কোলেস্টেরলের মাত্রা বৃদ্ধি করে গরুর দুধ ভিটামিন এ, ডি এবং ক্যালসিয়ামে সমৃদ্ধ , যা আমাদের দেহসুস্থ রাখতে সাহায্য করে। বাস্তব অভিজ্ঞতায় দেখা গেছে, রাতে শোয়ার আগে হালকা গরম দুধ খেলে ভালো ঘুম হয়। দুধের ট্রিপটোফ্যান নামক অ্যামিনো এসিড থেকে সেরোট টিমের সূত্রপাত ঘটে।
এটা আপনার মস্তিষ্কে যে সংকেত পাঠায়, তা স্নায়বী উত্তেজনা প্রশ্ন মনে সাহায্য করে। হয়তো এ কারণে দুধ খেলে সহজে ঘুম আসে। দুধ আমাদের শরীরের জন্য সবচেয়ে উপকারী খাবার গুলোর একটি। এর পাশাপাশি চাবা কপিতেও যদি মিশিয়ে খাওয়ার অভ্যাস অনেকের। তো আপনি যদি রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে এক গ্লাস দুধ খেতে পারেন, তবে তা স্বাস্থ্যের জন্য সবচেয়ে উপকারী।
একটি গবেষণায় দেখা গিয়েছে প্রতি রাতে শুতে যাওয়ার আগে এক গ্লাস দুধ খেলে শরীরের কোলেস্টেরল লেভেল অনেকটাই কমে এবং শরীর সুস্থ থাকে। দুধে যে প্রোটিন থাকে তা খারাপ কোলেস্টেরল কমিয়ে ভালো কোলেস্টেরলের মাত্রা বৃদ্ধি করে। গরুর দুধ ভিটামিন এ, ডি এবং ক্যালসিয়ামের স্বামিদ্ধ, আমাদের দেহের জন্য অনেকটাই উপকারী
দুধ কফি খাওয়ার উপকারিতা
দুধ কফি খাওয়ার ফলে পিসির নানা সমস্যা, আর্থরাইটিস ও আরো নানা সমস্যা দেখা দেয়। দুধ দেওয়া কপিতে রয়েছে এমন কিছু উপকারিতা, যা এই প্রবাহ দূর করতে সাহায্য করে থাকে। এতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্টস, যা উদ্ভিদ জাত খাবার থেকে, ফল ও সবজি থেকে মানুষের শরীরে প্রবেশ করে। সেগুলি খুব সহজে পাওয়া যায় দেওয়া কপি থেকে। যেমন আপনি জানেন, স্বাদ এবং রংয়ের জন্য কোন কমরেড নেই।
এটি কফির মত জনপ্রিয় পানির জন্য সম্পূর্ণরূপে প্রযোজ্য। কিছু লোক কেবল পিস্তল মোটর শুদ্ধি থেকে তৈরি কফি চিনতে পারে এবং কোন সংযোজন ছাড়াই, অন্যরা পানি ওকে চিনি দিয়ে মিষ্টি করে যা এক চিমটি দারুচিনি যোগ করে। আর কেউ দুধ ছাড়া কফি চিনতে পারেনা। এই জাতীয় পানির গুনাবলী সম্পর্কে বৈষম্যমূলক বিপরীত মতামত রয়েছে। কেউ দাবি করে যে এটি খুব দরকারি, আবার কেউ বিপরীতভাবে এটি ক্ষতিকারক বলে মনে করে।
সম্ভবত, কফি পান পড়ে যারা তারা এটা শুনে বিরক্ত হবে যে দুধ ছাড়া কফি দুধ ছাড়া কফির চেয়ে বেশি উপকারী নয়, কিন্তু এটি একটি সত্যি। শরীরে কফির উপকারী প্রভাব হলো জৈবিক ভাবে পয়েন্টে উপাদানগুলি উপস্থিতির কারণে যেমনঃ
- জৈব এসিড
- টনিক
- স্টস উপাদান
- অ্যান্টিঅক্সিডেন্টসমূহের
কবে মানুষের স্নায়ুতন্ত্রের ওপর একটি উত্তেজনাপূর্ণ প্রভাব ফেলে, এর কার্যকারিতা বাড়ায়, উদাসীনতা বাড়ায়, অলসতা এবং তন্দ্রা দূর করে। মনোযোগের গন্তব্য, পাচনতন্ত্রের ভালো কার্যকারিতা প্রচার করে। এবং এই কফি পানীয় অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ হওয়ার কারণে, কফি খাওয়া অনেক রোগের ঝুঁকি কমায়।
দুধ কলা খাওয়ার উপকারিতা
সুস্বাস্থ্যের জন্য দুধ কলা সত্যিই উপকারী একটা উপাদান। তবে এই দুধ কলা এর সঙ্গে খাওয়া নিয়ে অনেকের মনে নানান প্রশ্ন রয়েছে। দুধ এবং কলা একসঙ্গে কখনোই খালি পেটে খাওয়া উচিত নয়, সে ক্ষেত্রে দুধ কলা সংমিশ্রণ উত্তম খাবার নয়। কারণ দুধ ও কলায় রয়েছে দুটি ভিন্ন ভিন্ন উপাদান। দুধসম্পন্ন আহার এবং এটি শরীরে ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি-র যোগান দেয়। দুধের মধ্যে রয়েছে প্রোটিন, নানান ভিটামিন, রাইবোফ্লোবিন, ভিটামিন বি১২ মত পুষ্টিকর উপাদান।
দেড়শ গ্রাম দুধের প্রায় ৫০ ক্যালরি পাওয়া যায়। তবে দুধে ভিটামিন সি, ডায়েটারি ফাইবার থাকেনা। তাছাড়া কার্বোহাইড্রেটও কম থাকে। নিরামিষ ভোজীদের জন্য দুধ প্রোটিনের একটি উল্লেখযোগ্য উৎস। অন্যদিকে কলা শরীরের পক্ষেও অত্যন্ত উপকারী এবং পুষ্টিগণের স্বামীর ধরেছে। ফাইবারে পলা শুধুমাত্র শরীরের শক্তি যোগায় না, বরং নানান রোগ প্রতিরোধ করতে পারে। পালায় প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ডি৬, ম্যাগানিজ, ভিটামিন সি, ডায়েটারি ফাইবার, পটাশিয়াম ও বায়োটিনের মত পুষ্টিকর উপাদান রয়েছে।
দেড়শ গ্রাম একশ গ্রাম ক্যালরি থাকে। কলা খাওয়ার পর অনেকক্ষণ পেট ভরে থাকে এবং হারিয়ে যাওয়া এনার্জি ফিরে পাওয়া যায়। অধিক কার্বোহাইড্রেট যুক্ত কলা ওয়ার্ক আউট এর আগেও পরে খাওয়া যেতে পারে। আমাদের মধ্যে অনেকেই কলা এবং দুধ একসঙ্গে খেয়ে থাকেন, কিন্তু এই দুটি খাবার খেলে কি সত্যি অনেক পুষ্টি লাভ করা যায়? সাধারণত ওজন বৃদ্ধির জন্য খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়, যা অনেকেরই প্রিয় খাবার। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে দুধ ও কলা আলাদা আলাদা খেলে তা স্বাস্থ্যের পক্ষে অত্যন্ত উপকারী কাজ করবে।
কিন্তু তারা জোর গলায় এর সঙ্গে এই দুই খাদ্যবস্ত খাওয়ার পরামর্শ দিতে পারেন না।চিকিৎসকরা বানানা শেখ পান করা থেকে বিরত থাকতে বলেন। আমাদের মধ্যে অনেকেই বলেন দুধ ও কলার কমিনেশন স্বাস্থ্যকর, বিষয়টি সেটা না কারণ দুধে অনুপস্থিত পুষ্টিকর উপাদান বলায় পাওয়া যায় আবার যে উপাদান গুলো পলায় থাকে না, তা তোদের মাধ্যমে গ্রহণ করা যেতে পারে। তবে এই দুই খাদ্য প্রস্থ এক সঙ্গে শরীরে প্রবেশ করলে বিশেষ কোনো সুফল পাওয়া যায় না।
দুধ কিসমিস খাওয়ার উপকারিতা
দুধের সাথে কিসমিস খাওয়ার উপকারিতা নেহাত কম নয়। শরীর দুর্বল লাগা, মাথা পুরা এসব থেকে মুক্তি পাবেন। তাছাড়াও যারা জটিল কোন অসুখের ভুগছেন তারাও এই দুধের সাথে কিসমিস খেলে ভালো ফল পেতে পারেন। এবং আপনার যদি পেটের কোন সমস্যা থেকে থাকে এটা নিয়মিত খাওয়ার ফলে আপনার পেট পরিষ্কার হয়ে যাবে। ওদের সাথে কিসমিস খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে নিচে আরও কিছু বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করা হল।
- একসঙ্গে দুধ ও কিসমিস শরীরের ক্ষেত্রে অত্যন্ত উপকার বা উপযোগী খাদ্য। কেননা কিসমিসে তন্তু জাতীয় খাবার প্রচুর পরিমাণে রয়েছে।
- দুধও কিসমিসে সোডিয়ামের পরিমাণ পর্যাপ্ত থাকে বলে উচ্চ রক্তচাপ থাকলে তা অত্যন্ত সহজেই কমানো যায়, ঝুঁকি অনেকটাই কমে যায়।
- ক্যান্সারের মতো বড় বড় মারাত্মক রোগের থেকেও বাঁচা যায় দুরুদ ও কিসমিস খাওয়ার মাধ্যমে। দুধে কিছুটির নামক অ্যান্ডিঅক্সিডেন্ট প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যায়। কিসমিস ও দুধ পান করলে চোখের পক্ষে অত্যন্ত ভালো হয়। এতে পলোফেলেনিক ফাইটোনিউট্রিয়ন্স রয়েছে। যা একটি মজবুত এন্টিঅক্সিডেন্টের মতোই চোখের সুরক্ষায় বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।
- রক্তোল্পতা ও কন্ঠ কাঠিন্যর সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে দুধের সঙ্গে কিসমিস একসঙ্গে মিশে নিন তাহলে সেটি আপনার শাস্তি ম্যাজিকের মতো কাজ করবে।
- তোদের মধ্যে প্রোটিন, ক্যালসিয়াম রাইবোফ্লাবিন ভিটামিন বি ২ এর মত পুষ্টি জাত পদার্থ আছে।এছাড়া দুধে ভিটামিন এ ডি ই- র, ম্যাগনেসিয়াম, আয়োডিন সহ বেশ কয়েকটি উপকারী ফনিজ রয়েছে।
- যা প্রতিরোধ ক্ষমতাকে আরো জাগ্রত করে কমজোর ভাব ও গুরুত্বপূর্ণ রোগও দূর করে থাকে। এর সঙ্গে কিসমিস খেলে আপনার দেহ শক্ত এবং সবল রাখতে সহযোগিতা করবে।
- রোদে খুনিদের সঙ্গে সঙ্গে ন্যাচারাল ফ্যাটও আছে, বেশ কিছু উৎসেচক, এমন কিছু উপাদান আছে যা সরাসরি রক্তের উপকার করে, যা দেহের ক্ষেত্রে অত্যন্ত উপকারী।
- কিসমিসে লোহিত রক্তকণিকা থাকায় শরীরে রক্তের অভাব হয় না। কিসমিস ভিটামিন এ বি কমপ্লেক্স ও সেলিনিয়ন থাকে।
দুধ খাওয়ার উপযুক্ত সময়
সর্বোচ্চ পুষ্টি উপাদান থাকায় দুধকে শ্রেষ্ঠ খাবার বলা হয়ে থাকে। বাচ্চা থেকে শুরু করে বয়স্ক পর্যন্ত সব বয়সী মানুষের শরীরে পুষ্টির ঘাটতি মেটাতে রোজ এক গ্লাস দুধ পান করা প্রয়োজন। এসিডিটির সমস্যা, পিরিয়ডের সময় তীব্র যন্ত্রণা, কাজের স্টেসে অস্থির অবস্থা-এসব সমস্যা থেকে মুক্তি দিতে পারে শুধুমাত্র এক গ্লাস দুধ। তবে সঠিক সময় এবং সঠিক পদ্ধতি মেনে দুধ পান করতে হবে।
- আমাদের দেহের জন্য দুধ খাওয়ার উপযুক্ত সময় হলো বিকেল। ভালো হজমের জন্য লাঞ্চ করার দু'ঘণ্টা পর দুধ পান করলে সবচেয়ে বেশি ভালো হয়, যেহেতু দুধ ভারী খাবার এটি রাতে না খাওয়াই ভালো। রাতে দুধ খেলে হজমের জন্য খুব একটা বেশি সময় পাইনা।
- আপনি ভারী খাবার গ্রহণের পরে কখনো দুধ পান করবেন না। দারুন দুধ হজম করতে সময় লাগে তাই খাবার পর দুধ পান করলে খাবার হজম প্রক্রিয়া দুর্বল হয়ে পড়ে। ফলে এসিডিটির মতো বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিতে পারে আপনার দেহে।
- খালি পেটে দুধ পান করা চলার চেষ্টা করুন। আপনি যদি বদহজম বা গ্যাস্টিকের সমস্যায় ভোগে থাকেন তবে অবশ্যই এটি আপনার জন্য একটি মারাত্মক ক্ষতি করবে।
- অনেকেরই বদ অভ্যাস রয়েছে চা কিংবা দুধ দিয়ে ওষুধ খাওয়ার। বিশেষজ্ঞদের মধ্যে, এলোপ্যাথি ওষুধ খাওয়া একেবারেই শরীরের জন্য ভালো না। তবে ডাক্তারের পরামর্শ মেনে আয়ুর্বেদিক ওষুধ দুধ দিয়ে খাওয়া যেতে পারে।
- দুধ পানের আগে বা পরে টক জাতীয় ফল বা আচার কিছু খাওয়া যাবেনা। তাছাড়া নোনতা জাতীয় খাবার ফাস্টফুড চিপস এ জাতীয় খাবার খাওয়া যাবে না। এর জন্য কেমিক্যাল রি-একশন হয়ে শরীরে নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে।
- বাসি দুধ পান করা থেকে এড়িয়ে চলার চেষ্টা করুন। কারণ বাসি দুধের থেকে টাটকা দুধের গুণগত মান অনেক বেশি হয়। এছাড়া বাঁশি দুধ শরীরের নানীর সমস্যা তৈরি করতে পারে। তাই সর্বদা চেষ্টা করুন টাটকা এবং ভালো করে ফুটিয়ে দুধ পান করা।
গরম দুধের উপকারিতা
ভালো ঘুমের জন্য রাতে এক গ্লাস দুধ খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন অনেক বিশেষজ্ঞরা বা চিকিৎসকেরা। তবে এখন প্রশ্ন হচ্ছে- গরম দুধ খেলে কি আসলে ঘুম ভালো হয়? পুষ্টিবিদ দ্বারা জানিয়েছেন, দুধে সব ধরনের মিনারেলি পরিমিত পরিমাণে পাওয়া যায়। তাই ঘুমও ভালো হয়, দুধে ট্রিপটোফ্যান নামক এমাইনো এসিড থাকে। এতেই শরীরে সেরোটোনিন হরমোনের পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়। এই হরমোন শরীর শান্ত পরে, ফলে ঘুম ভালো হয়ে থাকে।
এই টিভিটামিন, ক্যালসিয়াম, প্রোটিন, নিয়ে আসেন, ফসফরাস এবং পটাশিয়ামের ভান্ডার।একটি গবেষণায় দেখা দিয়েছে, প্রতিদিন এক গ্লাস গরম দুধ যদি আপনি খেতে পারেন তাহলে স্বাস্থ্যের জন্য খুবই ভালো উপকারী। আমাদের দাঁত ও হাড়ের ক্যালসিয়াম প্রয়োজন। প্রতিদিন এক গ্লাস গরম দুধ পান করলে আমাদের দাঁতও হাড় মজবুত হয়। শুধু দুধ নয়, পুষ্টিকর, ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার, লো ফ্যাট ডায়েট, সঙ্গে পরিমিত পরিমাণে লিন প্রোটিন (চিকেন বা মাছ)
এবং কমপ্লেক্স কার্বোহাইড্রেট ছেলেও অনেক রাগ সমস্যা কমবে। শারীরিক বিভিন্ন সমস্যা বা অবস্থা থেকেও অনেক রাত দেখা দিতে পারে। ওর মনের সমস্যা, নার্ভ ট্রান্সমিশন ইত্যাদি যাবতীয় বিষয়ের সঙ্গে ঘুমের সরাসরি যোগদান রয়েছে। সবকিছু স্বাভাবিক রাখতে চাইলে সন্ধ্যার পর ভারী খাবার না খাওয়াই ভালো।
এছাড়া আপনি নিয়মিত শরীরচর্চার অভ্যাস গড়ে তুলুন, ঘুম ভালো হবে আর স্বাস্থ্য ভালো থাকবে। যদি সম্প্রতি অনিদ্রার সমস্যা দেখা দিয়ে থাকে, তবে ডায়েট চার্ট থেকে কফি, সফট ড্রিংক, তেল তেল মশলাদার খাবার ইত্যাদি আপনি বাদ দিন। এছাড়া তেল মসলাদার খাবার হজম হতে বেশি সময় নেই, হলে শারীরিক নানা অস্বস্তি দেখা দিতে পারে। এতে ঘুমের ব্যাঘাত ঘটে থাকে।
অতিরিক্ত দুধ খেলে কি হয়
অতিরিক্ত দুধ পানের ফলে, হাড় ক্ষয়ের সমস্যা দেখা দিতে পারে। আপনি আমি শৈশব কাল থেকে বিশ্বাস করে এসেছি যে, দুধ আমাদের জন্য সবচেয়ে বেশি উপকারী খাবার। তবে খুব বেশি দূর পান করলে কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া ঘটতে পারে দেহের সাথে। একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে যে, খুব বেশি দুধ পান করলে স্বাস্থ্যের নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে। এমনকি বড় ধরনের ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি সহ আরো বড় ধরনের রোগের সমস্যা দেখা দিতে পারে।
মাঝে মাঝে হজম সংক্রান্ত সমস্যা
দুধ পান করলে তা আপনাকে দীর্ঘ সময় পেট ভরে থাকার অনুভূতি দেয়। তবে, অনেক সময় অতিরিক্ত দুধ পান করলে পেট ফুলে যাওয়া, বমি বমি ভাব হওয়া বা অসস্তিবোধ হতে পারে। যদি এটি মাঝে মাঝে ঘটে থাকে তবে এটি অন্ত্রের এক ধরনের সমস্যা বা খাবারটির প্রতি অসহিষ্ণুতা হতে পারে। যখন আপনার শরীরে দুধসহ করতে অসুবিধা হয় বা অতিরিক্ত পান করে থাকলে এটি হজম কে অব্যাহত করতে পারে। এমন কি রক্তের প্রবাহে কিছু এনজাইম ছেড়ে দেয় যা গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল সমস্যার কারণ হয়ে যেতে পারে।
মস্তিষ্কে সমস্যা হওয়া
অতিরিক্ত দুধ পান করলে মস্তিষ্কে সমস্যা দেখা দিতে পারে। ভুলে যাওয়ার সমস্যা, সাময়িকভাবে স্মৃতি হারানো এসব লক্ষণ দেখা দিলে সতর্ক হোন। বিশেষজ্ঞদের মতে, দুধ জাত অন্যগুলোতে উপস্থিতি উচ্চ পরিমাণ ক্যাসিন সামগ্রী নির্দিষ্ট মস্তিষ্কের রিসেপ্টর গুলোকে ধোকা দিয়ে ভুয়া সংকেত দিতে পারে। আরো বলেন, যে অতিরিক্ত দুধ পান করলে তা বয়সের সাথে সাথে মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা বাড়িয়ে তুলতে পারে।
ত্বকের সমস্যা হওয়া
অতিরিক্ত দুধ পানের কারণে আপনার মুখে বা ত্বকের অন্যান্য অংশে এলার্জি হতে পারে। আপনার ত্বকে যদি খুব ঘন ঘন লাল ব্রণ, ডাক বা র্যাশ দেখা দিয়ে থাকে, তবে আপনার খাবারের তালিকায় আপনি নজর দিন। দুধে উপস্থিত কিছু রাসায়নিক প্রদাহ সৃষ্টির পাশাপাশি ত্বকের সমস্যা ডেকে আনতে পারে। এটি পুরুষের তুলনায় নারীর ক্ষেত্রে বেশি হয়ে থাকে।
ক্লান্তি এবং অলসতা ভর করা
বিশ্বাস করুন বা নাই করুন আপনার যদি শরীর দুধের জন্য উপযুক্ত না হয় তবে এটি দীর্ঘস্থায়ী ক্লান্তি এবং অলসতার কারণ হতে পারে। দুধে পাওয়া এ ১ ক্যাশেন কখনো কখনো অন্তরের আবরণের পাশাপাশি ও প্রদাহ সৃষ্টি করতে পারে, এবং জীবাণু ভারসাম্যকে ব্যাহত করতে পারে। এজন্য দুধের এলার্জিতে ভোগা প্রচুর মানুষকে দুধের বিকল্প বেছে নিতে বলা হয়।
হাড়ের সক্ষমতা কমে যাওয়া
শক্তিশালী হাড় গঠনের জন্য দুধ উপকারী এমনটাই আমরা জেনে থাকি। তবে প্রয়োজনীয় পরিমাণের চেয়ে বেশি দুধ পান করা হাড়ের পক্ষে অনেক ক্ষতিকারক। খুব বেশি দুধ আসলে হারকে শক্তি থেকে এবং ঘনতব্য রাস করতে পারে।বিশেষজ্ঞদের মতে, বয়স্ক পুরুষেরা খুব কম দুধ পান করেন। এদিকে পর্যাপ্ত দুধ পান করা নারীদের তুলনায় তাদের হাড়ের ভঙ্গুরতা বা খোদা হে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে।
প্রতিদিন কতটুকু দুধ খাওয়া উচিত
অতিরিক্ত দুধ পান করলে যে সব প্রতিকূলতা দেখা দিতে পারে সে সম্পর্কে ইতিমধ্যেই আপনি জেনে গেছেন। তবে আপনার খাবার তালিকা থেকে দুধ পুরোপুরি বাদ দেবেন না। প্রতিদিন এক থেকে দুই গ্লাস দুধ পান করলে তা আপনার পুষ্টি সরবরাহের জন্য যথেষ্ট। পনিরর, দুই বা ল্যাকটোজ মুক্ত দুধকে বিকল্প হিসেবে বেছে নিতে পারেন। প্রতিদিন দুধ পান করলে শরীরের পুষ্টির চাহিদা অনেকটা পূরণ হয়।
দুধে রয়েছে ভিটামিন এ, ভিটামিন বি, ভিটামিন ডি, ক্যালসিয়াম, প্রোটিন, কার্বোহাইড্রেট, ফসফরাস, ম্যাগনেসিয়াম ও জিংক। তবে প্রতিদিন ঠিক মতো কতটুকু দুধ পান করতে হবে, এই নিয়ে অনেক দ্বিধাদ্বন্দ্ব রয়েছে সবার মধ্যে। শুধু দুধ পান করলে হয় না, বয়স অনুযায়ী কতটুকু দুধ খাওয়া প্রয়োজন। সেদিকেও লক্ষ্য রাখতে হয়। বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ অনুযায়ী জানা গিয়েছে যে, কতটুকু দুধ প্রতিদিন পান করবেন, সে বিষয়ে স্বচ্ছ ধারণা দেওয়া হল।
শূন্য থেকে বারো মাস
শূন্য থেকে ১২ মাসের শিশুদের গরুর দুধ খাওয়া ঠিক নয়। এ সময় কেবল মায়ের বুকের দুধ খাওয়া পরামর্শ দেন অনেক বিশেষজ্ঞরা। শিশুর ক্ষুদা লাগলে প্রয়োজন অনুযায়ী বুকের দুধ খাওয়াতে হবে।
১ থেকে ৩ বছরে শিশুদের ৩৫০ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম প্রতিদিন প্রয়োজন হয়। এই চাহিদা পূরণে ১০০ এমএল দুধ খেতে হবে। ১০০ থেকে ১৫০ গ্রাম দুধের তৈরি পানের বা দই খাওয়া যেতে পারে এর পাশাপাশি, আর চার থেকে ১০ বছরের শিশুদের ১২০ থেকে ১৩০ এমএল দুধ খাওয়া প্রয়োজন প্রতিদিন।
এ সময় সাধারণত ৭০০ থেকে ১ হাজার মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম প্রতিদিন প্রয়োজন পড়ে। এ বয়সে দুধ খাওয়া প্রয়োজন ২৫০ থেকে ৩০০ এমএল। দুধের বাইরে ও অন্যান্য দুগ্ন জাতীয় খাবারও খাওয়া যায়, যেমনঃ দই খেতে পারেন ২০০ গ্রাম ও পনির খেতে পারেন ৪০ থেকে ৫০ গ্রাম।
১৯ থেকে ৫০ বছর বয়সের লোকদের জন্য প্রতিদিন ২৫০ এমএল দুধ খাওয়া প্রয়োজন। পাশাপাশি দুগ্ন জাতীয় পণ্য দই (২০০ গ্রাম) এবং পনির (৫০ গ্রাম) খাওয়া প্রয়োজন এই পরিমাণ খাবার ক্যালসিয়ামের চাহিদা পূরণে অনেকটা সহায়তা করে থাকে।
ক্যালসিয়াম সালফিনেট গ্রহণের পাশাপাশি ২৫০ এমএল দুধ, দুই ২০০ গ্রাম, পনির ৫০ গ্রাম খাওয়া প্রয়োজন। ৭০ বছর বয়সের লোকদের প্রতিদিন ২৫০ থেকে৩০০ এমএল দুধ খাওয়া প্রয়োজন।
শেষ কথা
প্রিয় পাঠক এতক্ষণ আমাদের সাথে থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। এতক্ষণ আমাদের এই পোস্টটি আপনি যদি মনোযোগ সহকারে পড়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই আপনি উপকৃত হয়েছেন, তাই এ পোস্টটি আপনার কাছে ভালো লেগে থাকলে আপনার বন্ধুদের কাছে শেয়ার করবেন। এরকম বিভিন্ন ধরনের ব্লগ পোস্ট নিয়মিত পেতে আমাদের সাথেই থাকুন। আসসালামু আলাইকুম।
সাগর ম্যাক্স এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url