পদ্মা সেতুর ভূমিকম্প সহনশীলতা কত - পদ্মা সেতুর পিলার কয়টি
শ্বাসকষ্ট হলে কি খাওয়া যাবে নাপ্রিয় পাঠক, আপনি নিশ্চয়ই জানতে চাচ্ছেন, পদ্মা সেতুর ভূমিকম্প সহনশীলতা কত?। তাই আপনাকে আমরা এ পোস্টের মাধ্যমে এখন জানানোর চেষ্টা করব, পদ্মা সেতুর ভূমিকম্প সহনশীলতা কত সে সম্পর্কে। তাছাড়া পদ্মা সেতুর ভূমিকম্প সহনশীলতা কত এটি ছাড়াও এই প্রশ্নের মাধ্যমে আপনি পদ্মা সেতু বিষয়ক বিভিন্ন অজানা তথ্য জানতে পারবেন।
আশা করি এ পোস্টটি যদি আপনি সম্পূর্ণ প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়েন তাহলে অবশ্যই আপনি পদ্মা সেতু বিষয়ক সকল বিষয়ে জানতে পারবেন। এই পোস্টটি পড়ার পর আপনাকে অন্য কোন জায়গায় পদ্মা সেতুর বিষয়ক কোন তথ্য জানার প্রয়োজন হবে না। কেননা আমরা এই পোস্টটি পদ্মা সেতুর সকল বিষয় নিয়ে সুন্দরভাবে সাজিয়েছি। তাহলে চলুন নিচে থেকে জেনে আসি পদ্মা সেতুর ভূমিকম্প সহনশীলতা কত, এছাড়া অন্যান্য তথ্যসমূহ গুলো।
পোস্ট সূচিপত্রঃ পদ্মা সেতুর ভূমিকম্প সহনশীলতা কত - পদ্মা সেতুর পিলার কয়টি
ভূমিকা | পদ্মা সেতুর ভূমিকম্প সহনশীলতা কত | পদ্মা সেতুর পিলার কয়টি
যাদের যাদের জানার খুব প্রয়োজন পদ্মা সেতুর ভূমিকম্প সহনশীলতা কত এবং পদ্মা সেতুর পিলার কয়টি। তাদেরকে আমরা এই প্রশ্নের মাধ্যমে এগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত ভাবে আলোচনা করার চেষ্টা করব এবং জানানোর চেষ্টা করব। যেহেতু আমরা এই পোস্টটি সম্পন্ন প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়বো সেহেতু এ পোস্টটিতে কি কি বিষয় আমরা জানতে পারবো সেই পয়েন্টগুলো বিষয়ে আমাদের অগ্রিম জেনে রাখা উচিত।
যে সকল বিষয়গুলো আমরা পোস্টের মাধ্যমে জানতে পারবো সেগুলো হল, পদ্মা সেতু কোন জেলায় অবস্থিত, পদ্মা সেতুর ডিজাইনার কে, পদ্মা সেতুর আয়তন করেছে কোন দেশ, পদ্মা সেতুর খরচ কত, পদ্মা সেতুর পিলার কয়টি এবং পদ্মা সেতুর ভূমিকম্প সহনশীলতা কত। আশা করি এ পোস্টটি পড়ার মাধ্যমে আপনি এগুলো বিষয় সম্পর্কে অনেক অজানা তথ্য জানতে পারবেন। তবে চলুন এগুলো সম্পর্কে আমরা স্টেপ বাই স্টেপ সকল বিষয়ে বিস্তারিতভাবে জেনে নেওয়ার চেষ্টা করি।
পদ্মা সেতু কোন জেলায় অবস্থিত
পদ্মা সেতু মাদারীপুর, মুন্সিগঞ্জ ও শরীয়তপুর জেলার মধ্যে অবস্থিত। পদ্মা সেতুর দৈর্ঘ্য ৬.১৫০ কিলোমিটার ও প্রস্থ ১৮.১০ মিটার। আর পদ্মা সেতুর বেশিরভাগ অংশটুকু রয়েছে শরীয়তপুর জেলায়।
পদ্মা সেতুর ডিজাইনার কে
প্রকল্প পরিচালক মোঃ শফিকুল ইসলাম একটি সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, পদ্মা সেতুর ডিজাইন নির্মাণ তদারকি এসব কাজ অনেক মানুষ মিলে করেছেন। এখানে আসলে অবদানটি কারো কিছু নেই বললেই চলে। আমাদের অনেক কমসালট্যান্ট ছিলেন, ব্যাপারটা এককভাবে নয়। এটি যৌথভাবেই হয়েছে বলা যায়। নিউজিল্যান্ড ভিত্তিক পরামর্শ প্রতিষ্ঠান এইসিওম পদ্মা সেতুর ডিজাইন দায়িত্ব ছিল।
ডিজাইন এবং প্রকৌশল পরামর্শ প্রতিষ্ঠানটি ১৯৯০ সাল থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে কার্যক্রম শুরু করে থাকে। কিন্তু তাদের ওয়েবসাইটে দাবি করা হয়েছে, যে তাদের প্রতিষ্ঠানের বয়স ১২০ বছর। নিউ ইয়র্ক স্টক এক্সচেঞ্জে নিবন্ধিত প্রতিষ্ঠানটি ৫টি কোম্পানি একসঙ্গে মিলে তৈরি হয়েছিল। এবং পরবর্তীতে আরো ৫০টি কোম্পানি তাদের সাথে যোগ দিয়েছিল। ২০০৯ সালে অংকং এই কোম্পানির নেতৃত্বে পদ্মা সেতুর ডিজাইন তৈরির কাজ শুরু হয়েছিল।
কিন্তু তাদের সঙ্গে আরও ছিল অস্ট্রেলিয়ার এসমেক ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড ও কানাডার নর্থ ওয়েস্ট হাইড্রোলিক কনসালটেন্টস এবং বাংলাদেশী এসিই কনসালটেন্টস লিমিটেড। এছাড়াও অধ্যাপক শামীম জেড বসুনিয়া একটি সাক্ষাৎকারে বলেছেন, তারা মিলে প্রথম পদ্মা সেতুর একটি ডিজাইন দেয়। এবং সেই ডিজাইন আলাপ আলোচনার মাধ্যমে চূড়ান্ত করা হয়েছিল। কিন্তু বর্তমান সময়ে যেভাবে ডিজাইন হয়,
তাতে যে প্রতিষ্ঠান ডিজাইন তৈরি করে, মূলত তাদের নামেই পরিচিত হয় সেখানে কোন ব্যক্তির নামেই ছিল না। কিন্তু প্রকল্পের সাথে সংশ্লিষ্টরা তখন বলেছিলেন, পদ্মা সেতুর নকশায় এইসিওম টিমের নেতৃত্ব দিয়েছেন ব্রিটিশ নাগরিক রবিন শ্যাম। এবং লম্বা স্প্যানের ডিজাইন প্রণয়নে বিশেষজ্ঞ হিসেবে তার পরিচিত হয়েছিল। ডিজাইন প্রণয়নে ব্যবস্থাপক হিসেবে এসমেক ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেডের হয়ে কাজ করেন,
এবং অস্ট্রেলিয়া হুইট্লার। শুধুমাত্র সেতুর ডিজাইন যথেষ্ট নয়, পদ্মা নদীর মত খরস্রোতা নদীতে সেতুর মতো বিশাল অবকাঠামোর ক্ষেত্রে। তার সাথে নদী শাসনের ডিজাইনও তৈরি করতে হয়েছিল। এবং নদী শাসনের ডিজাইন তৈরি করেছিলেন কানাডার ব্রুস ওয়ালেস। এছাড়াও তার সাথে ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রকৌশলীরা এবং জার্মানিরাও।
পদ্মা সেতুর অর্থায়ন করেছে কোন দেশ
আমরা পোস্টেডিয়াম এই অংশে জানতে চলেছি, পদ্মা সেতুর অর্থায়ন করেছেন কোন দেশ?। শুধুমাত্র চীন থেকে পদ্মা সেতুর অর্থায়ন করেছেন, তবে আশা করি বাংলাদেশ দ্রুত ঋণ পরিশোধ করবে, ইনশাআল্লাহ। আসলে পদ্মা সেতুর জন্য মোট বাজেট হয়েছে ৩০ আজ আর ১৯৩.৩৯ কোটি টাকা। যদিও বা প্রাথমিকভাবে ২০০৭ - ০৮ সালে এর ব্যয় ধরা হয়েছিল ১০ হাজার কোটি টাকা। কিন্তু চীনের ৬.৪ কিলোমিটার দীর্ঘ উফেনসাং সড়ক রেল সেতু ২০২০ সালের ডিসেম্বরে চালু করা হয়।
পদ্মা সেতুর সাথে তুলনীয় এই সেতুর নির্মাণে ৪ বছর লেগেছে এবং ব্যয় হয়েছে ১.০৫ বিলিয়ন ডলার যেটি পদ্মা সেতুর ১ তৃতীয়াংশের চেয়েও কম। বাংলাদেশ নিজস্ব অর্থায়নে এটি করেছে, এবং কোন দেশের কাছ থেকে বা ব্যাংকের কাছ থেকে টাকা নেয়নি। কর্ম বর্ধমান খরচের কারণেই বিশ্ব ব্যাঙ্ক এই প্রজেক্ট থেকে নিজের নাম তুলে নিয়েছিলেন। এডিট - মূলত আমি প্রোপাগান্ডার শিকার হয়েছি। কেননা বাংলাদেশ সম্পূর্ণ নিজস্ব অর্থায়নে এই সেতুটি করেনি এটাই সত্যি।
পদ্মা সেতুর খরচ কত
পদ্মা সেতুর খরচ কত হয়েছে সেটা জানিয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তিনি জানিয়েছেন পদ্মা সেতুর ব্যয় ৩০ হাজার ১৯৩ কোটি ৩৯ লাখ টাকা ধরা হলেও ২৭ হাজার ৭৩২ কোটি ৮ লাখ টাকা ব্যয় হয়েছে।
পদ্মা সেতুর পিলার কয়টি
পদ্মা সেতুর মোট স্প্যান হল ৪১টি, যার প্রত্যেকটির দৈর্ঘ্য হল ১৫০ মিটার। এবং পদ্মা সেতুর মোট পিলার সংখ্যা ৪২টি। ৪২ টি প্লেয়ারের মধ্যে ৪০টি পিলার নির্মাণ করা হয় নদীতে এবং ২টি প্লেয়ার নির্মাণ করা হয় নদীর তীরে। সকল পিলারের উপরে স্প্যান বসানো হয়। আর পদ্মা সেতুর একটি পিলার থেকে আরেকটি পিলারের দূরত্ব ১৫০ মিটার। ৪২ টি পিলারের মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পিলার হচ্ছে ১ নম্বর ও ৪২ নম্বর পিলার। পদ্মা সেতুর এক নম্বর ও ৪২ নম্বর ব্লকে ট্রানজিশন পিলার বলা হয়। এছাড়াও পদ্মা সেতুর প্রত্যেকটি পিলারের নিচে রয়েছে ৬টি করে পাইল। পদ্মা সেতুতে রয়েছে মোট ২৪০ টি পাইল। এবং এর ডেকের উচ্চতা ১৩.৬ মিটার।
ব্যাখা স্বরূপঃ পদ্মা সেতু বাংলাদেশের পদ্মা নদীর ওপর নির্মাণাধীন একটি বহুমুখী সড়ক এবং রেল সেতু। পদ্মা-ব্রহ্মপুত্র- মেঘনা নদীর অববাহিকায় ১৫০ মিটার দৈর্ঘ্যর ৪১ টি স্প্যান এবং ৪২ টি পিলার বসানোর মধ্য দিয়ে ৬.১৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য ও ১৮.১০ মিটার প্রস্থ পরিকল্পনায় নির্মিত হয়েছে আমাদের বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় এই পদ্মা সেতু।
পদ্মা সেতুর ভূমিকম্প সহনশীলতা কত
পদ্মা সেতুর ভূমিকম্প সহনশীলতা কত এটাই আমাদের এই পোস্টটির মূল উদ্দেশ্য। তবে চলুন আমরা জেনে নিন পদ্মা সেতুর ভূমিকম্প সহনশীলতা কত সে সম্পর্কে।
পদ্মা সেতু তৈরি করা হয়েছে ৯ মাত্রার ভূমিকম্প সহনশীলতা করে।
তবে চলুন, এখন আমরা ব্যাখ্যা হিসেবে এ বিষয়টি জেনে আসার চেষ্টা করি। পদ্মা সেতুর পিলারের নিচে ৬২ মিটার পর্যন্ত মাটির সুরে যেতে পারে, এটা ধরেই মূলত নকশা করা হয়েছে। এবং পদ্মা সেতুর রিখটার স্কেলে প্রায় ৯ মাত্রার ভূমিকম্প সহনীয়। এছাড়াও সেতুটি ৪ হাজার ডেট ওয়েট টনেজ ক্ষমতার জাহাজের ধাক্কা সামলাতে সক্ষম। মাটি সরে যাওয়া এমনকি জাহাজের ধাক্কাও ৯ মাত্রার ভূমিকম্প ৩টি একসাথে ঘটলেও সেতুটি টিকে থাকতে সক্ষম হবে,
ডিজাইনের মূলত এমনটাই বলা রয়েছে। তাছাড়াও পদ্মা সেতুকে ভূমিকম্প সহনীয় করতে সর্বোচ্চ ক্ষমতার বিশেষ ধরনের বিয়ারিং ব্যবহার করা হয়। যার নাম হলো ডাবল কারো ভেতর ফ্রিকশন পেন্ডুলাম বিয়ারিং। এবং সবচেয়ে বড় বিয়ারিংটির ওজন প্রায় ১৫ টন। পদ্মা সেতুতে মোট বিয়ারিং লেগেছে প্রায় ৯৬ সেট। এগুলো মূলত বসানো হয়েছে পিলার ও স্প্যানের মাঝখানটায়।
এই সমস্ত বিয়ারিং প্রায় ১ লাখ টন ক্ষমতার ভূমিকম্প প্রতিরোধ করতে সক্ষম। প্রকৌশলীরা কিভাবে ভূমিকম্প ঠেকাবে এর একটি ব্যাখ্যা দিয়েছেন। তাদের মতে, ভূমিকম্প মাটিতে কম্পন সৃষ্টি করে। এবং এই ভূমিকম্পন প্রথমে পিলারে যাবে। তারপর বিয়ারিং গুলির কম্পন ক্ষমতা কমিয়ে দিবে। তা ছাড়া স্প্যানে ভূমিকম্প এর সামান্য আঘাত গেলেও তা থেকে সেতুকে রক্ষা করার জন্য প্রতিটি জোড়ায় সংকোচন সম্প্রসারণ এর বিয়ারিং বসানো হয়।
এছাড়া বড় ভূমিকম্প থেকেও যে সেতুটি রক্ষা পাবে, পর্দা সেতুর উপরের অংশের ওজন কত? পদ্মা সেতুর ওপরের কাঠামোর প্রতিটি স্প্যানের ওজন ৩ হাজার ২ শত টন। সম্পূর্ণ পদ্মা সেতুতে এমন ধরনের স্প্যান রয়েছে ৪১টি। সেজন্যই মূলত এই সকল স্প্যানের ওজন দাঁড়াচ্ছে ১ লক্ষ ৩১ হাজার ২০০ টন। এছাড়াও পদ্মা সেতুর ওপর রেলের গারডার, ২ স্তরের কংক্রিটের স্ল্যাব বসানো রয়েছে। তার ফলে পদ্মা সেতুটি কয়েক লাখ টন ওজনের একটি স্থাপনা।
শেষ কথা | পদ্মা সেতুর ভূমিকম্প সহনশীলতা কত | পদ্মা সেতুর পিলার কয়টি
প্রিয় পাঠকগণ, আমরা এই পোস্টের মাধ্যমে যা যা জানো না সেগুলো হল পদ্মা সেতু কোন জেলায় অবস্থিত, পদ্মা সেতুর ডিজাইনার কে, পদ্মা সেতুর অর্থায়ন করেছে কোন দেশ, পদ্মা সেতুর খরচ কত, পদ্মা সেতুর পিলার কয়টি এবং পদ্মা সেতুর ভূমিকম্প সহনশীলতা কত। যেহেতু পদ্মা সেতু আমাদের বাংলাদেশের একটি গর্ব, সেহেতু আমাদের সকলকে উক্ত বিষয় সম্পর্কে জেনে রাখা দরকার। শুধু তাই নয়, পদ্মা সেতুর মাধ্যমে আমাদের বাংলাদেশটি অনেক এগিয়ে গেছে।
প্রিয় পাঠক, এতক্ষণ আমাদের সাথে থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আশা করি এই পোস্টটি আপনার কাছে অনেক ভালো লেগেছে এবং আপনার অনেক উপকারে আসবে। তাই এ পোস্টটি আপনার কাছে ভালো লেগে থাকলে আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে ভুলবেন না। আর অবশ্যই আমাদের ওয়েবসাইটে নিয়মিত ভিজিট করার চেষ্টা করুন কেননা আমরা তথ্য বিষয়ক বিভিন্ন ধরনের নতুন নতুন ব্লগ পোস্ট বা আর্টিকেল পাবলিশ করে থাকি। দোয়া করি ভাল থাকেন, আসসালামু আলাইকুম।
সাগর ম্যাক্স এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url