প্রতিদিন কত ঘন্টা হাটা উচিত - কখন হাটা ভালো
শিশুর মানসিক বিকাশের ধাপ গুলি কি কিপ্রিয় পাঠক, আপনি নিশ্চয়ই প্রতিদিন কত ঘন্টা হাটা উচিত? এবং কখন হাটা ভালো? এই এই সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চান। সেজন্য আজকে আমরা এই আর্টিকেলটি সাজিয়েছি। আমরা এ পোষ্টের মাধ্যমে আপনাদেরকে জানাবো প্রতিদিন হাঁটলে কি হয় ও কখন হাটা ভালো এবং প্রতিদিন কত ঘন্টা হাটা উচিত।
তাই আপনি যদি এই পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়েন, তাহলে আপনি অবশ্যই এগুলো বিষয় সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন। তবে চলুন জেনে আসা যাক এগুলো সম্পর্কে।
পোস্ট সূচীপত্রঃ প্রতিদিন কত ঘন্টা হাটা উচিত - কখন হাটা ভালো
ভূমিকা | প্রতিদিন কত ঘন্টা হাটা উচিত | কখন হাটা ভালো
আমাদের বয়স বাড়ার সাথে সাথে শরীরে বাসা বেধে থাকে বিভিন্ন ধরনের রোগ। ডায়াবেটিস, হৃদরোগ, আর্থ্রাইটিস, উচ্চ রক্তচাপ, স্থলতা, হাড়ের ক্ষয় এবং মাংসপেশির শক্তি কমে যাওয়া ইত্যাদি আরো অনেক রোগ। সে ক্ষেত্রে শরীর খেয়ে সুস্থ রাখার জন্য বিশেষ করে নির্ভর করে নিয়মিত শরীর চর্চা ও পরিমিত খাদ্যভাসের উপর। তাই আমাদের শরীলকে সুন্দর ও সবল রাখতে নিয়মিত হাঁটার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে।
সে ক্ষেত্রে শরীরে অনেক রোগ থেকে বাঁচানো যাবে এবং শরীর সুস্থ থাকবে। তাই আমরা এ পোস্টটিতে হাঁটার সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করেছি যেমন এই পোস্টটি যদি আপনি সম্পূর্ণ করতে পারেন তাহলে আপনি জানতে পারবেন। প্রতিদিন হাঁটলে কি হয়, রাতে খাওয়ার কতক্ষণ পর হাঁটা উচিত, সকালে খালি পেটে হাটার উপকারিতা, কখন হাটা ভালো এবং প্রতিদিন কত ঘন্টা হাটা উচিত। তাই আপনি এই আর্টিকেলটি প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
প্রতিদিন হাঁটলে কি হয়
আমাদের দৈনন্দিন জীবনে হাটার গুরুত্ব সব থেকে বেশি, হাটার তবে গুরুত্বপূর্ণ সম্পর্কে যদি ওর কম বেশি সবাই অনেকেই জানেন। আমরা আলসেমি এবং কষ্টের ভয়ে কিংবা কাজের ব্যস্ততার অজুহাতে হাটাহাটি থেকে এড়িয়ে চলতে চায়। তবে কিন্তু হাঁটায় হল সবচাইতে সহজ ব্যায়াম। ছোট বড় আমরা সবাই যে কেউ নিয়মিতভাবে হাঁটার অভ্যাস গড়তে পারি।
অনেক আমরা ইচ্ছা করলে রিক্সায় বা গাড়িতে না উঠে হাঁটতে পারি, সে ক্ষেত্রে আবার অনেকেই এটাকে লজ্জাজনক মনে করে থাকেন। আসলে আমরা যদি নিয়মিত হাটাহাটি তাহলে আমাদের শরীর ও মন দুটোই খুব সুন্দর থাকবে। আপনি যদি রোজ খান একটা হাঁটতে পারেন তাহলে আপনার স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী। কারণ নিয়মিত হাঁটলে অনেক সফল পাওয়া যায়।
তাছাড়া দৈনন্দিন পরিশ্রম না হওয়া বা কম হওয়ার কারণে আমাদের শরীরে দিন দিন বাসা বেধেছে অনেক ধরনের অসুখ। এর মধ্যে উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, আর্থ্রাইটিস, এবং অষ্টিওপোরোসিস অন্যতম। তাই শুধুমাত্র আপনি নিয়মিত হাটার মাধ্যমে এগুলোকে রুখে দিতে পারেন।
প্রতিদিন হাঁটলে আপনি সর্বোচ্চ উপকার পেতে যেমন-
- হাঁটা শুরু করার প্রথম দিকে এক জায়গায় দাঁড়িয়ে হাত-পা নেড়ে ওয়ার্ল্ড কাপ করতে পারেন পাঁচ মিনিট ধরে।
- আপনার অফিস বা বাসায় লিফট ব্যবহার না করে, আপনি সিঁড়ি দিয়ে হাঁটার অভ্যাস গড়ে তুলুন।
- প্রথমে ধীরে ধীরে হাঁটা শুরু করবেন, তারপর আস্তে আস্তে গতি বাড়াতে পারে। শেষের দিকে ৫ মিনিট আবার করতে পারেন, একে বলা হয় কুলডাউন। তারপর কিছুক্ষণ এক জায়গায় বসে বিশ্রাম নিতে পারেন।
- হাঁটার উপকার পেতে আপনি সপ্তাহে অন্তত পাঁচ দিন ও কমপক্ষে ২৫ থেকে ৩০ মিনিট হাঁটার অভ্যাস গড়ে তুলুন।
রাতে খাওয়ার কতক্ষণ পর হাঁটা উচিত
আমরা সারাদিন অনেক পরিশ্রম করে থাকি তারপর বাড়ি ফিরে রাতে কোনমতে খেয়েই ঘুমিয়ে পড়ি। তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, এটি একেবারেই স্বাস্থ্যের জন্য ঠিক নয়। কারণ দুপুর হোক কিংবা রাত ভরা পেটে বেশ কিছুক্ষণ হাঁটাচলা করা ভালো। তাছাড়া আরো বলেন, খাওয়ার পর অন্তত ১০ থেকে ১৫ মিনিট হাটা হাঁটাচলা করলে শরীলও ভালো থাকে। আপনার যদি হজমের সমস্যা থাকে, তাহলে সেই সমস্যা অনেক কমে যায়। ভরা পেটে হাঁটার অভ্যাসে কি কি উপকার পেতে পারেন তা নিচে উল্লেখ করা হলো-
- খাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে শুয়ে পড়লে বদহজমের আশঙ্কা দেখা দিতে পারে আপনার। সেজন্য যদি আপনি হাঁটতে পারেন, তাহলে আপনার হজম শক্তি বৃদ্ধি পাবে। সে সঙ্গে এসিডিটির সমস্যা ও দূর হবে।
- আমাদের মধ্যে অনেকেই রাতের খাবারের তালিকায় প্রচুর পরিমাণে কার্বোহাইড্রেট, ক্যালরিযুক্ত খাবার রেখে থাকেন। সেক্ষেত্রে হাঁটাচলা করা অনেক জরুরী হয়ে যায়। তা না হলে আপনার মেদ বাড়ার আশঙ্কা দেখা দেয়।
- আপনি যদি রাতে খাওয়ার পর পরি ঘুমিয়ে যান তাহলে আপনার ওজন বাড়ার ঝুঁকি থাকে। সেজন্য আপনি অবশ্যই রাতে খাওয়ার পর অন্তত ১০ মিনিট হাটুন।
- আপনার রাতের ঘুম ভালো করার জন্য রাতের খাবারের পর কিছুক্ষণ হাঁটুন।
- আপনারা যারা ডায়াবেটিসে ভুগছেন, তাদের ক্ষেত্রেও অন্তত দশ মিনিট হাটা উচিত।কেননা খাওয়ার পর রক্তে শর্ককার আর মাত্রা বৃদ্ধি পেয়ে থাকে এটা অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে রাখা যায় হাটার মাধ্যমে।
- নিয়মিত হাটার মাধ্যমে মানসিক চাপ দূর করা সম্ভব এবং শরীরে এন্ডোরফিন নিঃসরণ করতে সহায়তা করে থাকে। তাছাড়া হাঁটার ফলে শরীরে ভালো বোধ হয় এবং মেজাজ উন্নত করে থাকে।সেজন্য রাতের খাবারের পর হাটা অত্যন্ত জরুরী।
- রাতে খাওয়ার পর অন্তত ১০ মিনিট হাঁটলে উচ্চ রক্তচাপের মাত্রা অনেকটা কমে যায়।আপনারা যারা রক্তচাপের সমস্যায় ভুগছেন তারা খাওয়ার পর হাঁটাহাঁটি করলে সুস্থ থাকতে পারবেন।আপনার নিয়ম পড়ে হাটার অভ্যাসে রক্তচাপের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব।
প্রতিদিন কত ঘন্টা হাটা উচিত
কমপক্ষে প্রতিদিন ৩০ থেকে ৪০ মিনিট হাঁটলে ভালো হয়। তাছাড়াও যদি আপনার হারতে ভালো লাগে সেক্ষেত্রে আপনি এক ঘন্টা পর্যন্ত হাঁটতে পারেন। এবং যারা বেশি হারতে পারেন না তাদের ক্ষেত্রে ৩০ মিনিট হাঁটার সময় টাতে পাঁচ মিনিট করে বিরতি নিতে পারেন তাছাড়া আপনি পাঁচদিন ৩০ মিনিট করে ১৫০ মিনিট হাঁটতে পারলে আপনার শরীর সুস্থ থাকবে। কিন্তু কখনোই ৩০ মিনিটে নিচে হাঁটা উচিত হবে না।
আরো পড়ুনঃ কি খেলে পেটের চর্বি কাটে
সকালে বিকাল হাটার জন্য সবথেকে ভালো সময়। অনেকেই বুঝতে পারেন না হাঁটার সময় হাঁটার গতি কেমন হবে। সে ক্ষেত্রে আপনাদেরকে জানাই হাঁটার কোন গতি নেই। আপনি প্রথমে ধীরে ধীরে হাঁটা শুরু করুন তারপর গতি বাড়াতে পারে। আপনার শরীরের সাথে তাল মিলিয়ে যতটুকু সম্ভব গতি বাড়াতে পারেন। ঘুম থেকে ওঠার সাথে সাথে হাঁটতে যাওয়া একেবারেই উচিত নয়।
আপনার ঘুম থেকে ওঠার কমপক্ষে ২৫ মিনিট পর হাঁটতে বের হওয়া উচিত। সে ক্ষেত্রে কারো যদি খুব সকালে অফিসে যাওয়ার ব্যস্ততা থাকে তাহলে ঘুম থেকে একটু আগে ওঠার অভ্যাস গড়ে তুলতে পারেন। আপনার শরীর যদি খারাপ থাকে তাহলে জোর করবো হাঁটা উচিত নয়। সে ক্ষেত্রে হার্টের রোগীরা কখনোই সকালে হাটবেন না। কেননা হার্টের রোগীরা সকালে হাটলে হার্ট অ্যাটাক হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিতে পারে।
সকালে খালি পেটে হাঁটার উপকারিতা
সকালে খালি পেটে হাটার অভ্যাস প্রায় সকলেরই। আবার অনেকেই সকালে কিছু খাওয়ার পর হাঁটাহাঁটি করে থাকে। সে ক্ষেত্রে সবথেকে ভালো হয় আপনি যদি খালি পেটে হাঁটতে পারেন তাহলে। আমাদের অতিরিক্ত ওজন কমাতে সকালে খালি পেটে হাঁটা প্রয়োজন। আমরা যদি নিয়মিত খালি পেটে ব্যাম বা হাটাহাটি করি তাহলে আমাদের শরীরের প্রয়োজনীয় গ্লুকোজের চাহিদা পূরণ করে থাকে লিভার।
আমাদের লিভারের জমিয়ে থাকাগুলো পোজ ভান্ডার থেকে আমাদের শরীরে শর্করা সরবরাহ করতে পারে। আমাদের খালি পেটে ব্যায়াম করার সময় সবচেয়ে বেশি গ্লুকোজের প্রয়োজন হয়। সে ক্ষেত্রে মস্তিষ্ক, রক্ত কোষ ও কিডনি সতেজ রাখতে পারেন। সেজন্য আমরা যদি খালি পেটে ব্যায়াম করি তাহলে শরীরের অতিরিক্ত চর্বি কমাতে সাহায্য করে। যা আমাদের শরীরের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।
কখন হাটা ভালো
আমাদের শরীরকে সুস্থ ও সবল রাখতে, প্রতিদিন ৩০ মিনিট করে হাঁটা প্রয়োজন। সেক্ষেত্রে সকাল ও বিকাল সহ দিনের যে কোন সময়ে হাটা আমাদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য খুবই ভালো। তাছাড়া আপনার অতিরিক্ত ওজন কমানোর জন্য খাওয়ার পরে হাঁটতে পারেন।এবং ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ রাখতে খাওয়ার পরে হাটা ভালো।আমরা হারতে যাওয়ার আগেই আমাদের মাথায় একটা জিনিস চলে আসে সেটা হলঃ
কখন হাটা ভালো? সে প্রশ্নের উত্তরে অনেক চিকিৎসকেরা বলেছেন, আপনারা যেকোনো সময়ে হাঁটতে পারেন। রাত-দিন ২৪ ঘন্টার মধ্যে যখন আপনি সময় পাবেন হাটার, তখনই হাঁটতে হবে। সব থেকে ভালো হয় যদি আপনি বিকালে হাঁটতে পারেন। সে ক্ষেত্রে যারা সকালে হাঁটতে যান, তাদেরকে জানিয়ে রাখি, ঘুম থেকে উঠেই হারতে যাওয়া যাবে না। ঘুম থেকে ওঠার কমপক্ষে ২৫ থেকে ৩০ মিনিট পর হাঁটতে যাওয়া ভালো।
শেষ কথা | প্রতিদিন কত ঘন্টা হাটা উচিত | প্রতিদিন হাঁটলে কি হয়
প্রিয় পাঠক, এতক্ষণ আমাদের ওয়েবসাইটে থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। করি আপনি ইতিমধ্যে জেনে গেছেন প্রতিদিন কত ঘন্টা হাটা উচিত এবং কখন হাটা ভালো। তাই আশা করি এই পোস্টটি আপনার অনেক উপকারে আসবে। এই পোস্টটি আপনার কাছে ভালো লেগে থাকলে আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন। এবং নিয়মিত নতুন নতুন ব্লক পোস্ট বা আর্টিকেল পেতে আমাদের সাথেই থাকুন। আসসালামু আলাইকুম।
সাগর ম্যাক্স এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url